সামিনা চৌধুরী : সাহিত্যিক আনন্দের পাশাপাশি নতুন কোনো স্থানের ভৌগোলিক বিবরণ, ইতিহাস, স্থানটির সামাজিক রীতিনীতি, মানুষের জীবনযাত্রা ও আরও অনেক তথ্য জানার সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমে ভ্রমণ সাহিত্য ধীরে ধীরে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯০ সালে মা সারদাকে প্রণাম করে তাঁর ভ্রমণ শুরু করেন। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদিগকে ভ্রমণ করিতেই হইবে, আমাদিগকে বিদেশ যাইতেই হইবে … যদি আমাদিগকে যথার্থই পুনরায় একটি জাতিরূপে গঠিত হইতে হয়, তবে অপর জাতির চিন্তার সহিত আমাদের অবাধ সংস্রব রাখিতেই হইবে।’ স্বামীজীর এই বাণীর মর্মকথায় আছে ভ্রমণের অনুপ্রেরণা ও আব্যশিকতা। একারণেই ভ্রমণকে অগ্রগতির প্রথম ধাপ বলা যেতে পারে। ভ্রমণ-বিবরণ পাঠ করে একটি স্থান সম্পর্কে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি অনুভব করা যায়। সেই স্থানের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, নৃতাত্তি¡ক বিবর্তন ও বিশ্লেষণ, ধর্ম, পৌরাণিক উপাখ্যান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সুলিখিত ভ্রমণ সাহিত্য পাঠকের মনে ভ্রমণের আকাঙ্খা জাগিয়ে তোলে এবং একটি গাইডের কাজ করে। তেমনি একটি চমৎকার ভ্রমণ গাইড স্বপন বিশ্বাসের ‘কুড়াই পথের নুড়ি’। গত দুই দশক ধরে দেশে বিদেশে ভ্রমণ করে লেখক এই বইটিতে ১৬টি স্থানের ভ্রমণবৃত্তান্ত খুব সাবলীল ও সরল ভাষায় লিখেছেন।

ভ্রমণ সাহিত্যের ইতিহাস প্রায় ২৫০০ বছরের পুরানো। খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ শতকে গ্রীক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাস মিশর, পারস্য এবং অন্যান্য স্থান ভ্রমণ শেষে তাঁর পর্যবেক্ষণগুলি নথিভুক্ত করেছিলেন। পরবর্তীকালে দ্বিতীয় শতাব্দীর গ্রিক ভ‚গোলবিদ পসানিয়াস ‘ডেসক্রিপশন অফ গ্রিস’ গ্রন্থে তাঁর ভ্রমণবিষয়ক স্মৃতিকথা লিপিবদ্ধ করেন। প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস থেকে জানা যায় ফা-হিয়েন, হিউয়েন সাং, মার্কো পোলো, ইবনে বতুতা প্রমুখ তাঁদের ভ্রমণ যাত্রা লিপিবদ্ধ করেছেন। মধ্যযুগের বাংলা ভ্রমণ সাহিত্য হিসেবে নরহরি চক্রবর্তীর নবদ্বীপ পরিক্রমা, ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্য প্রভৃতি উল্লেখ করা যায়। ১৫০০ শতকে শ্রীচৈতন্যদেবের ভ্রমণ যাত্রাকে কেন্দ্র করেই চৈতন্য-পরবর্তী সময়ে বাংলা ভ্রমণ সাহিত্যের যাত্রা শুরু হলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভ্রমণ-বৃত্তান্তকে একটি ভিন্ন সাহিত্যধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর ‘জাভা-যাত্রীর পত্র’, ‘য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র’, ‘রাশিয়ার চিঠি’, ‘পথের সঞ্চয়’, ‘জাপান-যাত্রী, ‘পশ্চিম যাত্রীর ডাইয়ারি’ প্রভৃতি পাঠক সমাদৃত গ্রন্থ। পরবর্তীকালে সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ একটি সার্থক এবং জনপ্রিয় ভ্রমণ সাহিত্যে হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ সহ অনেক ভ্রমণ সাহিত্য লেখা হয়েছে এবং পাঠক কতৃক আদৃত হয়েছে।

‘কুড়াই পথের নুড়ি’ বইটিতে মোট মোট ১৬ টি স্থানের ভ্রমণ বৃত্তান্ত লেখা হয়েছে। বইটির ভ‚মিকায় লেখক জানিয়েছেন, ‘তাই, ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে ‘কী দেখেছি কী দেখিনি’ নয়, লিখেছি মানুষের বিচিত্র সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বিশেষ কোনো ঘটনার বিবরণ।’ কাজেই বলা যায় বইটিতে ১৬টি স্থানের ১৬টি সত্য গল্প আছে যেগুলো কখনও ঐতিহাসিক, কখনও পৌরাণিক, কখনও নৃতাত্তি¡ক, কখনও সামাজিক আবার কখনও বা ধর্মীয়।

লেখার বিষয়গুলো খুব বৈচিত্র্যময়। গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনী গ্রাম এবং অজন্তা গুহা চিত্রের প্রত্নতাত্তি¡ক অনুসন্ধান, বালি দ্বীপের অধিবাসীদের এবং নেপালের নেওয়ারি স¤প্রদায়ের ধর্মীয় রীতিনীতি, চিচেন ইটজা এবং অজন্তা গুহার পৌরাণিক গল্প ও বিশ্বাস, আর্জেন্টিনা, কিউবা, চিলি এবং মেক্সিকোর সামরিক শোষণ ও বিপ্লবের ইতিহাস, মরিশাস দ্বীপের অধিবাসীদের পুর্বপুরুষের ইতিহাস, বিশ্বের অন্যতম সুখী রাষ্ট্র ভুটানের সামাজিক বিবরণ, তাসখন্দ ও হ্যান্স ক্রিস্টিয়ান এন্ডারসনের গ্রাম অডেন্সের জাদুঘরের বিবরণ, বর্তমান রোমে অবৈধ শ্রমিকদের টিকে থাকার সংগ্রামের গল্পসহ আরো অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

অন্নদাশংকর রায় তাঁর ‘পথে প্রবাসে’ গ্রন্থে লিখেছিলেন, ‘সকলে সব জিনিস দেখে না। সকলের চোখে সব জিনিস পড়ে না। বিশেষ এক জনের চোখে বিশেষ বিশেষ একটা দৃশ্য ঘোমটা খুলে মুখ দেখায়। সেইজন্য একই জিনিস একশোজন দেখে থাকলেও একের দেখা অপরের দেখা নয়।’ কাজেই একই স্থানের ভ্রমণ বৃত্তান্ত ভিন্ন ভিন্ন লেখকের লেখায় কোন প্রকার তথ্য বিভ্রাট বা ইতিহাস বিকৃতি ছাড়াই ভিন্নতা পেয়ে থাকে। স্বপন বিশ্বাস খুব দক্ষতার সাথে একটি মাত্র গ্রন্থে অনেকগুলো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছেন এবং পাঠককে প্রসঙ্গ থেকে প্রসঙ্গান্তরে নিয়ে যেতে পেরেছেন।

১৩শ শতকে বাংলা ভ্রমণ বৃত্তান্ত পদ্যে এবং ছন্দে লিখা হতো। শ্রীচৈতন্যদেবের ভ্রমণ বৃত্তান্ত গদ্যকারে লেখা হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভ্রমণের বৃত্তান্ত গদ্যকারে তো বটেই পত্রাকারেও লিখেছেন। সৈয়দ মুজতবা আলি ‘দেশে বিদেশে’ লিখেছেন গদ্যরীতিতে। আবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ লিখেছেন আত্মজীবনীর মত করে। কাজেই এটা ধরে নেয়া যায় যে, ভ্রমণের কথকতা সাহিত্যের যে কোন ধরনেই লেখা যেতে পারে। স্বপন বিশ্বাস লিখেছেন কিছুটা ছোট গল্পের মত করে। বইটির ভ‚মিকায় তিনি নিজেই লিখেছেন, ‘কুড়াই পথের নুড়ি বইয়ের গল্পসমূহ পাঠকের কিঞ্চিৎ আনুক‚ল্য পেলে তা হবে আমার জন্য খুবই উৎসাহব্যঞ্জক।’ রবীন্দ্রনাথ ‘সোনার তরী’তে ছোটগল্পের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, ‘ছোট প্রাণ, ছোট ব্যথা, /ছোট ছোট দুঃখ কথা/ নিতান্তই সহজ সরল।’ সেই বিবেচনায় পাঠক বইটিতে ছোটগল্পের স্বাদ পাবেন। মনে হবে যেন ১৬টি সহজ, তথ্যসমৃদ্ধ ছোটগল্প । রবীন্দ্রনাথ ‘সোনার তরী’তে আরও বলেছিলেন, ‘অন্তরে অতৃপ্তি র’বে/ সাঙ্গ করি মনে হবে/ শেষ হয়ে হইল না শেষ।’ প্রতিটি গল্পের শেষে পাঠকের এই ‘শেষ হইয়াও হইলো না শেষ’ অনুভ‚তিটিও হবে, যদিও এগুলো ছোটগল্প নয়, নেই পাত্র-পাত্রী বা কোনো কাল্পনিক ঘটনার বিবরণ।
সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর ‘দেশে বিদেশে’-এর লেখনীতে অগাধ পান্ডিত্যের পাশাপাশি সূ² রসবোধ পাওয়া যায়। ‘দেশে বিদেশে’র পাঠকেরা মনের টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে পান, ‘কাবুলের পথে বিশাল বপু পাঠান আবদুর রহমানের পিছু পিছু ক্ষীণ বপু বাঙালি লেখক হেঁটে যাচ্ছেন’। স্বপন বিশ্বাসের লেখায়ও সূ² রসবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। লা বকা বেড়াতে গিয়ে যখন তরুণী ভ্রমণ গাইড লেখককে ট্যাঙ্গো নাচ করতে চান কী-না জিজ্ঞাসা করে, স্বপন বিশ্বাস উত্তরে বলেন, ‘দ্যাখো জীবনে কখনো নেচে অভ্যেস নেই (অবশ্য নাচাতেও অভ্যস্ত নই)’। বইটির অসাধারণ তথ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি এই রসবোধ পাঠককের আনন্দকে বাড়িয়ে দেবে।

বইটির সামনের ফ্ল্যাপে বলা হয়েছে, ‘সচরাচর ভ্রমণসংক্রান্ত লেখায় স্থান-কাল-পাত্রের বর্ণনা প্রাধান্য পায়। তিনি কেবল বর্ণনাকে প্রাধান্য না দিয়ে কোনো একটি বিষয়বস্তুর উপর ফোকাস করেছেন; করেছেন অনুসন্ধান।’ কাজেই স্পষ্টতই লেখককে তথ্যানুসন্ধানের জন্য প্রচুর পড়ে বইটি লিখতে হয়েছে। অনেক গবেষণা করতে হয়েছে।

যদিও কোন কোন সমালোচক মনে করেন সৃজনশীল লেখায় সবসময় তথ্যসূত্র দেবার প্রয়োজন নেই, কিন্তু দেখা যায় সুনীল তার কালজয়ী উপন্যাস ‘পূর্ব পশ্চিম’ এ তথ্যসূত্র দিলেও ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ বইয়ের তথ্যসূত্র দেননি। । হুমায়ূন আহমেদ তাঁর ‘বাদশাহ নামদার’ বইয়ের ভ‚মিকায় লিখেছেন, ‘উপন্যাসটি লেখার সময় প্রচুর বইপত্র বাধ্য হয়ে পড়তে হয়েছে। একটি নির্ঘন্ট দিয়ে নিজেকে গবেষক-লেখক প্রমাণ করার কারণ দেখছি না বলেই নির্ঘন্ট যুক্ত হলো না।’ ‘কুড়াই পথের নুড়ি’ গ্রন্থের লেখক হয়তোবা সে কারণেই বইটিতে কোন তথ্য সূত্র দেননি। কিন্তু একটি তথ্যসূত্র থাকলে মনে হয় পাঠকের উপকার হতো। কারণ গ্রন্থটিতে উপস্থাপিত বিষয়গুলো লেখক খুব দক্ষতার সাথে সংক্ষেপে বর্ণনা করলেও কোনো কোনো বিষয়ে পড়ুয়া পাঠকের আরও বেশি জানতে ইচ্ছা হলে, তথ্যসূত্র থেকে একটি নির্দেশনা পাওয়া যেত।
‘ভেগা সেন্ট্রাল ও নেরুদার কবিতাপাঠ’, ‘লা বকা’, ‘মনোরমা তাসখন্দ’, ‘কিউবার আত্মা’, ‘অডেন্স, মেক্সিকো: নির্বাসিতেরে দেহ ঠাঁই’, ‘দ্যা লাভিং হেরিটেজ অফ ভিয়েতনাম’ পর্বগুলোর বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এসব দেশের ইতিহাস। ‘লুম্বিনী উদ্যান ও এক রাজপুত্রের জন্ম’, ‘চিচেন ইটজা’, ‘দ্যা ডায়িং প্রিন্সেস’ পর্বগুলোতে প্রাধান্য পেয়েছে প্রত্নতত্ব ও পৌরাণিক কাহিনি। ‘বালি নিয়ে যদি কিছু বলি’ আর ‘নেওয়ারি’ পর্বে উঠে এসেছে ধর্মীয় বিবর্তন। একটি গ্রন্থে এত বিশাল বিষয়বৈচিত্র্য নিঃসন্দেহে স্বপন বিশ্বাসের বিশাল জ্ঞানের পরিচায়ক। ইতিহাস, প্রত্নতত্ব প্রভৃতি বিষয়ে তাঁর বিশাল জ্ঞান প্রয়োগ করে প্রতিটা পর্ব নিয়ে আলাদা আলাদা গ্রন্থ লিখলেও পাঠকের অতৃপ্তি হতো না।
বইটির শেষ অংশে লেখকের ভিয়েতনাম এবং পূর্ব আফ্রিকার সিশেল দ্বীপপুঞ্জের ভ্রমণবৃত্তান্ত আছে। এই দুটো ভ্রমণ বৃত্তান্তের ভাষা ইংরেজি। কেন সেদুটি ইংরেজি ভাষায় লিখা হয়েছে, তার কোন ব্যাখ্যা বইটির কোথাও পাওয়া যায় না। যদিও কোনো বই একাধিক ভাষায় লিখা যাবে কি-না, এই বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনাও পাওয়া যায় না, তথাপি এই দুটি ভ্রমণ গল্প বাংলায় অনুবাদ করে দিলে পাঠকের পড়তে আরেকটু ভালো লাগতো।

বইটি প্রকাশ করেছে ‘ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ’। প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০২৩। বইটির প্রচ্ছদে বালি দ্বীপের নৃত্যের ছবি দেয়া হয়েছে। বইটিতে লেখক জানিয়েছেন, ‘বিশ্বমেলায় বালিনীজ স্থাপত্য, ভাস্কর্য, নাচ, কারু ও অন্যান্য কলা, একটি বিশিষ্ট আসন দখল করে আছে।’ হয়তোবা সেকারণেই প্রচ্ছদে এই ছবিটি এসেছে। বইটির পেছনের প্রচ্ছদে আছে অজন্তা গুহার ছবি এবং বইটির ভেতরে আরো অনেক ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে, যা খুব প্রাসঙ্গিক। লেখক স্বপন বিশ্বাস বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগ ও সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেছেন। ছাত্র বয়স থেকেই তিনি লেখালেখির সাথে যুক্ত এবং ছাত্রজীবনেই বিজ্ঞানভিত্তিক পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। তিনি বিজ্ঞান ও ভ্রমণ বিষয়ে লিখতে পছন্দ করেন। নিজের মৌলিক গ্রন্থের পাশাপাশি তাঁর রয়েছে বেশ কয়েকটি সম্পাদিত গ্রন্থ ও অনুবাদ গ্রন্থও।

মানুষ সেই আদিম যাযাবর জীবন থেকেই ভ্রমণপিয়াসী। নতুনের প্রতি আকর্ষণ, অজানাকে জয় করার রোমাঞ্চ নিয়ে মানুষ ঘর ছেড়ে বের হয়। নানা দেশ, জাতি, তাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি জানাই ভ্রমণকারীর উদ্দেশ্য থাকে। কখনও-বা আবার দুর্গম অরণ্য, পর্বত বা সমুদ্র জয়ের নেশায় মানুষ ভ্রমণ করেছে। জেনেছে অনেক অজানারে, জয় করেছে দুর্গমকে আর এভাবেই এগিয়ে নিয়ে গেছে সভ্যতাকে। তাঁদের সেই বিজয়গাঁথার পথ ধরেই ভ্রমণ সাহিত্যের পথ চলা। ভ্রমণ সাহিত্য বিশ্লেষণ করে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘… ভ্রমণবৃত্তান্তের একটা মস্ত সুবিধা এই যে, তার মধ্যে অবিশ্রাম গতি আছে অথচ প্লটের বন্ধন নেই – মনের একটি অবারিত স্বাধীনতা পাওয়া যায়।’ তেমনিভাবে বিষয়বৈচিত্র্য ও তথ্যবৈচিত্র্যের মুন্সিয়ানায় ‘কুড়াই পথের নুড়ি’ গ্রন্থটি পাঠকের জন্য একটু সুখপাঠ্য গ্রন্থ। আশা করবো তাঁর নতুন ভ্রমণগুলো থেকে পাঠকেরা আরও নতুন নতুন গ্রন্থ পাবেন।

নতুন এই গ্রন্থটির জন্য স্বপন বিশ্বাসকে অভিনন্দন জানাই।
সামিনা চৌধুরী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর অধ্যাপনা পেশায় যুক্ত হন। সরকারি কলেজে অধ্যাপনাকালে বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে যুক্ত হন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশে-বিদেশে সামিনার মোট নয়টি পিয়ার রিভিউ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে কানাডায় অভিবাসী সামিনা পাঁচ বছর ধরে টিডি ব্যাংকে কাস্টমার কেয়ার বিভাগে কাজ করছেন।