অনলাইন ডেস্ক : জোট সরকার গঠন নিয়ে নানা নাটকীয়তার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দেশটির রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান শেহবাজ শরিফ। সোমবার ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্ট হাউসে পাকিস্তানের ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্ট হাউস আইওয়ান-ই-সদরে পিএমএল-এনের প্রধান শেহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রীর শপথ পড়িয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান ও জোটসঙ্গী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি এবং সিন্ধ, পাঞ্জাব ও বেলুচিস্তান প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও।

দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনীরও শেহবাজ শরিফের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, রোববার দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের (এনএ) ভোটাভুটিতে ২০১ জন আইনপ্রণেতার ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শেহবাজ শরিফ।

এ ছাড়াও পাকিস্তানে নিযুক্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরাও আইওয়ান-ই-সদরে শেহবাজের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শপথ গ্রহণের পর পাকিস্তানের নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

২০২২ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন শেহবাজ শরিফ। প্রায় ১৬ মাস প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর দ্বিতীয় দফায় দেশটির প্রধানমন্ত্রীর মসনদে ফিরলেন তিনি।

রোববার পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ওমর আইয়ুব খানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শেহবাজ শরিফ। এতে শেহবাজ শরিফ ২০১ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আর তার বিরোধী প্রার্থী ওমর আইয়ুব খান পান ৯২ ভোট।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন ঘিরে দেশটির সংসদে ব্যাপক হট্টগোল ও উত্তেজনা তৈরি হয়। পিটিআই সমর্থিত আইনপ্রণেতারা গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট কারচুপির মাধ্যমে তাদের হারিয়ে দিয়ে পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট সরকার গঠন করছে বলে অভিযোগ করেছে।

দেশটির সাতটি রাজনৈতিক দল সমর্থন দেওয়ায় পিএমএল-এনের প্রধান শেহবাজ শরিফের জয় প্রত্যাশিত ছিল। দেশটির নবনির্বাচিত এই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ), বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি), পাকিস্তান মুসলিম লীগ-জিয়া (পিএমএল-জেড), ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি) এবং ন্যাশনাল পার্টি (এনপি) সমর্থন জানিয়েছে।

সূত্র: ডন, জিও নিউজ।