অনলাইন ডেস্ক : সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৮ জনের নামে একটি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আসামিদের বিরুদ্ধে সিআরআইয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার আশ্বাসে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতি সাধন, অর্থ আত্মসাৎ, কর ফাঁকি ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন। দুদকের সহকারী পরিচালক মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকায় মামলাটি দায়ের করবেন। মামলায় অন্যদের মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, এনবিআর সদস্য রওশন আরা আক্তার ও সিআরআইয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাব্বির বিন শামসকে আসামি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আয়কর আইনের ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিআরআইকে আয়কর মওকুফ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধিত না হয়েও এসআরও জারি করে কর-সুবিধা গ্রহণ ও প্রদান করেছে। এছাড়া অবৈধভাবে চাপ প্রয়োগ করে ২৩টি কোম্পানির কাছ থেকে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

২০১৩-১৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত সিআরআই মোট ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৬ টাকা অবৈধভাবে আয় করে। গ্রহণযোগ্য ব্যয় হিসেবে ২৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার ৯৬ টাকা বাদ দিলে সিআরআইয়ের হিসাবে থাকার কথা ছিল ৭০ কোটি ৮০ লাখ ৪২ হাজার ৩৯০ টাকা। কিন্তু বাস্তবে হিসাব অনুযায়ী স্থিতি পাওয়া গেছে ৫৫ কোটি ১১ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ টাকা। অর্থাৎ ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫২১ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

দুদক জানায়, সিআরআই এর ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ২৪৭ কোটি ৮৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭০ টাকা জমা এবং ১৯১ কোটি ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৩০৯ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৪৩৯ কোটি ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া আয়কর আইন লঙ্ঘন করে ৩৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৪২ টাকা আয়কর প্রদান না করার মাধ্যমে সরকারকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলা হয়েছে।