বিনোদন ডেস্ক : গুণী অভিনেতা সাদেক বাচ্চু গুরুতর অসুস্থ। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান। তিনি জানান, গত রোববার রাতে প্রবীণ এ অভিনেতাকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জানা গেছে, সন্ধ্যা থেকেই অস্বস্তি লাগছিল তাঁর। পরে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। পরে রাতে সাড়ে ১১টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে, অক্সিজেনের সাহায্য শ্বাস–প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল জানার পর মূল চিকিৎসা শুরু হবে।

গুণী অভিনয়শিল্পী সাদেক বাচ্চু বেশ কিছুদিন ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত। পাঁচ দশকের লম্বা ক্যারিয়ারে মঞ্চে, বেতারে, টিভিতে, সিনেমায়, সর্বত্র দাপুটে বিচরণ ছিল তাঁর। নব্বই দশকে এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবিতে অভিনয়ের পর জনপ্রিয়তা পান খলনায়ক হিসেবে। এই পরিচয়েই দেশজুড়ে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সাদেক বাচ্চুর। অবশ্য রেডিও, টেলিভিশনে যাওয়ার আগে মঞ্চে ওঠেন সাদেক বাচ্চু। শিশুকাল থেকে মঞ্চের সঙ্গে তাঁর বন্ধন। মতিঝিল থিয়েটার তাঁর নাট্যদল। দলের সভাপতি তিনি। এখনো নাটক রচনা করেন, নির্দেশনা দেন। গত বইমেলায়ও মুক্তমঞ্চে নাটক মঞ্চস্থ করেছেন।

মহিলা সমিতিতে এক নাটকে তাঁর অভিনয় দেখেন টিভি প্রযোজক আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। তিনি সাদেক বাচ্চুকে নিয়ে যান বিটিভিতে। তিনি অভিনয় করেন ‘প্রথম অঙ্গীকার’ নাটকে। চুয়াত্তর সালের ঘটনা এটি। তাঁর অভিনীত নাটকের সংখ্যা হাজারের ওপর। প্রথম অভিনীত ছবি শহীদুল আমিন পরিচালিত ‘রামের সুমতি’।

চাঁদপুরের সন্তান সাদেক বাচ্চু (প্রকৃত নাম মাহবুব আহমেদ) ১ জানুয়ারি ১৯৫৫ সালে চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কর্মজীবনে বাংলাদেশ ডাক বিভাগে চাকরি করতেন। ১৯৭০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে চাকরিতে ঢোকেন। তাঁর বাবা ছিলেন ডাকঘরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তাঁর মৃত্যুর পর সাদেক বাচ্চুকে চাকরি দেওয়া হয়। পাঁচ বোন, তিন ভাই, বিধবা দাদি, বিধবা মাকে নিয়ে ছিল তাঁর বিশাল সংসার। সেই সংসারের দায়িত্ব তাঁকে বহন করতে হয়। ২০১৩ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন।

বহুমাত্রিক এই অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবন নদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখি’ ইত্যাদি।