অনলাইন ডেস্ক : শক্তিশালী ও বড় দেশগুলো যদি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে, তা পুরো বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।। স¤প্রতি ভারতের উদ্দেশ্যে একথা বলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
গত ১১ নভেম্বর, শনিবার দেশব্যাপী স্মার্ট এনার্জি গ্রিডের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সময় সাংবাদিকদের একথা বলেন ট্রুডো।

ওই অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রুডো বলেন, ‘যেদিন আমাদের নাগরিক হত্যার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আমাদের হাতে এসেছে, সেদিন থেকেই আমরা ভারতকে সত্য উদ্ঘাটনে সাহায্যের হাত বাড়ানোর কথা বলে আসছি।
যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য বন্ধুদেরও বলছি আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করার মতো এই গুরুতর বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হতে। আমরা এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। যেমন অব্যাহত থাকবে তদন্তের কাজ।’

ভারতের বিরুদ্ধে ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘনের সরাসরি অভিযোগ এনে ট্রুডো বলেন, ‘৪০ জন ক‚টনীতিককে একতরফাভাবে দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া আমাদের হতাশ করেছে। ওই আচরণ ভিয়েনা কনভেনশনবিরোধী।
কানাডার নাগরিককে হত্যায় ভারতের হাত থাকার বিশ্বাসযোগ্য কারণ আমাদের আছে। সেই কারণেই ভারত পাল্টা চাপ দিয়ে ৪০ জন ক‚টনীতিককে বহিষ্কার করেছে।’

ট্রুডো বলেন, ‘সত্যতা প্রমাণে শক্তির প্রয়োগ করা হলে, বড় রাষ্ট্র ফলাফলের দিকে না তাকিয়ে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করলে প্রত্যেকের কাছেই পৃথিবীটা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।’

শিখ নেতা হারদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স¤প্রতি ভারতের সঙ্গে কুটনৈতিক টাপোড়েন চলছে কানাডার। গত ১৮ জুন কানাডার মাটিতে নিজ্জার হত্যার ঘটনায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে অভিযুক্ত করেছে জাস্টিন ট্রুডো। তবে ভারত শুরু থেকেই এই অভিযোগ অমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে।

হারদীপ সিং কানাডিয়ান নাগরিক এবং ভারতে শিখদের স্বাধীনতাকামী খালিস্তানি নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

নিজ্জার হত্যাকান্ডের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারতের সঙ্গে কথা বলতে চান কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রুডো বলেন, কানাডিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা অনেক আগেই জানতে পেরেছিল নিজ্জারকে কানাডার মাটিতে হত্যা করার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিষয়টি সমঝোতা ও সমাধানে আমরা শুরু থেকেই ভারতকে প্রস্তাব দিয়েছি।

যুক্তরাষ্ট্রসহ আমাদের অনেক বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছি। কারণ ঘটনাটি আন্তর্জাতিক আইন, সার্বভৌম ও গণতন্ত্র বিরোধী। কানাডা সবসময়ই আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এখনো তারা ভারতের সঙ্গে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে বিষয়টি সমাধান করতে চায়।

ট্রুডোর এই বক্তব্যে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, কানাডার অভিযোগ অপ্রাসঙ্গিক।

যদি তাদের কাছে প্রাসঙ্গিক কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে আমরা সরাসরি কথা বলব। পাশাপাশি কানাডায় অবস্থানরত ভারতীয় কুটনৈতিকদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। সূত্র : জি নিউজ