সুহেল ইবনে ইসহাক: সুহেল ইবনে ইসহাক সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঘুঙ্গাদিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সুহেল ইবনে ইসহাকের পিতার নাম মোহাম্মদ ইসহাক আলী ও মাতার নাম মরহুমা সায়রা বেগম। স্ত্রী মাহবুবা আহমেদ, পুত্র সাহেল আহমেদ রিফাত ও কন্যা মাহফুজা আহমেদকে নিয়ে তার একটি সুখী পরিবার। তিনি একই সাথে একজন লেখক, কলামিস্ট এবং কবি। ফাইনান্স ও ব্যাংকিং-এর উপর এমবিএ করেছেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে। ব্রিটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি (বিবিআইএ) এর সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন ২০০২-২০০৫ সাল। পরবর্তীতে ২০০৫-২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি যমুনা ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে পরিবারসহ তিনি কানাডার টরন্টোতে অভিবাসন করেন। তিনি বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকা, সংবাদপত্র ও বিভিন্ন ব্লগে কবিতা, কলাম, আর্টিকেল, গীতিকবিতা ইত্যাদি লিখে আসছেন। স্কুল জীবন থেকেই সাহিত্যের প্রতি ছিল দারুন আগ্রহ। কবিতা, গল্প, উপন্যাস হাতের কাছে যা পেতেন তা পড়ে নিতেন সাগ্রহে। আর তখন থেকেই তিনি কবিতার প্রতি এক ধরনের মোহন অনুভব করেন এবং তা থেকে কবিতা লেখার প্রেরণা। শৈশব কাল থেকেই প্রকৃতির প্রতি প্রগাঢ় টান ও আগ্রহ ছিল। সমাজের দুঃস্থ, অবহেলিত মানুষের দুঃখ দুর্দশা কবিকে ব্যথিত করে। এই অনুভূতি কবিকে সমাজ সেবা, মানব সেবায় আত্মনিয়োগ করতে প্রেরণা যোগিয়েছে। ২০০১ সালে তিনি “অন্বেষা সাহিত্য সংসদ” প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি রোটারি ইন্টারন্যাশনালের সাথেও জড়িত ছিলেন এবং “রোটারি ক্লাব অফ বিয়ানীবাজার” এর প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কানাডাতে রোটারি ক্লাব অফ টরন্টো ডেনফোর্থেরও প্রতিষ্ঠাতা। নিস্তব্দ-শান্ত পরিবেশে আপন খেয়ালে থাকতে খুব ভালোবাসতেন। শেখা ও সাধনা হতে স্বয়ং বিচ্যুত না হওয়াটাই কবি সুহেল ইবনে ইসহাকের অভিলাষ। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : ‘হৃদয়ে আঁকা ছবি’ (১৯৯৮ সাল), পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘নিঃশব্দের নিশ্বাস’ (বাংলা একাডেমি বইমেলা, ২০১৭,) এবং গীতিকাব্য ‘জীবন নদের ঢেউ’ (বাংলা একাডেমি বইমেলা, ২০১৭)।

১) বঙ্গবন্ধু আমার, বাংলাদেশটাও আমার (গীতি কবিতা)

এই দেশটা যে আমার, পতাকাটাও আমার
লাল-সবুজটা জড়িয়ে আছে হৃদয় ক্যাম্পাসে
সকাল-সাঁজে, সকাল-সাঁজে।
সোনার বাংলার স্বপ্ন শুধু এ হৃদয়ের মাঝে
বঙ্গবন্ধু আমার, বাংলাদেশটাও আমার।

দেশটা যখন ছুটে চলে সফলতার পানে,
আমরা তখন মাতোয়ারা স্বদেশ প্রেমের গানে।
ঐ সবুজ মাঠে সোনার ফসল হওয়ার যখন দোলে,
অন্ধকারে বন্ধ থাকা সকল দুয়ার খুলে।
তেমনি করে ডাকবো তোমায়
হৃদয় মাঝে রাখবো তোমায়,
যতদিন এই ধরা মাঝে বাংলাদেশটা রবে।
সকাল-সাঁজে, সকাল-সাঁজে।।
সোনার বাংলার স্বপ্ন শুধু এ হৃদয়ের মাঝে
বঙ্গবন্ধু আমার, বাংলাদেশটাও আমার।

ঐ রাঙা সুরুজ সকাল বেলা বিলিয়ে দেয় যে আলো
প্রার্থনা মোর রবের কাছে দেশের সকল ভালো।
সাঁজের বেলায় লাল নীলিমা দিনের অবসান
ভুলবো না এ জাতি কভু তোমার অবদান।
এমনি করে করবো স্মরণ,
সারা জীবন রইবো আপন,
সোনার দেশটা রইবে তোমার নামের অনুভবে।
সকাল-সাঁজে, সকাল-সাঁজে।।
সোনার বাংলার স্বপ্ন শুধু এ হৃদয়ের মাঝে
বঙ্গবন্ধু আমার, বাংলাদেশটাও আমার।
রচনাকাল: ১৫ অগাস্ট ২০১৯, টরন্টো, কানাডা।

২) আমি জেনেছি তোমায় (গীতি কবিতা)

আমি জেনেছি তোমায়, আছো স্মৃতির পাতায়
তাইতো তোমায় ভালোবেসেছি,
স্বাধীনতা বাঁচাতে, দেশটাকে সাজাতে
জীবনটা করেছো অনুদান,
তুমি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

জেল-জুলুম আর অত্যাচারে, লাল সবুজের স্বপ্নটারে
গড়েছিলে দেশটার জন্য।
প্রিয় নেতা তোমার জন্য, স্বাধীন জাতিতে হলাম গণ্য,
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালীর অসীম অবদান,
তুমি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।।

হৃদয়ের ক্যানভাসে তোমার ছবি ভাসে
যাবে না মুছে তা কোনোদিন,
তোমার স্বপ্ন গাঁথা এই মানচিত্র
স্মৃতিতে রবে তুমি অমলিন।
তোমার দেখানো পথে, এখনো চলছি অভিরাম,
তুমি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
রচনাকাল : অগাস্ট ৫, ২০১৯, টরন্টো, কানাডা।

৩) নিন্দিত রজনী

বাঙালির বুকের কাছে রিকোয়েলেস রাইফেল।
ব্যালটের পায়রায় স্বাধীনতার হৃদপিণ্ড।
বুলেটের কর্কশ চিৎকারে হৃদয়ের রক্তাক্ত, ক্ষত।
ঘুমন্ত বাংলাদেশ নিশিবসানের নিদ্রিত প্রতীক্ষায় নিঃশ্বাস ফেলছে।
১৫ আগস্ট!
ইতিহাসের বেদনাবিধুর ও বিভীষিকা।
শেষ শ্রাবণের কলঙ্কিত রাত সেটি।
ঘুটঘুটে অন্ধকারের জাল ভেদ করে
মানব পৃথিবীর বঙ্গীয় বদ্বীপে আছড়ে পড়েছিল জোছনা
ঝলকানি অশনি আলোকরশ্মি।
অবাক স্তব্ধীভূত খবরে ভোরের আলোয় হারিয়েছে নিন্দিত রজনী।
অকৃতজ্ঞ অসুরেরা ভালোবাসার
সুপরিপক্ব ভিতকেই কেবল নাড়িয়ে দেয়নি,
চিরতরে স্তব্ধ করে দিয়েছে একটি জাতি গড়ার
অন্যতম কারিগর,
নিপুণ মানুষটিকে!
বাঙালি কেবল বঙ্গবন্ধুকেই হারায়নি,
হারিয়েছে সেদিন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশটাকেও।
রচনাকাল: ১২ অগাস্ট ২০১৯, টরন্টো, কানাডা।

৪) শ্রাবণ মেঘের মতো কাঁদি (গীতি কবিতা)

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মোদের প্রাণের নেতা
বাংলাদেশের ইতিহাসই তোমার জীবন কথা।
জীবন খানি বিলিয়ে দিলে জাতির কল্যাণে,
শ্রাবণ মেঘের মতো কাঁদি তোমায় বিহনে।।

তোমায় জানতে হলে পিতা জানতে হবে দেশকে
জানতে হবে বাংলাদেশের শুরু থেকে শেষকে।
সারা বিশ্বে একটাই নজির জানো কি ভাই-বোনে,
সাত কোটি লোক করলো লড়াই একজনের আহ্বানে।
শ্রাবণ মেঘের মতো কাঁদি তোমায় বিহনে।।

মুজিব মানে বাঙালীর বীরের পরিচয়
জীবন দিয়ে আদায় করা দেশমাতৃকার জয়।
লাল-সবুজের পতাকা আজ ঊর্ধ্ব গগনে,
তোমায় নিয়ে উঠলো জাতি বিজয় সোপানে।
শ্রাবণ মেঘের মতো কাঁদি তোমায় বিহনে।।
রচনাকাল: ৯ ডিসেম্বর,২০২০, টরন্টো কানাডা।

৫) মহাকাব্যের কবি

মনের মানুষ বঙ্গবন্ধু সকাল দুপুর সাঁঝে,
তোমার ছবি বাঁধা আছে সবার হৃদয় মাঝে।
তোমায় নিয়ে গান-কবিতা লিখছে কত কবি,
লাল সবুজের নকশা মাঝে দেখি তোমার ছবি।
বিশ্ব নেতা হয়ে আছেন বিশ্ব আসন ছুঁই,
এ ধরাতে শেখ মুজিব এক চৌদ্দতম লুই।
স্বদেশভক্তি, মানবতা তোমায় ছিল সবই,
মহানায়ক বঙ্গবন্ধু মহাকাব্যের কবি।
এসো চলো স্বপ্ন তারই সত্যি করি সবে,
বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে।
রচনাকাল: অগাস্ট ০১, ২০১৯, টরন্টো, কানাডা।