অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন আইনপ্রণেতাদের কাছে ফেসবুকের সাবেক এক কর্মী বলেছেন, ফেসবুকের সাইট এবং অ্যাপস শিশুদের ক্ষতি করছে। বাড়াচ্ছে বিভক্তি। দুর্বল করছে গণতন্ত্র। ৩৭ বছর বয়সী সাবেক প্রোডাক্ট ম্যানেজার ফ্রাসেস হুগেন ক্যাপিটাল হিলের শুনানিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ ৬ ঘণ্টার ব্লাকআউটের সময় ১৫০ কোটি ডাটা হ্যাকাররা লুফে নিয়েছে বলে খবর দিয়েছে রাশিয়ার টিভি টিআর। তবে এ বিষয়ে ফেসবুক কিছু বলেনি।
ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে যেসব প্রচারণা হচ্ছে তা মিথ্যা। অনেক অভিযোগের কোন অর্থই নেই। তারা স্বচ্ছতা বজায় রাখছেন এবং রাখার চেষ্টা করছেন। নিজের ফেসবুক পেইজে জাকারবার্গ লিখেছেন, আমরা গভীরভাবে মানুষের নিরাপত্তা, মঙ্গল এবং মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে যত্নশীল। কিন্তু আমাদের কাজ ও উদ্দেশ্যকে যখন ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়, তখন তা দেখে আহত হই।
উল্লেখ্য বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেসবুক। কর্তৃপক্ষের হিসাবে মাসে ২৭০ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। আরো কয়েক শত মানুষ একই প্রতিষ্ঠানের অন্য অ্যাপস, যেমন- হোয়াটসঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করেন। কিন্তু তারা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে বলে যেমন সমালোচনা আছে, তেমনি সমালোচনা আছে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেয়া বন্ধ করতে ব্যর্থতার জন্য। ক্যাপিটল হিলে মঙ্গলবারের শুনানিতে এসব নিয়ে সাক্ষ্য দেন ফ্রাসেস হুগেন। তিনি সিবিএস নিউজকে বলেছেন, কয়েক সপ্তাহে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে ফেসবুকের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অনেক ডকুমেন্ট শেয়ার করেছেন। এসব ডকুমেন্ট ব্যবহার করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্ট করেছে যে, ইন্সটাগ্রাম নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে এই অ্যাপ মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
মঙ্গলবারের শুনানিতে তিনি এ বিষয়টিতেই জোর দিয়েছেন। বলেছেন, কোম্পানির কর্তৃপক্ষ জানে কিভাবে ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রামকে নিরাপদ করা যায়। কিন্তু তারা প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করছে না। কারণ, তারা জনগণের বিপরীতে নিজেদের লাভ দেখছে। ফেসবুকের ওপর ব্যাপক মাত্রায় নিয়ন্ত্রণের জন্য মার্ক জাকারবার্গের সমালোচনা করেন ফ্রাসেস হুগেন। বলেন, মার্ক জাকারবার্গের জবাবদিহিতা চাওয়ার মতো কেউ নেই এখন। নিজের বিপরীতে শুধু তিনি নিজেই আছেন। কোম্পানি শুধু নিজেদের লাভ দেখছে। সোমবার বিশ্বজুড়ে ফেসবুক বিভ্রাটের প্রশংসা করেন তিনি। বলেন, সোমবার আমরা বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট থেকে ফেসবুককে আউট দেখতে পেয়েছি। আমি জানি না কেন এমন হয়েছে। আমি শুধু এটাই জানি যে, কমপক্ষে ৫ ঘণ্টা বিভক্তি বাড়ানো, গণতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করতে এবং যুবতী, নারীদেরকে তাদের দেহ সম্পর্কে খারাপ ধারণা থেকে রক্ষা করেছে। তিনি সিনেটরদের উদ্দেশে বলেন, আমাদেরকে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
অন্যদিকে চিঠিতে মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, ইন্সটাগ্রামের গবেষণাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অসংখ্য তরুণ, যুবক এই প্লাটফরমকে ইতিবাচক অর্থে ব্যবহার করছেন। তবে আমাদের জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, আমরা যা কিছু সৃষ্টি করি তা অবশ্যই শিশুদের জন্য নিরাপদ ও কল্যাণকর হওয়া উচিত।