সামিনা চৌধুরী : প্রতিদিনের যাপিত জীবনের আশেপাশে অনেক গল্প থাকে। সেসব গল্প কখনও চোখে দেখা যায়, কখনও কানে শোনা যায়, আবার কখনও কখনও সেই গল্প অনুভ‚তির দরজায় কড়া নেড়েও যায়। একজন লেখক সেই সব কাহিনি সাদাকালো অক্ষরে লিখে রাখেন যা পাঠককে দেয় স্বপ্নের মতো গল্পের জগৎ, দেয় নতুন ভাবনা। রোকসানা পারভীন শিমুল নদীর মতো বয়ে চলা জীবনের দুই ক‚লে বাস করা মানুষের সুখ-দুঃখ-আনন্দ-বেদনার আখ্যান লিখেছেন তাঁর ‘গল্পগুলো মনের তাকে ছিল’ গ্রন্থে। বইটিতে মোট ১৫টি ছোটগল্প আছে যেখানে উঠে এসেছে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প, বাবা-মায়ের জন্য সন্তানের ভালবাসার আঁকুতি, শশুড়বাড়ির আত্মীয়দের ভালমন্দ ব্যবহারের চিত্র, পরিবার আর সমাজের নিষ্ঠুর নিয়মের কষাঘাতে ভালবাসার আত্মহুতির করুণগাথা, কর্মজীবী নারীর রোজনামচা এবং আরো কয়েক ধরনের গল্প। প্রকাশকের ভাষায়, ‘এ বইয়ের প্রতিটি গল্প এক একটি ভিন্ন মাত্রার জীবনের।’

নারী বিধাতার এক অনবদ্য সৃষ্টি। শামসুর রাহমান লিখেছেন, ‘কখনো আমার মাকে কোনো গান গাইতে শুনিনি।/সেই কবে শিশু রাতে ঘুম পাড়ানিয়া গান গেয়ে/আমাকে কখনো ঘুম পাড়াতেন কি না আজ মনেই পড়ে না।’ সভ্যতার সৃষ্টিলগ্নে মায়েদের ঘুম পাড়ানিয়া গানের মধ্যে দিয়েই শুরু হয়েছিল সাহিত্যের সূচনা। ক্রমশ সভ্যতার অগ্রগতি হলে সামাজিক পারিবারিক টানাপোড়েনে নারী সাহিত্য-চর্চা থেকে দূরে সরে গেলেও সাহিত্যে নারীর উপস্থিতি সবসময় লক্ষণীয়। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় যে চন্দ্রাবতী (১৫৫০-১৬০০) ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম মহিলা সাহিত্যিক। তারপর নওয়াব ফয়জুন্নেসা (১৮৩৪-১৯০৩), স্বর্ণকুমারী দেবী (১৮৫৫-১৯৩২), বেগম রোকেয়া (১৮৮০-১৯৩২), বেগম সুফিয়া কামাল (১৯১১—১৯৯৯), মহাশ্বেতা দেবী (১৯২৬-২০১৬) প্রমুখের হাত ধরে নারী সাহিত্যিকগণ লিখেছেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে নারী লেখকদের মধ্যে নূরজাহান বেগম (১৯২৫-২০১৬), ড. হালিমা খাতুন (১৯৩৩ -২০১৮), রিজিয়া রহমান (১৯৩৯ -২০১৯), সেলিনা হোসেন (১৯৪৭), আকিমুন রহমান (১৯৬০-), তসলিমা নাসরিন (১৯৬২-) অন্যতম। এইসব নারী সাহিত্যিকদের লেখায় উঠে এসেছে প্রণয় ও বিরহের আখ্যান, যুদ্ধের সংগ্রাম, জাতীয়তাবাদ, দলিতের অধিকার, নারীর জীবন ও জগৎ, দ্রোহ এবং আরো অনেক প্রেক্ষাপটের গল্প। কাজেই বলা যেতেই পারে অনেক প্রতিক‚লতা থাকার পরও সাহিত্য আসরে নারী সহিত্যিকগণ মর্যাদার আসন করে নিয়েছেন।

নারী কখনও প্রেমিকা, কখনও বঁধু কখন মাতা, কখনও ভগ্নী, কখনও কন্যা। এত রূপ নারীকে করেছে রহস্যময়ী। যে নারী প্রাণ সৃষ্টির মত কাজ করতে পারে, সেই নারীই সমাজের সবচেয়ে অনুগত প্রাণী। নারী একই সঙ্গে শক্তিময়ী এবং দুর্বল। তাই নারী কখনও পিতার, কখনও স্বামীর আবার কখনও পুত্রের অধীন। কাজেই নারীর সাহিত্যে উঠে আসে নারীর জীবন। আমেরিকান সাহিত্য সমালোচক এলেন মায়ের্স তাঁর ‘লিটারারি উইম্যান: দ্যা গ্রেট রাইটার্স’ বইটিতে জেন অস্টিন, শার্লট ব্রন্টি, জর্জ সেন্ড, সাইমন ওয়েল প্রমুখ লেখকের লেখা বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছিলেন যে নারী লেখকের লেখায় গার্হস্থ্য জীবনাকাঙ্ক্ষা, পুরুষশাসিত সমাজে নারীদের ভয়ভীতি ও প্রতিবন্ধকতা ফুটে উঠে। রোকসানা পারভীনের শিমুলের গ্রন্থটি যেন লিটারারি উইম্যান: দ্যা গ্রেট রাইটার্স বইটির আরও একটি অধ্যায় যেখানে রয়েছে জহুরা বেগম, সেঁজুতি, প্রিয়া, নিশু, মিলির ভাবি, নীলা, জয়া, ইরা, প্রিয়ন্তি, শামা ও আরও কয়েকজন নারীর পারিবারিক ও সামাজিক টানাপোড়েনের গল্প।

লেখক রোকসানা সুখী দাম্পত্য সম্পর্কের গল্প বলেছেন। তাঁর ‘সেঁজুতির একটি দিন গল্পে’ দেখা যায় স্ত্রী সেঁজুতি বিয়ে বার্ষিকীতে তার স্বামী অনিমেষের সাথে কাটানোর জন্য অনেক কষ্ট করে অফিস থেকে ছুটি নেয়। কিন্তু বার্ষিকীর দিন সকালে যখন স্বামী অনিমেষ ঘুম থেকে উঠতেই চায় না, তখন সেঁজুতি অনেক অভিমানে একা একাই শহরে ইতিউতি ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু শেষে অনিমেষ তাকে খুঁজে বের করে বার্ষিকীর শুভকামনা জানিয়ে বলে, ‘তুমি ভেবেছো আমি ভুলে গেছি, তাই না? আমি কতদিন ধরে অপেক্ষা করছি তোমাকে চমকে দেবার জন্য এটা কি জান?’ একটা সময় ছিল যখন নাগরিক জীবনের এত হিসেবে নিকেশ ছিল না। সেই সময়ে স্বামী-স্ত্রীর বাঁধন হতো জন্ম জন্মান্তরের। তেমনি ভালোবাসার গল্প ‘একাকী বাসর’। এটি এক দম্পতির স্বর্গীয় ভালবাসার গল্প। বৃদ্ধা জোহুরা বেগমের সেই চৌদ্দ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে। সারাটা জীবন তিনি কাটিয়েছেন স্বামীর জন্য পরম মমতা আর ভালোবাসা নিয়ে। এমনকি স্বামীর মৃত্যুর পরও স্বামীর প্রিয় বকুল ফুলের মালার স্মৃতি বুকে ধরে এবং স্বামীর ভালবাসায় স্মৃতি নিয়েই তিনি ঘুমোতে যান। জহুরা বেগমের এই ভালবাসা তার নাতনী শমীর জন্যও এক বিস্ময়। তাই শমী তার বন্ধুদের বলে, ‘আমার দাদাভাই দাদুর মতো এমন চমৎকার জুটি খুব কমই দেখেছি।’

নারী সামাজিক নিয়মেই পিতার গৃহ ছেড়ে নতুন সংসারের স্বপ্ন নিয়ে শশুরবাড়িতে পা রাখে কিন্তু সেই স্বপ্ন অনেক নারীর জীবনে ধূসর হয়ে যায় শশুরবাড়ির অনাদরে। রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তী গল্পে বাবার আদরের মেয়ে হৈমন্তী শশুড়বাড়ির আত্মীয় স্বজনের নির্মমতায় প্রাণ দিয়েছিল। এই চিত্রটি নারীর এই ক্ষমতায়ণের যুগেও কোথাও কোথাও অপরিবর্তিত রয়েছে। হৈমন্তীর প্রয়াণে স্বামী অপু বলেছিল, ‘শুনিতেছি মা পাত্রী সন্ধান করিতেছেন। হয়তো একদিন মার অনুরোধ অগ্রাহ্য করিতে পারিব না, ইহাও সম্ভব হইতে পারে।’ এমনি এক গল্প ‘রুপালি চাঁদের আলোয়’। গল্পের নায়িকা প্রিয়া সন্তান না হওয়ার জন্য শশুরবাড়ির অনেক গঞ্জনা সহ্য করে যায়। স্বামী তাপসও বোন আর মায়ের মন্ত্রণায় আরেকটি বিয়ে করার জন্য স্বপ্ন দেখতে থাকে। তাপসের মধ্যে যেন লুকিয়ে আছে হৈমন্তীর স্বামী অপু চরিত্রটি। পাশাপাশি বইটির আরেকটি গল্পে বিপরীত ছবিও আছে। অনেক শশুর-শাশুড়ী এখন শিক্ষিত, মার্জিত এবং সমাজ পরিবর্তনের পক্ষে। কাজেই অনেক নারীর ভাগ্যে শশুরবাড়ির ভালোবাসা জুটে যায়। ‘আমাদের গল্প’ গল্পটিতে দেখা যায় মিলির আমেরিকাবাসী ভাইয়ের স্ত্রীকে পুরো পরিবার বুক দিয়ে আগলে রেখেছে। স্বামীহীন ঘরে দিন কাটাতে কাটাতে মিলির ভাবি একসময় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে গেলে, শশুড়বাড়ির আত্মীয়রাই পরম মমতায় এগিয়ে আসে। একইভাবে ‘ফেরা’ গল্পে শোয়েবের মা অপরিসীম মমতায় বাবা-মা ছেড়ে আসা পুত্র বঁধু ইরাকে ভালোবেসেছেন। লেখকের ভাষায়, ‘ইরার শোয়েবদের পরিবারে মানিয়ে নিতে খুব একটা কষ্ট হয়নি।… আর শোয়েবের মা ওকে দেখেন মেয়ের মতো।’

নারী সবসময় পরিবারের কথা ভাবে। সবার শান্তির কথা ভেবে নিজের ইচ্ছার বিসর্জন দেয়। রোকসানার নায়িকারা এর ব্যতিক্রম নয়। এমনি একজন জয়া। শিক্ষিতা, আধুনিকা এবং স্বনির্ভর। পড়াশুনা শেষ করে কর্পোরেট অফিসে উচ্চ বেতনে চাকরি করা জয়া অফিসের কলিগকে খুব অকপটে বলে ফেলে অন্য ধর্মের ছেলে সঞ্জয়ের সাথে তার প্রণয়ের ইতিহাস। অনায়াসে খুব দৃঢ়ভাবেই বলে বাবা-মা রাজী না হলেও সঞ্জয়কেই সে বিয়ে করবে। কিন্তু গল্পের সমাপ্তিতে দেখা যায় অন্য ধর্মালম্বী বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে সঞ্জয়কে তার নিজ পরিবার থেকে আলাদা করার মত স্বার্থপর হতে পারেনা জয়া। বরং সে সঞ্জয়কেই ছেড়ে এসে ভালবাসার কবর রচনা করে। জয়ার ভাষায়, ‘পরে আর চাইনি ওকে ওর সমাজ সংসার থেকে আলাদা করতে।’ এমনকি বাবা-মায়ের পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করে, শুধু শশুর বাড়ির পছন্দের কারণে চাকরি ছেড়ে পুরা গৃহিনী বনে যায়। পরবর্তীকালে দুর্ঘটনায় পা হারানো স্বামীকে নিয়ে চেষ্টা করে সঞ্জয়কে ভুলে যেতে। ‘শুভনীলা’ গল্পটিতেও দেখা যায়, নীলা শুভকে অনেক পছন্দ করলেও শুভর প্রেম প্রস্তাবে সাড়া দিতে পারে না শুধু বাবা মায়ের কথা ভেবে।

রোকসানা একজন সমাজ সচেতন লেখক। আজকের শিশু আগামীর নাগরিক। কাজেই শিশুর সঠিক বিকাশের জন্য বাবা-মায়ের স্নেহ একসঙ্গে প্রয়োজন হয় এবং বাবা-মায়ের মাঝে বিবাদ শিশুর মানসিক বিকাশে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সবকিছু সঠিক নিয়মে চলে না। তাই বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের বিচ্ছেদ অনেক কারণেই ঘটে থাকে। লেখকের ভাষায়, ‘আমি জানি একজন মায়ের কাছে তার বাচ্চা কতটা আকাঙ্ক্ষিত থাকে। … এই পরীর মতো মেয়েটাকে কাছে পাবার আশায় তিনি ঐ মরণপথ থেকে ফিরে এসেছেন’। মা-সন্তানের বন্ধনের বিষয়টি খুব চমৎকারভাবে লেখক তাঁর ‘পুতুল মেয়ে’ এবং ‘ধরায় নামে স্বর্গ’ গল্পে লিখেছেন; যেখানে দেখা যায় পুতুল মেয়ে ইলা আর বাচ্চা ছেলে জনি কেবল তখনই স্বাভাবিক আচরণ করে যখন তাদের বাবা-মা তাদের ভালোবাসাপূর্ণ গৃহ দিতে পারেন। বাবা-মায়ের সাথে হাসি মুখে শিশুর বাড়ি ফেরা দেখে লেখক লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে এর চেয়ে সুন্দর আর কোনো দৃশ্য হতে পারে না।’

নারী দেবী রূপের প্রতিভ‚। আর তাই নারী দশভুজা হয়েও কখনও ক্ষমাশীল, আবার কখনও নয়। নারী খুব সততার সাথে মেনে নেয়, মানিয়েও নেয়। নারীর এই শ্বাশত রূপ পাওয়া যায় রোকসানার গল্পের কিছু চরিত্রে। ‘রূপালি চাঁদের আলোয়’ গল্পের নায়ক তাপস স্ত্রীর সন্তান হবে না ভেবে নতুন বিয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। অথচ যখন ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা যায় যে তাপসের অক্ষমতার কারণেই সে কখনো বাবা হতে পারবে না, তখন তাপস ধরেই নেয় স্ত্রী প্রিয়া এই অক্ষমতার জন্য তাকে ছেড়ে চলে যাবে। কিন্তু নারী মমতাময়ী, ক্ষমাশীল। পরম মমতায় প্রিয়া তখন তাপসকে বলে, ‘আমি একা কখনো সুখী হওয়ার কথা চিন্তা করিনি। তোমাকে নিয়েই সুখী হতে চাই। নাইবা থাকলো আমাদের কোনো বাচ্চা।’ আবার ‘যে সময় ফিরে আসে না’ গল্পে পাঠক অন্য এক মিশাকে দেখতে পারবেন। মিশা তার ডিভোর্স দেয়া স্বামী রবিনকে ক্ষমা করে না। বিয়ের পর রবিন শুধুমাত্র নিজের আত্মীয়স্বজনের কথার মিশাকে অবিশ্বাস করে ডিভোর্স দেয়। কিন্তু পরে ভুল বুঝতে পেরে মিশা তাকে আবারও গ্রহণ করবে ভেবে যখন ফিরে আসতে চায়, তখন মিশা হাসিমুখে বলে, ‘না, আপনাকে আর সুযোগ আমি দিতে পারি না। …মুখোশের আড়ালের যে মানুষদের আমি দেখেছি তাদের চেহারা কি আমি ভুলতে পারবো?’

রোকসানা সমাজ ও সংসারের গল্প লিখেছেন। ‘গল্পগুলো মনের তাকে ছিল’ গ্রন্থের ১৫টি গল্পের বেশির ভাগ কেন্দ্র্রীয় চরিত্র নারী হওয়ার কারণে বইটিতে নারী মনের বিন্যাস, অনুভ‚তি ও নারী ভাবনার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। এই চরিত্রগুলি আমাদের চারিপাশের শান্তিপ্রিয় নারী চরিত্র যারা পরিবারের সবাইকে শান্তি দিতে চায়।

লেখক রোকসানা পারভীন শিমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বর্ধন ও পারিবারিক শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে বিএসসি এবং প্রথম শ্রেণিতে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং বর্তমানে টরন্টোর ডারহাম এলাকায় আর্লি চাইল্ডহুড এডুকেটর হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর ‘পুতুল মেয়ে’ আর ‘ধরায় নামে স্বর্গ’ গল্পদুটি কানাডার প্রেক্ষাপটে লেখা যেখানে তাঁর পেশাগত জ্ঞানের প্রকাশ ঘটেছে। একজন দক্ষ পেশাদার শিশু প্রশিক্ষকের মতোই তিনি শিশুদের মনস্তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ করেছেন।

বইটি প্রকাশ করেছে নৃ প্রকাশন। বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন মুহতাসিন আহমেদ। প্রচ্ছদে একটি পার্কের নিঃসঙ্গ বেঞ্চ, সামনে নীল জলরাশি, ওপারে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসা শহরের ছায়া। বেঞ্চের পেছনে পত্রহীন বৃক্ষের ডালে একটি লাল এবং একটি হলুদ রঙের বৃত্ত। প্রচ্ছদ দেখে পাঠক বিদেশি পটভ‚মির নিঃসঙ্গ জীবনের গল্প শুনতে চাইবেন। লাল রং আনন্দ, ভালোবাসা, আবেগ আর ক্রোধের প্রতীক। আর হলুদ রং সুখ, আশা আর সতস্ফুর্ততার প্রতীক। সেইদিক দিয়ে চিন্তা করলে এই দুই রঙের বৃত্ত খুবই অর্থবহ। পাঠকের মন পানি আর পার্কের বিদেশি কোন শহরে বাস করা মানুষের আনন্দ, ভালোবাসা, আবেগ, সুখ আর দুঃখের গল্প পড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবেন। সেই অর্থে প্রচ্ছদটি গল্প পড়ার একটা আবহ তৈরী করবে। প্রকাশক বইটির সামনের ফ্ল্যাপে যথার্থই লিখেছেন, ‘এক কথায় বইয়ের প্রতিটি গল্প মানুষের জীবনের প্রতিফলন, দর্পণ। এর সামনে দাঁড়ালে মানুষ তার প্রতিরূপ দেখতে পারবে।’ বইটি পড়ে পাঠকও প্রকাশকের সাথে একমত হবেন।

নতুন এই গ্রন্থটি প্রকাশ করার জন্য রোকসানা পারভীন শিমুলকে শুভেচ্ছা।

সামিনা চৌধুরী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর অধ্যাপনা পেশায় যুক্ত হন। সরকারি কলেজে অধ্যাপনাকালে বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে যুক্ত হন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশে-বিদেশে সামিনার মোট নয়টি পিয়ার রিভিউ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে কানাডায় অভিবাসী সামিনা পাঁচ বছর ধরে টিডি ব্যাংকে কাস্টমার কেয়ার বিভাগে কাজ করছেন।