অনলাইন ডেস্ক : পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ফ্রান্সে শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। রোববার (২৪ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। মূলত দ্বিতীয় দফার এই নির্বাচনে মুখোমুখি হয়েছেন ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং কট্টর ডানপন্থি নেত্রী মেরি লে পেন।

রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। এর আগে ২০১৭ সালেও এই দুই প্রার্থী নির্বাচনের শেষপর্যন্ত লড়াই করেছিলেন। তবে শেষ হাসি হেসেছিলেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ফরাসি নাগরিকরা একটি নির্বাচনে ভোট দেওয়া শুরু করেছেন যেটাতে দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্ধারিত হবে। অর্থাৎ মধ্যপন্থি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার পদে বহাল থাকবেন নাকি কট্টর ডানপন্থি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী লে পেন জয়লাভ করবেন; ভোটগ্রহণের মাধ্যমে কার্যত সেটিই ঠিক হতে চলেছে।

রয়টার্স বলছে, বর্তমান ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে পরাজিত করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরোধী ও কট্টর-ডানপন্থি বলে পরিচিত মেরি লে পেন যদি নির্বাচিত হন তাহলে তা হবে একটি ‘রাজনৈতিক ভূমিকম্প’। অবশ্য সাম্প্রতিক জনমত জরিপে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এগিয়ে রয়েছেন বলে উঠে এসেছে।

একইসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, কট্টর-ডানপন্থি নেত্রী ৫৩ বছর বয়সী লে পেন সাম্প্রতিক সময়ে তার ভাবমূর্তি কিছুটা উদার করার এবং তার ন্যাশনাল র‌্যালি পার্টির কঠোর কিছু নীতির বিষয়ে সুর নরম করার পরও ফরাসিদের অনেকের কাছেই তিনি এখনও অজনপ্রিয় হিসেবেই রয়ে গেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনমত জরিপে ৪৪ বছর বয়সী ম্যাক্রোঁ এগিয়ে থাকার পরও লে পেনের আশ্চর্যজনক বিজয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ দ্বিতীয় দফার এই নির্বাচনে বহু সংখ্যক ভোটার শেষ পর্যন্ত কাকে ভোট দেবেন তা নিয়ে শেষমুহূর্তেও তারা সিদ্ধান্তহীন ছিলেন বলে জরিপে দেখা গেছে।

এছাড়া রয়টার্সের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে- কোনো প্রার্থীই ভোটারদের মন পুরোপুরি জয় করতে পারেননি। আর তাই ২০১৭ সালের নির্বাচনের পর থেকে দায়িত্বপালন করা বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ওপর ক্ষোভের কারণে অনেক ভোটার হয়তো বিরোধী প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।

এতে আরও বলা হয়, নির্বাচনে যদি লে পেন জয়ী হন তবে এটি সম্ভবত ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়া বা ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার মতোই অপ্রত্যাশিত হবে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই ভোটগ্রহণ চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী ফরাসি নির্বাচনে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দ্বিতীয় দফার ভোটে অংশ নিতে হয়। প্রথম রাউন্ডে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী দ্বিতীয় দফার ভোটাভুটিতে অংশ নিতে পারেন।

গত ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রথম দফার ভোটে মোট ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রথম দফার ভোটে ম্যাক্রোঁ এবং লে পেন সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন। প্রথম দফার ভোটাভুটিতে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ডানপন্থি মেরি লে পেনের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও তা ছিল খুবই স্বল্প ব্যবধানে।

প্রথম দফায় ম্যাক্রোঁ এবং লে পেন অন্যদের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ভোট পান। আর তাই তাদের দু’জনকে এখন দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে এবং এই দফার ভোটের হিসেব-নিকেশ এমনই যে শেষ পর্যন্ত কে যে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে এলিসি প্রাসাদে ঢুকবেন তা বলা যাচ্ছে না।