অনলাইন ডেস্ক : মালয়েশিয়ার একটি বিমানবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী সিরিয়ান শরণার্থী হাসান আল কান্তারকে কানাডার নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। কোথাও যেতে না পেরে গত সাত মাস ধরে মালয়েশিয়া বিমানবন্দরে আটকে ছিলেন তিনি। এ ছাড়া বেশ কয়েকবছর তিনি কোনো দেশেই থাকতে পারছিলেন না। অবশেষে গত বুধবার, ১১ই জানুয়ারি তিনি তার থাকার জন্য একটি দেশ পেলেন।
নাগরিকত্ব শপথ নেওয়ার আগে গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আল-কোনতার বলেন, আজ থেকে আমি দেশহীন নই। এটা আমার কাছে রীতিমত বিজয়ের মত। তিনি বলেন, আমি একজন কানাডিয়ান, ভাবতে ভাল লাগছে। এর পেছনে বিষাদও লুকিয়ে আছে। এর জন্য আমাকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে। কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া শহরে সাময়িক ঠাই পেয়েছেন কোনতার। ২০১৭ সালে তিনি আরব আমিরাত থেকে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে দেশটি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
সিরিয়াতে যুদ্ধ পরিস্থিতি থাকায় সেখানেও ফিরতে পারছিলেন না তিনি। তাই কোনতার মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেদেশের সরকারের দেওয়া ৯০ দিনের থাকার অনুমতিও শেষ হয়ে যায়। সেখান থেকে তিনি প্রথমে ইকুয়েডর পরে কম্বোডিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। কম্বোডিয়া সরকার তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে তাকে রাষ্ট্রহীন অবস্থায় মালয়েশিয়ায় ফেরত পাঠায়। এরপর সেখান থেকে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সফল হননি।
তারপর থেকেই মালয়েশিয়া বিমানবন্দরে থাকা শুরু করেন কোনতার। সাতমাসের বেশি সময় বিমানবন্দরে থাকার পর অবশেষে কানাডা সরকার তাকে সেদেশে থাকার অনুমতি দেয়। বর্তমানে তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন। গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, কানাডার পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে অন্যরকম একটা অনুভুতি হয়েছে আমার মধ্যে। মনে হয়েছে এটাই আমার বাড়ি। আমার পরিবার এখন মিসরে আছে। আমি আমার পরিবারের সমস্যায় পাশে থাকতে পারিনি। এটা আমার জন্য বড় দুঃখের। যাই হোক, দুঃখবোধ ভুলে গিয়ে বর্তমানের কষ্টার্জিত সুখটুকু মনে রাখতে চাই। সূত্র : সিবিসি নিউজ
