আরিফ হোসেন বনি : গত ২৬শে আগস্ট, শুক্রবার, এক বিশেষ সভায় অতি স¤প্রতি মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত বাংলাদেশে মুক্তিপ্রাপ্ত জনপ্রিয় নান্দনিক চলচ্চিত্র ‘হাওয়া’র উপর নিষেধাজ্ঞা এবং পরিচালকের প্রতি দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং চলচ্চিত্রপ্রমীদের সংগঠন টরন্টো ফিল্ম ফোরাম।

উল্লেখ্য, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠায় ‘হাওয়া’ সিনেমার প্রদর্শন নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে ২৯ জুলাই দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পাওয়া মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ সিনেমায় ট্রলারে থাকা একটি খাঁচায় শালিক পাখি বন্দী অবস্থায় দেখা যায়। এক পর্যায়ে সেটিকে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে। সিনেমার আরও কয়েকটি দৃশ্য রয়েছে যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত এ ধরনের অপরাধের ফলে সাধারণ মানুষ পাখি শিকার, খাঁচায় পোষা ও হত্যা করে খাওয়ায় উৎসাহিত হবে।

সভায় টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম বাবুল বলেন, ‘হাওয়া চলচ্চিত্রের প্রতি এই নিষেধাজ্ঞা এবং চলচ্চিত্রটির পরিচালকের উপর ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা এক দিকে যেমন হাস্যকর, ঠিক তেমনি শিল্প সংস্কৃতি বিরোধী। তিনি উল্লেখ করেন, চলচ্চিত্র একটি শিল্প মাধ্যম। এই শিল্প সৃষ্টিতে জীবনের নানা দিক উঠে আসে। একজন সৃষ্টিশীল চলচ্চিত্র নির্মাতা জীবন ঘনিষ্ঠ কাহিনী চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে আনতে পারেন। ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রে তেমনি একটি খাঁচা বন্দি শালিক দেখানোর প্রয়োজন পড়ে এবং বিশেষ সময়ে সেটি মেরে খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। সবকিছুই হয়েছে কাহিনীর প্রয়োজনে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, চলচ্চিত্রে সব কিছু এত বিশ্বাসযোগ্য করে তুলে ধরতে হয় যাতে, দর্শক মনে করেন পর্দায় ঘটনাটা সত্যি সত্যি ঘটেছে। কিন্তু বাস্তবে সেটা নাও ঘটতে পারে। এনায়েত করিম বাবুল বলেন, চলচ্চিত্রে কোন চরিত্রকে মেরে ফেলার প্রয়োজন পড়ে এবং মেরেও ফেলা হয়। কিন্তু বাস্তবে তিনি মৃত্যুবরণ করেন না। সেটা দর্শকও জানেন। ঠিক তেমনি, ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রে কোন শালিক মেরে ফেলা হয় নি এবং খাওয়াও হয়নি। সভাপতি আরও বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে যখন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, ঠিক তখনই এমন এক মামলা এবং নিষেধাজ্ঞা সৃষ্টিশীল নির্মাতাদের পথকে রুদ্ধ করে দিবে। এনায়েত করিম বাবুল, চলচ্চিত্রটির প্রতি নিষেধাজ্ঞা এবং চলচ্চিত্রটির পরিচালকের প্রতি মামলা অবিলম্বে তুলে নেবার দাবী জানান।

চলচ্চিত্রটির প্রতি এই নিষেধাজ্ঞা এবং পরিচালকের উপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার দাবী জানিয়ে আরও বক্তব্য রাখেন টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনিস রফিক, অর্থ সম্পাদক সাহিদুল আলম টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক জগলুল আজিম রানা, অফিস সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার প্রমুখ।