Home আন্তর্জাতিক বাইডেনের সফলতা ও ব্যর্থতার এক বছর

বাইডেনের সফলতা ও ব্যর্থতার এক বছর

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের ২০ জানুয়ারি ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন জো বাইডেন। তিনি বিভক্তির দেশে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি কর্মসংস্থান, শিশুদের নিরাপদ স্কুলে শিক্ষাদান এবং এই মহামারি অবসানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যে জনসমর্থন নিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে বসেছিলেন সেই জনসমর্থন অনেক কমেছে। এক জরিপে দেখা গেছে, সাম্প্রতিককালে ট্রাম্প বাদে বাকি সবার চেয়ে খারাপ রেকর্ড করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। খবর বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ানের

জো বাইডেনের ক্ষমতার আজ এক বছর পূর্ণ হলো। প্রতিশ্রুতির তুলনায় তার কাজ কম বলে বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে। কুইনিপিয়াক-এর জরিপে দেখা গেছে, বাইডেন ৫৬ শতাংশ জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এখন তার সেই জনসমর্থন গিয়ে ঠেকেছে ৩৩ শতাংশে। তিনি এক বছরে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার এবং করোনার ডেলটা ধরনে দ্রুত এবং বেশি করে আক্রান্তের ঘটনায়। আমেরিকার হাসপাতালে করোনা রোগীর উপচে পড়া ভিড়। শ্রমিকদের টিকা বাধ্যতামূলক করার নীতিও সুপ্রিম কোর্টে আটকে গেছে। ৪০ বছরের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্য সবচেয়ে বেশি। ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে এখনো সমঝোতা করতে পারেনি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের হোয়াইট হাউজের নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা এবং ব্রুকিংস ইন্সটিটিউশনের সিনিয়র ফেলো বিল গালস্টন বলেন, একজন প্রেসিডেন্ট যখন আশাকে হতাশায় পরিণত করেন সেটা সত্যিই সমস্যার। প্রেসিডেন্ট বাইডেন করোনামুক্ত দেশ গড়তে পারেননি। যদিও গত জুলাইয়ে ভাইরাস থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অথচ এ সময়ই করোনার ডেলটা ধরন প্রভাব বিস্তার করে। এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে আঘাত হানে ওমিক্রন।

গণতন্ত্র ও সামাজিক পরিবর্তন নিয়েও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন বাইডেন। মধ্যপন্থি এ নেতা ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি স্থগিত করেছিলেন। তবে আদালত তার স্থগিতাদেশ বাতিল করে দিয়েছেন। ভোটাধিকার বিল করা নিয়ে কংগ্রেসে তোপের মুখে পড়েছেন তিনি। অস্ত্র আইন ও বর্ণবাদ নিয়েও তাদের সঙ্গে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। বাইডেন কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক নীতিসংবলিত আইনও সংশোধন করাতে পারেননি। তিনি যে বিভক্তি দূর করার অঙ্গীকার করেছিলেন সেই বিভক্তি গত এক বছরে বেড়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ বাইডেন প্রশাসন স্থানীয় ইস্যুতে ক্যাপিটল হিলে হামলার তদন্তকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে যা দেশটিতে বিভক্তি আরো বাড়াচ্ছে।

বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক নিম্নমুখী প্রবণতা ও মন্দা থেকে বাঁচাতে ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের উদ্ধার পরিকল্পনা পাশ করার কৃতিত্ব দেওয়া হয় বাইডেন প্রশাসনকে। বাইডেন সেতু, রাস্তা, ইন্টারনেট সংযোগ এবং আরো অনেক স্থাপনা ঠিক করতে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারের অবকাঠামো বিলে স্বাক্ষর করেছেন। আইনটি রিপাবলিকানদের সমর্থনসহ পাশ হয়। তবে আরো বড় ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের জলবায়ু ও সামাজিক ব্যয় বিলটি (বিল্ড ব্যাক বেটার বিল) সিনেটে আটকে আছে। এই বিলের চরম বিরোধী বাইডেনের নিজের ডেমোক্র্যাটিক দলের সিনেটর জো মানচিন। তার সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হন বাইডেন। বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরিয়ে আনেন। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের বহুজাতিক প্রচেষ্টায়ও ফিরে আসেন। তিনি ইউরোপ, ন্যাটো ও এশিয়া জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের পুরোনো ও শক্তিশালী মিত্রদের আশ্বস্ত করেন।

Exit mobile version