Home কানাডা খবর লন্ডন হেলথ সায়েন্সেস সেন্টারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আদিবাসী নারীর

লন্ডন হেলথ সায়েন্সেস সেন্টারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আদিবাসী নারীর

অনলাইন ডেস্ক : অন্টারিওর সবচেয়ে বড় হাসপাতাল লন্ডন হেলথ সায়েন্সের সেন্টার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দায়ের করেছেন এক আদিবাসী নারী। হোলি জর্জি নামের ৪৪ বছর বয়স্ক ওই মহিলা অন্টারিও হিউম্যান রাইটস ট্রাইবুনালে দায়ের করা অভিযোগে বলেন, ২০২০ সালের নভেম্বরে চিকিৎসার প্রয়োজনে তিনি লন্ডন হেলথ সায়েন্সেস সেন্টারে ২ দিন ভর্তি ছিলেন। কিন্তু তার ওই দুই দিনের ভয়ানক ও অমানবিক অভিজ্ঞতা তিনি সারা জীবনেও ভুলতে পারবেন না। তিনি বলেন, এন্ডোসকপির রুটিন চেক আপের জন্য হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই তার সাথে বিরূপ আচরণ শুরু হয়। আর তা চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ২ দিন পর মধ্যরাতে তাকে অসহায় অবস্থায় হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার মাধ্যমে। তিনি বলেন, গভীর রাতে আমাকে যখন তারা বের করে দেয় তখন আমার কাছে কোন অর্থকড়িও ছিল না এবং সেখানে থাকার মতো কোন জায়গাও আমার ছিল না। এছাড়া চিকিৎসা চলাকালে তাকে নানান বিরূপ মন্তব্যও শুনতে হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্টাফদের আচরণে মনে হচ্ছিল আদিবাসী টু-স্পিরিট গোত্রের মহিলা হওয়াটা যেন আমার অপরাধ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে লন্ডন হেলথ সায়েন্সেস সেন্টার কর্তৃপক্ষ কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

হোলি জর্জি স¤প্রতি সিবিসি নিউজের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার এই অভিযোগ শুধু আমার একার নয়। অনেকের জীবনেই আছে এই লাঞ্চনার গল্প। আদিবাসী হিসেবে, টু-স্পিরিট হিসেবে-এমন কি নারী হিসেবে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত আমাদের শারিরীক ও মানসিকভাবে লাঞ্চিত ও অপমানিত হতে হয়। আমি এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। তাই অনেকের মতো নিরবে অপমান সহ্য না করে বিষয়টি নিয়ে ট্রাইবুনালে অভিযোগ দায়ের করেছি।

তিনি আরো বলেন, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জেন্ডার-এসব নিয়ে কেন মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করা হবে? এই ধরনের মানসিকতার অবসান হওয়া উচিত। সারনিয়া এলাকার বাসিন্দা জর্জি বর্তমানে তার পাট্র্নারকে নিয়ে কিচেনার ওয়াটারলুতে বসবাস করছেন। তিনি হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের সমালোচনা করে বলেন, তারা প্রথম থেকেই আমাকে ‘ভুয়া রোগি’ মনে করা শুরু করে। তারা ভাবছিল আমি হয়তো ‘মাদকাশক্ত’ নয়তো ‘ভবঘুরে’। কিছুদিন হাসপাতালে থেকে ‘ফাউ’ সেবা নিতে এসেছি। এ ধরনের মনোভাব একজন রোগীর জন্য কতটা ভয়াবহ তা তারা চিন্তাও করেনি। হাসপাতাল থেকে তাকে যেভাবে বের করে দেয়া হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জর্জি বলেন, রাত একটায় আমাকে বলা হল-তোমার চিকিৎসা শেষ, তুমি এবার বাড়ি যেতে পার। আমার বাসা হাসপাতাল থেকে প্রায় ১ ঘন্টার পথ। এতরাতে বাসা থেকে কেউ নিতে আসতে পারবে না বলা সত্বেও তারা আমাকে ডিসটার্জ করে দেয়। আমি সকাল পর্যন্ত থাকতে চাওয়ার অনুরোধ করলে একজন স্টাফ জানান ‘ছাড়পত্র দেয়ার পর কারও এখানে থাকার নিয়ম নেই।’ তিনি বলেন, এভাবে শীতের রাতে একজন রোগিকে রাস্তায় বের করে দেয়াটা কোন ধরনের নিয়ম তা আমার মাথায় আসে না। তিনি এ ধরনের অমানবিক নিয়মের অবসানের দাবি করেন। সূত্র : সিবিসি

Exit mobile version