অনলাইন ডেস্ক : রুশ ভূখণ্ডে হামলা করলে তা ভয়াবহ পরিণাম বয়ে আনবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিষদ রাশিয়ানস’ সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক সভায় এই সতর্কবার্তা তিনি।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিকিউরিটি কাউন্সিলের সোমবারের সভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন পুতিন। বৈঠকে শনিবার ক্রিমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের ঘটনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার ভূখণ্ডের ভেতরে কোনো হামলা ঘটলে তার জবাব না দিয়ে চুপচাপ বসে থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, উচিতও নয়। যদি এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকে, তাহলে তা সন্ত্রাসী হুমকি হিসেবে আমাদের বিবেচনা করতে হবে এবং এমনভাবে জবাব দিতে হবে, যেন সন্ত্রাসীরা পরবর্তীতে এ ধরনের হামলা ঘটানোর সাহস আর না পায়।’

সম্প্রতি কৃষ্ণসাগরের তলদেশ দিয়ে যে পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে তুরস্কে গ্যাস সরবরাহ করা হয়, সেই পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার জন্যও ইউক্রেনকে দায়ী করেছেন পুতিন। এ সম্পর্কে সোমবারের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন অকেজো করে দেওয়ার চেষ্টা করা করেছে, সেটাও আমরা জানি।’

গত শনিবার (৮ অক্টোবর) রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগ স্থাপনকারী ‘ক্রিমিয়া সেতু’তে একটি ট্রাক বিস্ফোরিত হয়। এ সময় ট্রাকটির কাছে থাকা একটি গাড়িতে আগুন লেগে ৩ জন বেসামরিক ব্যক্তি মারা যান এবং একটি তেলবাহী ট্রেনেও আগুন ধরে যায়।

১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটি ইউরোপের অন্যতম দীর্ঘতম সেতু। সেতুটিকে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্রেনে যুদ্ধরত রুশ বাহিনীর জন্য সেতুটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। রাশিয়া এই সেতু ব্যবহার করে সামরিক সরঞ্জাম, গোলাবারুদ এবং কর্মীদের রাশিয়া থেকে দক্ষিণ ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেত।

এই ঘটনার পরপরই একে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ উল্লেখ করে পুতিন অভিযোগ করেছিলেন, ইউক্রেনের গোয়েন্দা বাহিনী রাশিয়ার বেসামরিক অবকাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ধ্বংসের লক্ষ্যে এ হামলা চালিয়েছে।

এদিকে, সোমাবর সকাল থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে টানা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে রুশ বাহিনী। গত ২৬ জুনের পর এই প্রথম কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঘটল।

ইউক্রেনের বিমানবাহিণীর এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, সোমবার কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ৮৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে রুশ বাহিনী।

ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই আমরা ধ্বংস করে ফেলতে পেরেছিল, কিন্তু সবগুলো ধ্বংস করা সম্ভব হয়নি এবং হামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’

পুলিশের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, সোমবারের হামলায় ইউক্রেনজুড়ে ১০ জন নিহতের এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন। এছাড়া হামলার জেরে লিভ ও খারকিভ শহর এবং খমেলনিতস্কি, সুমি ও তেরনোপিল অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।