অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার, সানোফি এবং গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লেইন তাদের ওষুধের দাম বাড়াতে যাচ্ছে নতুন বছরে। হেলথকেয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠান থ্রি অ্যাক্সিস অ্যাডভাইজার্সের উদ্ধৃতি দিয়ে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নতুন বর্ধিত মূল্য গতকাল শুক্রবার থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করবে।

ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো বলছে, ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির অনেক কারণের মধ্যে একটি চলমান মহামারী। করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডাক্তাররা রোগী দেখার ফি কম নিচ্ছেন। এমন অবস্থায় ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসারে, ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো অনেক ওষুধের দাম কমাতে বাধ্য হয়। ফলে ওই কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমে যায়।

নতুন বছরে ওষুধ কোম্পানিগুলো প্রায় তিন শতাধিক ওষুধের দাম ১০ শতাংশের কাছাকাছি বাড়াচ্ছে। ফাইজার ও সানোফি অবশ্য তাদের ওষুধে ৫ শতাংশ দাম বাড়াচ্ছে। জিএসকে তাদের শিংগ্রিক্স ও ডিপথেরিয়ার টিকার দাম বাড়াচ্ছে যথাক্রমে ৭ ও ৮ দশমিক ৬ শতাংশ করে। তেভা ফার্মাসিউটিক্যালস তাদের ১৫টি ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। এ কোম্পানির অধিকাংশ ওষুধই স্নায়ুবিক সমস্যায় ভোগা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের ওষুধ বিক্রি করেছে। কিন্তু মুনাফা কম হওয়ায় এখন তারা ৫ থেকে ৬ শতাংশ দাম বাড়াচ্ছে ওষুধপ্রতি।

কোম্পানিগুলো আশা করছে, এ মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে তারা তাদের কাক্সিক্ষত মুনাফা ঘরে তুলতে পারবে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর এ মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনো ট্রাম্প প্রশাসন কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেনের প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়াকে সামনে রেখেই কোম্পানিগুলো ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। কারণ গত মাসের গোড়ার দিকে ওষুধের দাম কমানো নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া উদ্যোগ আটকে দিয়েছিল এক ফেডারেল বিচারক। এমনকি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিদের সংগঠন পিএইচআরএমএ ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছিল।

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেও ওষুধের দাম কমানোর পক্ষেই বলেছিলেন একাধিকবার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্পের অধীনে ওষুধের দাম কমানোর কথা বলেছিলেন। তার এ সিদ্ধান্তের পেছনে কংগ্রেসের ডেমোক্রেট শিবিরের সমর্থন আছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, চূড়ান্ত অর্থে ক্ষমতায় বসার পর জো বাইডেন তার কথা রাখেন কি না তাই দেখার বিষয়।