ফারজানা নাজ শম্পা : শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বয়স্ক ও যুব কর্মসংস্থান উন্নয়ন, গৃহহীনদের উন্নয়নে সংগঠন, বিপর্যস্ত শিশু কিশোর ও গৃহহীনদের পুনর্বাসন, অভিবাসীদের জন্য বিভিন্ন কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠা, মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক আয়োজন ও পরিবেশ সৃষ্টি, বৃক্ষরোপন, দূষণমুক্ত পরিবেশ কর্মসস্থান সৃষ্টিমূলক প্রচারণা, নিয়মিতভাবে বিভিন্ন জরুরী পরিস্থিতিতে ফুড ব্যাঙ্ক গঠন, বিপর্যস্ত বয়স্ক ও অভিবাসী নাগরিকদের জন্য দ্বিপ্রাহরিক খাদ্যবিতরণ, মহামারীকালিন জরুরী পরিস্থিতিতে খাদ্য বিতরণ ইত্যাদি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়মূলক ক্ষেত্র কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে সাংগঠনিক ও ব্যক্তিগত আয়োজনে মাধ্যমে জনকল্যাণে সমাজে নিঃস্বার্থভাবে যারা অবদান তাঁদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বার্ষিক ভলেন্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ৭ই নভেম্বর কানাডার নোভা স্কোশিয়া প্রভিন্সের রাজধানী হ্যালিফ্যাক্সে ৪৮তম ভলেন্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।
হ্যালিফ্যাক্সের নিকটবর্তী ডার্ট মাউথ শহরের অলডার্নি ল্যান্ডিং থিয়েটার হলে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচিতদের পুরস্কার সম্মাননা প্রদান ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন লেফটেনান্ট গভর্নর আর্থার যে লা বø্যান্ক ও এমএল প্যাট ডুন।
নোভা স্কোশিয়ার প্রিমিয়ার টিম হিউস্টন এই উপলক্ষ্যে প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক স্মারক গ্রন্থে তাঁর বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা দেন। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে ধ্রুপদী ভরত নাট্যম নৃত্য ও স্থানীয় ইনডিজেনাস শিল্পীর পরিবেশনা, আটলান্টিক মাল্টি কালচারাল ড্রামারদের বিভিন্ন পরিবেশনা অনুষ্ঠান ভিন্ন মাত্রার সংযোগ ঘটায়।
আটলান্টিক কানাডার নোভা স্কশিয়া প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চল যেমন কেপ ব্রেটন রিজিওন, সেন্ট্রাল রিজিওন, ফান্ডি রিজিওন, হাই লান্ড ও সাউথ শোর রিজিওনসহ ও কয়েকটি অঞ্চলের ৬৭ জন ব্যাক্তিত্ব, কয়েকটি সংগঠন ও পরিবারকে ভলেন্টিয়ার সম্মাননা পুরস্কার ও নোভা স্কশিয়া স্ট্রং অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
রাজধানী হ্যালিফ্যাক্স হতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ এহসান ‘ভলেন্টিয়ার অব দা ইয়ার’ এই বিশেষ সম্মননায় ভূষিত হন। মোহাম্মদ এহসান দীর্ঘ সময়ব্যাপী কানাডার হ্যালিফ্যাক্সের মূল ধারার বৃহত্তর বিভিন্ন কমিউনিটির ও অভিবাসীদের মৌলিক উন্নয়নের স্বার্থে নিরলসভাবে একজন সেচ্ছাসেবক বা ভলেন্টিয়ার হিসেবে অবিরত কাজ করে যাচ্ছেন। কোভিড মহামারীর সময় এর সূচনা হতেই হতে তিনি জীবনের সর্বোত্তম ঝুঁকি নিয়ে নিপীড়িত বিপর্যস্ত মানুষের মাঝে নিয়মিত প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও খাদ্য বিতরণ করে এসেছেন, বয়স্ক অধিবাসীদের সাপ্তাহিক দ্বিপ্রাহরিক খাদ্য আয়োজন, কিন্ ক্লাব অফ কানাডার সক্রিয় বোর্ড সদস্য রূপে বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নকর্ম, অভিবাসীদের ও জনগণের পুনর্বাসন উন্নয়ন কল্পে বিভিন্ন কার্যক্রম ও কানাডার নবাগত অভিবাসীদের ও পার্মানেন্ট রেসিডেন্টদের ভোটার অধিকার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগের দ্বারা কানাডাকে প্রকৃত অর্থে কিছু দেবার অঙ্গীকার নিয়ে প্রায় নিভৃতেই নিরলস ভূমিকা রাখছেন।
উল্লেখ্য যে, কানাডার অভিবাসী ও বৃহত্তর জন উন্নয়ন স্বার্থে বাস্তবভিত্তিক সমস্যা তুলে ধরার নিরিখে মোহাম্মদ এহসান মূলধারার রাজনীতির সাথে দীর্ঘ সময় সফলভাবে সম্পৃক্ত আছেন। ইতোপূর্বে এহসান সামাজিক উন্নয়নে অবিরত অবদানের জন্য হ্যালিফ্যাক্সের সামাজিক সংগঠন কিন্ ক্লাব হতে ‘কিন অফ দি ইয়ার অ্যাওয়ার্ড’ ও কুইন এলিজাবেথ প্ল্যাটিনাম জুবিলী রিকোগনিশন ‘কমিউটিনি হিরো অ্যাওয়ার্ড’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
এহসান দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ এক যুগের বেশি সময় ধরে কানাডার হ্যালিফ্যাক্সের অধিবাসী। তিনি বাংলাদেশের সিলেটের শাহ্জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগে শিক্ষকের দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন।
শিক্ষাবিদ ও সমাজ কর্মী এহসানের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সমৃদ্ধ গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ও প্রকাশনার রচয়িতা। এহসান ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়, একাডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কানাডিয়ান রাজনীতি ও তুলনামূলক রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিষয়ে দীর্ঘ সময় খন্ডকালীন শিক্ষকতার দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন, তিনি হালিফ্যাক্সের প্রভিন্সিয়াল সরকারের একটি বিভাগে স্পেশ্যাল এডভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে জনসেবা ও উন্নয়নমূলক বিভিন্ন সংগঠনে সক্রিয়ভাবে নিবেদিত আছেন।