এক মুষ্ঠি শব্দ

এক
ভাষাজ্ঞান নেই
দক্ষতা নেই গণিতে
অর্থনীতিতে ছিলাম,
নেই অর্থ ঝুলিতে।
পদার্থবিজ্ঞান পড়েও
রয়ে গেছি অপদার্থ।
রসায়নে ঝোক ছিল
ভেবেছিলাম রসের আধার –
রসহীন পড়ে আছি-
শূন্য ভাঁড়ার।

দুই
আকাশ তুমি মেঘলা থেকো না
মাছেরা খেলা করুক নির্বিগ্নে
মৎসশিকারী ফিরে যাক
শূন্য বাকেট নিয়ে।

তিন
যখন তুমি একা
যখন তুমি জানালায়
দেখছ; আকাশ, উড়ে যাওয়া মেঘমালা
অন্য বাড়ির ছাদ
তখন তোমার কাছে আসা
ছায়াময় মূর্তির প্রথম উচ্চারণ
‘দূপুর বেলায় চাঁদের আলো’
জানালার সঙ্গী পর্দা
তখন ঢেকে ফেলে
মরচে ধরা লোহার শিকগুলোকে
আর তুমি ফিরে যাও
নির্জন নির্জিব বিছানায়।

চার
একটা মেয়ে আমার হাতে হাত রেখে
সজল চোখে আমার দিকে তাকিয়েছিল
আর তাতেই আমি উঠে গেছি
এভারেষ্টের চূড়ায় –

আর একটা মেয়ে
চুমু দিয়ে – যেতে যেতে বলে গেছে
কি অল্পতেই- না, আমি খুশি
আর তাতেই – আমি চলে গেছি
অতলান্তিকের ঢেউএর ডগায় –
যাকেই ভালবেসে ধরেছি হাত –
সেই সরে গেছে দূরে –
এখন আমি জাবর কাটি
গোয়ারা থেকে একটু দূরে।

পাঁচ
বন্ধুরা ঝরে যাচ্ছে
শীতের পাতা ঝরার মতো
আজ ঝরে গেল “জয়”
কয়েক বছর আগে
কাজল রাজা মিঠু শোভন তপন
কচি সবুজ থেকে প্রগাঢ় সবুজ –
হলুদের আগেই ওরা ঝরে গেল
যেভাবে পাতা ঝরে যায় –
ঠিক ওভাবে নয় –
মানুষের ঝরে যাওয়ার
বড় বিচিত্র, স্বতন্ত্র নিয়ম।

ছয়
চলে যাব দূরে
কোন আলোকপুঞ্চে নয়- ঘোর অন্ধকারে
প্রায়- নক্ষত্রের কাছে –
যেভাবে গিয়েছেন জীবনান্দ –
ভাঁড়ার শূন্য করে –
সেভাবে নয় –
আমার তো ভাঁড়ারই নেই –
তাই শূন্য আর পূর্ণ অবান্তর –
চলে যাব বড় নিরবে নিভৃতে
বড়জোর জানতে পারে
রাতের কাক-পক্ষী, ঘাসের জলকনা
আর আকাশের মেঘমালা।

সাত
মেয়েটির হাতে
কাকতালীয়ভাবে আমার হাতের স্পর্শ
মেয়েটি বললো –
সাপের মত ঠান্ঠা হাত
প্রশ্ন করতে পারিনি
সে কি সাপের স্পর্শ পেয়েছিল কিনা
মেয়েটি দরজা খুলে চলে গেছে দূরে

মেয়েটি বললো –
বাহ! চারিদিকে কি আলোর ছড়াছড়ি
প্রশ্ন করতে পারিনি
সে কি অন্ধকার দেখেছে কিনা
আর তার আগেই
মেয়েটি আলোর রাজ্যে চলে গেল

মেয়েটি বললো-
কি সবুজ কি দারুন –
প্রশ্ন করতে পারিনি
সবুজের আগে বা পরে
মেয়েটি হলুদ দেখেছে কিনা
আর এরই মধ্যে মেয়েটি
সবুজ দিগন্তে হারিয়ে গেল
আর আমি
হলুদ নদীর পাড়ে হেঁটে চলেছি নিরন্তর

আট
ভালবাসা উড়ে গেছে ষড়যন্ত্রে
হৃদয় সরে গেছে অন্যদের মন্ত্রে