বকুল ভৌমিক

পরিবর্তনের তাপ দহনে পৃথিবী,
গ্রহাণু, উল্কা, ধূমকেতু ধ্বংসে মাতে বারংবার
গড়ে তুলেছে নিজেকে জীব বৈচিত্র্যে আবার,
অদৃষ্ট তবুও প্রকৃতিতে প্রভাব মানব সভ্যতার।

উন্নত সমাজ কৃত্রিম সাজানো শহর বন্দর
প্রাচীর, দালান কোঠা, অট্টালিকা সারি সাড়ম্বর।
কল কারখানা যানবাহন, ভোগবাদী সমাজ প্রযুক্তির ঝাঁট হাতে,
অর্থনৈতিক উন্নয়নের দোহাইয়ে নির্দ্বিধায় প্রকৃতি ধ্বংস জগ্মে মেতে।

অবক্ষয়ের ক্যাকটাসগুলো শুষ্ক বালুচরে বঞ্চনার মরুভ‚মি জুড়ে
বনের পীড়িত হরিণ খোঁজে উন্নয়নের ছত্রাক আহারে,
বনের পর বন সভ্যতার দাবানলে পুড়ে
বহু সবুজ গাছপালা, জীবের প্রাণ নিয়েছে কেড়ে।
বিষাক্ত ধোঁয়ায় দুপুরের রূপালী সূর্য লাঞ্ছনায় নিয়েছে কদাকার পীত সাজ,
অসহায় শিশুর বেঁচে থাকার বুকের অক্সিজেনটুকু সেও যেন
বাতাসে মিলে না আজ।

ভোগবাদী সমাজ কি শুধায়,
যখন নীরব অভিমানে :
পাহাড় আর সাদা মেঘ জড়িয়ে ধরে না পরস্পরে,
সুমেরু, কুমেরু বা হিমালয়েরও রূপালী বরফ মিলিয়ে যায় দ্ঃুখ ভারে।
সমুদ্র, নদী ডুবিয়ে দেয় এ স্বর্গ ভ‚মি চোখের জলে,
শান্ত বায়ু হয়ে উঠে প্রলয়ংকারী,
উত্তাল ঘুর্ণনে গুঁড়িয়ে দেয় বসতবাড়ি গাছপালা তীব্র রোষানলে।

ভোগবাদী সমাজ কি সুধায়,
যখন নীরব অভিমানে :
গন্ধরাজ, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকারা মাথা উঁচু করে দুলে না সৌরভে বায়ু সুবাসে,
পুকুর ডোবায় পদ্ম, শাপলা, স্বর্ণকুমুদেরা নাহি ভাসে চিত্ত উল্লাসে,
গোধূলি লগ্নে বনের পাখিরা ঝাঁকে নাহি ফিরে আবাসে।

শ্রেষ্ঠ এ মানব সমাজ, হায়রে সভ্যতা
আকাশে বাতাসে বিষাক্ততা
বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা উর্ধ্বগতি
সভ্যতার গ্রাসে আজ জলবায়ুর দুর্গতি।

হে অপরুপা, সরল পৃথিবী
কত যে মহিমা তোমার মানবেরে দিলে ঠাঁই,
স্বার্থপর ভোগবাদী মানব নাহি তা বুঝিতে পায়।
অটোয়া