জহুরুল আলম জাবেদ : সারা বিশ্ব আজ কোভিড-১৯ এ নিস্পেষিত। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ রোগটি প্রতিনিয়ত প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের। বাংলাদেশও বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যস্ত। গত মার্চে ২০২০ প্রথম বাংলাদেশে কোভিড রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে জরুরি ভিত্তিতে এ রোগটি শনাক্তকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রাথমিক অবস্থায় দেশের যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কোভিড শনাক্তের কাজ শুরু হয়, সে তালিকার প্রথম নামটি হলো ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার। নবপ্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটিতে তখন জনবল তেমন ছিল না বললেই চলে। কিন্তু তারা সরকারের দেওয়া দায়িত্ববোধকে মাথায় রেখে তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালনের সংগ্রামে লিপ্ত হয়। প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ও তার সহকর্মীদের সহযোগিতায় কোভিড শনাক্তের কাজ শুরু করে। প্রথম মাসেই প্রতিষ্ঠানটি রেকর্ডসংখ্যক করোনা নমুনা শনাক্ত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নজরে আসেন। দেশের সংকটময় মুহূর্তে যারা প্রশাসনের জরুরি কাজে নিয়োজিত থেকে দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজে ব্যস্ত থাকে, সেসব গুরুত্বপূর্ণ সেবা সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জরুরি কোভিড টেস্টও করে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিপি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন কর্মচারী-কর্মকর্তারা ও জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্যদের কোভিড পরীক্ষাও প্রতিষ্ঠানটি দ্রুততার সঙ্গে করে যাচ্ছে এবং বর্তমানেও তা চলমান রয়েছে। এছাড়া দেশ থেকে যারা বিদেশ যাচ্ছে তাদের কোভিড নমুনা পরীক্ষাও প্রতিষ্ঠানটি দৃঢ়তার সাথে করছে।

বর্তমানে সারাদেশব্যাপী আবারো কোডিভ রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের সকল বিভাগ থেকে হাজার হাজার কোডিভ-১৯ সেম্পল আসছে এই প্রতিষ্ঠানে। তারা তাদের কর্মদক্ষতায় সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টাই কাজ করে সে রিপোর্টগুলো অনলাইনে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। দেশে সর্বোচ্চ একদিনে ৪ হাজার ১৭৭ কোভিড নমুনা পরীক্ষার কৃতিত্ব অর্জন করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার। এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি ৬ লাখ ৫৫ হাজার কোভিড নমুনা পরীক্ষা করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। কোভিড পরীক্ষা ছাড়াও সাধারণ অন্যান্য রোগ-ব্যাধির প্যাথলোজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হচ্ছে। নিষ্ঠা-কর্মদক্ষতা ও প্রশাসনিক দক্ষতা যে একটি নবপ্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিতি এনে দিতে পারে; তারই উজ্জ্বল উদাহরণ হচ্ছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার।

বর্তমান মার্চ ২০২১-এ পুনরায় কোভিডের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মচঞ্চলতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নিয়োজিত কর্মচারী-কর্মকর্তারা তাদের দক্ষতা ও নিষ্ঠা দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে এই প্রতিষ্ঠান শুধু কোডিভ নয় অন্যান্য সাধারণ রোগ ব্যাধির পরীক্ষায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে ইনশাল্লাহ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি