Home কলাম রবীন্দ্র অনুরাগে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো

রবীন্দ্র অনুরাগে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো

&NewLine;<&excl;-- Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<amp-auto-ads type&equals;"adsense" data-ad-client&equals;"ca-pub-8846063755563353"><&sol;amp-auto-ads>&NewLine;<&excl;-- End Google AdSense AMP snippet added by Site Kit -->&NewLine;<p><strong>সাজ্জাদ আলী &colon;<&sol;strong> ১৯২৪ সালের কথা&comma; কবিবর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দক্ষিণ আমেরিকান রাষ্ট্র পেরু চলেছেন জাহাজে চড়ে। সে দেশের এক রাষ্ট্রীয় আয়োজনে কবির আমন্ত্রণ। স্প্যনিশদের কাছ থেকে পেরুবাসীর স্বাধীনতা লাভের শততম বার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠান সেটি। তাঁকে বহনকারি জাহাজটি পথে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ারস-এ যাত্রাবিরতী করবে। আর্জেন্টাইন নন্দিনী ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো’র সাথে এই সময়েই রবিকবির প্রথম সাক্ষাৎ। অভিজাত সুন্দরী ওকাম্পো তখন ৩৪ বছরের পূর্ণযৌবনা। কবিকে তিনি না দেখলেও তাঁর কাব্য পাঠ করেছেন। আর সেই পাঠ থেকেই লেখকের প্রতি ওকাম্পো’র প্রগাঢ় অনুরাগ জন্মেছে।<&sol;p>&NewLine;<p>ভিক্টোরিয়া ফরাসি অনুবাদে প্রথম গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ পড়ে আলোড়িত হন। এর পর থেকে ইংরেজী&comma; স্প্যানিশ বা ফরাসি ভাষান্তরে যখনই রবীন্দ্র রচনার যা কিছু পেয়েছেন&comma; তা পড়ে ফেলেছেন। ওকাম্পো’র সংঘাতময় ব্যক্তি জীবনে কবির গভীর জীবনবোধ সম্পন্ন রচনাগুলো এক পরম আশ্রয়ের দুয়ার খুলে ছিলো। বোধগম্য কারণেই রচয়িতার প্রতি পাঠিকার মনে তীব্র আকর্ষণ তৈরি হলো। এমন পটভ‚মিতে পেরু যাবার পথে কবির বুয়েন্স আয়ারস-এ যাত্রাবিরতীর খবর এলো। ওকাম্পোর জন্য এ এক পরম সুসংবাদ। স্বপ্নকবির সাথে সাক্ষাৎ সম্ভাবনায় ভিক্টোরিয়ার উথাল পাথাল মনে তখন দুকুল ছাপানো প্লাবন। তবে সে প্লাবনে তখনও কবির গা ভেজেনি। ভিক্টোরিয়ার নিজের ভাষায়&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কবির ইংরেজীতে লেখা রচনাগুলো এবং ফরাসি অনুবাদ থেকে পড়ে আমরা যারা তাঁকে জানতাম&comma; তাদের শুরু হলো প্রতিক্ষা। এখানে &lpar;বুয়েন্স আয়ারস-এ&rpar; তাঁর আবির্ভাব এবছরের সবচেয়ে সেরা ব্যাপার। আর আমার পক্ষে এটা তো জীবনেরই সবচেয়ে বড় ঘটনা।<br &sol;>&NewLine;ভিক্টোরিয়া শুধু রূপবতী নন&comma; গুণবতীও বটে। একাধারে তিনি লেখিকা&comma; সাহিত্য সমালোচক এবং ল্যাটিন আমেরিকায় নারীবাদী আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী। তাঁর সম্পাদিত সাহিত্যপত্র &OpenCurlyDoubleQuote;সুর” -এ সেই সময়কার ল্যাটিন আমেরিকার সব প্রধান কবি সাহিত্যিকের লেখা প্রকাশিত হতো। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ লিটারেচার উপাধি প্রদান করে। তৎকালীন আর্জেন্টিনার এক ধনাঢ্য ও গোঁড়া ক্যাথলিক পরিবারের মেয়ে তিনি। বিদ্যালয়ের প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও তিনি সুশিক্ষিতা ও অত্যন্ত উঁচু মানের মার্জিত রুচিসম্পনা ছিলেন। সুপণ্ডিত গভর্নেসদের কাছে তিনি বাড়িতেই স্প্যানিশ&comma; ফরাসি এবং ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যে উচ্চতর শিক্ষা পেয়েছিলেন। সেই সময়কার বনেদি আর্জেন্টাইন পরিবারের নারীদের শিক্ষারীতি এমনটাই ছিলো।<&sol;p>&NewLine;<p>বুয়েন্স আয়ারস -এর হোটেল প্লাজায় কবি যে দিন পৌঁছুলেন&comma; সেদিন সন্ধ্যায়ই ওকাম্পো এক বান্ধবীকে সাথে নিয়ে দেখা করতে ছুটে যান। হোটেলের রিসেপশনে কবির সফরসঙ্গী লেনার্ড এলম্হার্স্ট জানালেন&comma; কবির শরীরটা ভাল যাচ্ছে না। আপতত তাঁর পেরু যাওয়া হচ্ছে না। ডাক্তারের পরামর্শ মতো আবার ভ্রমণ শুরু করার আগে কবিকে নিরিবিলি কোনো পরিবেশে কিছুদিন বিশ্রাম নিতে হবে। ইতিমধ্যেই কবির অপারগতা পেরুর প্রেসিডেন্টকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় এলম্হার্স্ট সাহেব কবির জন্য শহরতলীর দিকে যুৎসই কোন বিশ্রাম-নিবাস খুঁজছেন।<&sol;p>&NewLine;<p><img class&equals;"aligncenter size-full wp-image-7486" src&equals;"https&colon;&sol;&sol;www&period;banglakagoj&period;com&sol;wp-content&sol;uploads&sol;2020&sol;08&sol;BK-12&period;jpg" alt&equals;"" width&equals;"774" height&equals;"451" &sol;><&sol;p>&NewLine;<p>এ যেন মেঘ না চাইতেই জল&excl; ভিক্টোরিয়ার অন্তরাত্মা আনন্দে উদ্বেলিত। কবির জন্য কিছু একটা করার সুযোগ বুঝি এলো তাঁর জীবনে&excl; এলম্হার্স্টকে প্রস্তাব দিলেন যে&comma; কবির সম্মতি পেলে উপশহর সান-ইসিদ্রোতে তাঁর জন্য নিরিবিলি একটা নিবাসের ব্যবস্থা করতে চান। সেই মতো ওকাম্পো বেশ খোঁজখবর করে একটি উপযুক্ত বাড়ির সন্ধান পেলেন। নতুন তৈরি এই বাড়িটির নাম &OpenCurlyDoubleQuote;মিরালরিও”। উচ্চ ভূমির উপরে সেই ভবনটির সামনে ও পেছনে সবুজে মোড়ানো মস্ত উঠান। সেখানে নানা বর্ণের ফুলের সমারোহ&comma; অপরূপ তার শোভা। উত্তরের দিকটায় খানিক এগুলেই ¯à¦¿œà¦—্ধ নদী। ভিক্টোরিয়ার স্বপ্ন-পুরুষ শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্রামোপযুক্ত বাড়িই বটে। ভবনটি ভিক্টোরিয়াদের পারিবারিক বসতবাটি &OpenCurlyDoubleQuote;ভিলা ওকাম্পো” থেকে মোটেই দূরে নয়। ক’সপ্তাহের জন্য এবাড়িতে ওকাম্পো কবিকে যেন নিজ অধিকারে পেয়েছিলেন&comma; মেতে উঠেছিলেন তাঁকে সেবা ও স্বাচ্ছন্দ দিতে।<&sol;p>&NewLine;<p>গুণমুগ্ধ ভক্ত-প্রেমিকা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো হোটেল কক্ষে কবিকে প্রথম-দর্শনেই বিমোহিত হয়েছিলেন। তার নিজ বর্ণনা থেকে&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; এলম্হার্স্ট কবির স্যুইটে নিয়ে বসিয়ে রেখে বেরিয়ে গেলেন। অস্বস্তিকর এক নীরবতার মাঝে কাটছিল সেই মুহুর্তগুলো। ভাবছিলাম&comma; ভীরু মানুষেরা সমস্ত জীবন ভরে যা চায়&comma; ভাগ্য তা আয়ত্বের মধ্যে এনে দিলে সে তখন ভয় পেয়ে যায়। আমাকেও সে রকম ভয় চেপে ধরলো। ভাবলাম দেখা করে কাজ নেই&comma; পালিয়ে যাই। প্রায় সাথে সাথেই ঘরে ঢুকলেন কবি। আহা &excl; কি নীরব&comma; সুদুর&comma; তুলনাহীন&comma; বিনীত। তেষট্টি বছর বয়স&comma; প্রায় আমার বাবার বয়েসী&comma; অথছ কপালে একটিও রেখা নেই&excl; গলদেশ অব্দি নেমে এসেছে তাঁর ঢেউ তোলা সাদা চুলের রাশি। শুভ্র দাড়ি-গোঁফে মুখের নিচের দিকটা আড়ালে&comma; আর তারই ফলে ওপরের অংশ হয়ে উঠেছে আরো দীপ্যমান। তাঁর সুন্দর কালো চোখ&comma; নিখুঁত টানা টানা ভারী চোখের পাতাজোড়া সমগ্র মুখাবয়বের এক অবিশ্বাস্য সৌন্দর্য রচনা করেছে। তাঁর সজীব চোখজোড়া&comma; দীর্ঘদেহ&comma; শোভন চলন। তাঁর প্রকাশময় দুটি অতুলনীয় হাতের শান্ত সৌন্দর্য যেন অবাক করে দেয়&excl; মনে হয় যেন এদের নিজেদেরই কোনো ভাষা আছে।<&sol;p>&NewLine;<p>এদিকে ওই &OpenCurlyDoubleQuote;মিরালরিও” বাড়িতে আসার পরদিনই&comma; ১২ই নভেম্বর ১৯২৪&comma; কৃতজ্ঞ কবি-প্রেমিক তাঁর ভক্ত ওকাম্পো’র কথা মনে করে লিখলেন &OpenCurlyDoubleQuote;বিদেশী ফুল” কবিতাটি&comma;<br &sol;>&NewLine;হে বিদেশী ফুল&comma; যবে আমি পুছিলাম-<br &sol;>&NewLine;&OpenCurlyQuote;কী তোমার নাম’&comma;<br &sol;>&NewLine;হাসিয়া দুলালে মাথা&comma; বুঝিলাম তরে<br &sol;>&NewLine;নামেতে কী হবে।<br &sol;>&NewLine;আর কিছু নয়&comma;<br &sol;>&NewLine;হাসিতে তোমার পরিচয়।<br &sol;>&NewLine;হে বিদেশী ফুল&comma; যবে তোমারে বুকের কাছে ধরে<br &sol;>&NewLine;শুধালেম &OpenCurlyQuote;বলো বলো মোরে<br &sol;>&NewLine;কোথা তুমি থাকো’&comma;<br &sol;>&NewLine;হাসিয়া দুলালে মাথা&comma; কহিলে &OpenCurlyQuote;জানি না&comma; জানি নাকো’। &&num;8230&semi;&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;<br &sol;>&NewLine;কবির সেবা যতেœà¦° জন্য &OpenCurlyDoubleQuote;মিরালরিও” বাড়িটিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দাস-দাসী নিয়োগ করা ছিল। ভিক্টোরিয়া রাতে এবাড়িতে থাকতেন না। তিনি পাশেই নিজেদের বাড়িতে বাবা-মায়ের সাথে ঘুমাতে যেতেন। কবির বিশ্রামে যেন কোনো বিঘœ না ঘটে ভিক্টোরিয়া সে ব্যপারে খুবই সচেতন ছিলেন। তাঁর ভাষায়&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ভয় হতো যে সব সময় আমি ওখানে থাকলে ওঁর অসুবিধা হতে পারে। কখনও তাই দূরেই থাকতাম&comma; যেতাম না ওঁকে দেখতে। ওঁর ভালর জন্য নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতেও আমি প্রস্তুত ছিলাম।<br &sol;>&NewLine;এই সব &OpenCurlyQuote;কাছে-থাকা’&comma; আর &OpenCurlyQuote;দূরে-যাওয়া’ নিয়ে কবির সাথে ওকাম্পো’র যখন মান-অভিমানের ব্যাপার ঘটতো&comma; তখন এলম্হাস্টকে তা সামলাবার দায়িত্ব নিতে হতো। প্রায় দুমাস বুয়েন্স আয়ারস -এ থাকবার সময়কালে কবি মোট ২২টি কবিতা লেখেন। এর অধিকাংশ কবিতাই ওকাম্পোর ঘনিষ্ট সানিধ্য-প্রসূত বলে মনে করা হয়।<&sol;p>&NewLine;<p>সারাক্ষণের সঙ্গী যে&comma; যাঁর আতিথ্যে বিলাসী বিশ্রামে সময় কাটছে&comma; ডাকলেই যিনি ছুটে আসেন&semi; কবি যেন তাকে মুখ ফুটে সব কথা বলতে পারেন না। একই বাড়িতে থেকেও তিনি চিঠি লিখতেন ভিক্টোরিয়াকে। এমনই একটি চিঠির খানিকটা&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; গত রাতে তোমার অতিথিসেবা নিয়ে আমি যতটুকু বলেছি&comma; তা যে আমার মনের কথার অতি সামান্য অংশ&semi; আশা করি তুমি তা বুঝে থাকবে। জীবনের যশ ও খ্যাতি&comma; ব্যক্তি আমাকে নি&colon;সঙ্গ করে রেখেছে। সমাজে আমার গুরুত্ব যতটা বেড়েছে&comma; আমি ততটাই একাকিত্বের গহবরে ডুবেছি। দীর্ঘদিন ধরে আমি যা চেয়ে আসছি&comma; তা কেবল উপযুক্ত কোনো নারীর প্রেমের মধ্যেই পাওয়া যেতে পারে। আজ আমি অনুভব করছি&comma; যেন সেই মূল্যবান উপহারটি আমি পেয়েছি।<br &sol;>&NewLine;লুইস এস্ত্রাদা নামের এক সম্ভ্রান্তবংশীয় আর্জেন্টাইন যুবকের সাথে পরিবারের পছন্দে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই ইউরোপে মধুচন্দ্রিমা যাপনের সময়ে স্বামীর প্রাচীনপন্থী মনোভাব তার কছে প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকে দাম্পত্য জীবনের সব রকমের সুখ-রস থেকে ভিক্টোরিয়া নিজেকে সম্পূর্ণ গুটিয়ে নেন। তবে এই একই সময়ে তিনি স্বামীর এক জ্ঞাতি ভাই জুলিয়ান মার্টিনেজের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমিকের সাথে ভিক্টোরিয়া এই সম্পর্কটি আগাগোড়াই লালন করেছেন&comma; তবে তার সবটাই ছিল গোপনীয়তার আড়ালে।<&sol;p>&NewLine;<p>সান্ ইসিদ্রোতে থাকার কালে রবীন্দ্রনাথের দৈনন্দিন ক্রিয়াদি নিয়ে ভিক্টোরিয়া বলছেন&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; সকালের দিকে রবীন্দ্রনাথ লিখতেন&comma; নিজের বাগানে বেড়াতেন&comma; না হয় আমার বাগানে চলে আসতেন। ওঁর প্রাঙ্গন থেকে ধ্যানমগ্ন হয়ে দেখতেন ফুল আর পাখি। পড়তেন হাডসনের লেখা। বিকেলের দিকে শুরু হতো অভ্যাগতদের ¯à§à¦°à¦¾à§‡à¦¤à¥¤ প্রায়ই নদীর ধারে একটি উইলো গাছের নিচে গিয়ে বসতেন। অতিথিরা অর্ধবৃত্তাকারে তাঁকে ঘিরে থাকতেন। তাঁদের সাথে কথা বলতেন ইংরেজীতে। অনুবাদের কাজটি আমাকেই করতে হতো।<br &sol;>&NewLine;রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বেশকিছু অদ্ভুত আচরণের সাক্ষী হতে পেরেছিলেন ভিক্টোরিয়া। তিনি কবির প্রীতিভাজন ইংরেজ সখা সি&period;এফ&period; এন্ড্রুজের কাছে একবার লিখেছিলেন&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কবির দেখাশোনা করবার দায়িত্ব কি ভয়াবহ&excl; মাঝে মাঝেই উনি শিশুর মতো ব্যবহার করতেন। কবিরা যেন শৈশবের লক্ষণগুলো পুরোটাই বাঁচিয়ে রাখেন তাদের আচরণে। মহাপুরুষদের মহিমার একটা দিক এই শিশুসুলভ ধরণ। যদি তাঁরা কেবলই ছিমছাম&comma; বিজ্ঞ বা ভ্রান্তিহীন হতেন&comma; তাহলে আমরা শ্রদ্ধা করতাম আরো বেশি&comma; ভালবাসতাম কম।<br &sol;>&NewLine;প্রায় দুমাস বাদে à§© জানুয়ারী ১৯২৫&comma; রবীন্দ্রনাথ ও এলমহার্স্ট বুয়েন্স আয়ারস থেকে জাহাজে চড়ে ইউরোপের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। ওকাম্পোর চেষ্টা ছিলো সান-ইসিদ্রোতে রবীন্দ্রনাথকে আরো কিছুদিন আটকে রাখা। কিন্তু সে আর হলো কই&excl; সুখস্মৃতির উপহার স্বরূপ &OpenCurlyDoubleQuote;মিরালরিও” বাড়িতে যে সোফাটিতে কবি আরাম করে বসতেন&comma; ভিক্টোরিয়া তা জাহাজে তুলে দিতে চাইলেন। কিন্তু কেবিনের দরজা দিয়ে কিছুতেই ছোফাখানি ঢুকছিলো না। অবশেষে বিশেষ ব্যবস্থায় দরজার কব্জা খুলে তা ঢোকানো হয়। দীর্ঘ পথ ঘুরে সেই সোফা শান্তিনিকেতনে পৌঁছেছিলো। কবি বাকি জীবন সোফাটিতে বসেছেন। মৃত্যুর কিছুকাল আগে সেই আসনটির উদ্দেশ্যে তিনি দুটি কবিতা লেখেন। তার একটি এরকম&comma;<br &sol;>&NewLine;আরো একবার যদি পারি<br &sol;>&NewLine;খুঁজে দেব সে আসনখানি<br &sol;>&NewLine;যার কোলে রয়েছে বিছানো<br &sol;>&NewLine;বিদেশের আদরের বাণী।&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;<br &sol;>&NewLine;বিদেশের ভালোবাসা দিয়ে<br &sol;>&NewLine;যে প্রেয়সী পেতেছে আসন<br &sol;>&NewLine;চিরদিন রাখিবে বাঁধিয়া<br &sol;>&NewLine;কানে কানে তাহারি ভাষণ।&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;<&sol;p>&NewLine;<p>সান-ইসিদ্রোতে বসবাসের এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সাথে রবীন্দ্রনাথের প্রীতিময় ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কবি তাঁকে &OpenCurlyQuote;ভিক্টোরিয়া’ নামে না ডেকে ভালবেসে বাংলা ভাষান্তরে &OpenCurlyQuote;বিজয়া’ বলে ডাকতেন। আর সে ভালবাসাকে চিরস্থায়ী করতে কবি তাঁর পূরবী কাব্যগ্রন্থ ভিক্টোরিয়াকে উৎসর্গ করে লেখেন&comma; &OpenCurlyDoubleQuote;বিজয়ার করকমলে”।<br &sol;>&NewLine;রবি-ভিক্টোরিয়ার নিত্য পত্র যোগাযোগ থাকলেও তাঁদের পুনরায় দেখা হয় ফ্রান্সের প্যারিসে। ১৯৩০ সালে ভিক্টোরিয়ার উদ্দ্যোগে সেখানে কবির আঁকা ছবির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ২৬ এপ্রিল ১৯৩০&comma; প্যারিস থেকে কবি ইন্দিরা দেবীকে লিখছেন&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ধরাতলে যে রবিঠাকুর বিগত শতাব্দির ২৫ শে বৈশাখে অবতীর্ণ হয়েছেন&comma; তাঁর কবিত্ব সম্প্রতি আচ্ছন্ন। তিনি এখন চিত্রকররূপে প্রকাশমান। প্রদর্শনীর সমস্ত আয়োজন আর ব্যয়ভার বহন করছেন ভিক্টোরিয়া।<&sol;p>&NewLine;<p>ওই একই সময়ে চিত্রপ্রদর্শনীটি নিয়ে কবি পূত্রবধূ প্রতিমা দেবীকে লিখছেন&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; ভিক্টোরিয়া যদি না থাকতো&comma; তাহলে ছবি ভালই হোক আর মন্দই হোক&comma; তা কারো চোখে পড়তো না। ঘর পেলেই ছবির প্রদর্শনী আপনিই ঘটে&comma; -এ অত্যন্ত ভুল। এর এত কাঠখড় আছে যে&comma; আমাদের পক্ষে তা অসাধ্য। খরচ কম হয়নি&comma; তিন চারশো পাউন্ড তো হবে। ভিক্টোরিয়া অবাধে টাকা ছড়াচ্ছে। এখানকার মস্ত বড় বড় গুণিজ্ঞানীদের সে জানে&comma; ডাক দিলেই তারা আসে। দেখতে দেখতে চারিদিক সরগরম করে তুলেছে। আজ বিকেলে দ্বারোদঘাটন হবে&comma; তারপরে কী হয় সেটাই দ্রষ্টব্য&&num;8230&semi;&&num;8230&semi;<br &sol;>&NewLine;রবীন্দ্রনাথ ও ভিক্টোরিয়ার প্রেমাখ্যান নিয়ে বোদ্ধামহলে গুঞ্জণ তো আছেই। কবি রবীন্দ্রনাথ স্বাভাবগতভাবেই প্রেম-পিয়াসী পুরুষ ছিলেন। তবে তাঁর মত একজন অতিমানব যখন প্রেমিক&comma; তখন সেই প্রেমকে বিশেষ বিচারে দেখতে হবে। &OpenCurlyDoubleQuote;প্রেমের পরিণতি যৌনতা” এ বড়ই সাদামাটা ভাবনা। যে স্তরের মানবিক গুণাবলিওয়ালারা প্রেমকে বিছানায় শুইয়ে দেয়&comma; রবীন্দ্রনাথকে সেই পর্যায়ভুক্ত ভাবা অন্যায়। মানুষ তার প্রতিভা&comma; বাকসামর্থ্য&comma; রুচিবোধ&comma; বুদ্ধিমত্তা&comma; স্মার্টনেস&comma; শিক্ষা&comma; আভিজাত্য ইত্যাদি গুণাবলী বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষন করার জন্য কাজে লাগায়। রবি ও ওকাম্পো তাঁদের পারস্পরিক সম্পর্ক প্রগাঢ় করতে তেমনটা করে থাকবেন বৈকি।<&sol;p>&NewLine;<p>পরস্পরের সাথে কথা বলার সুখ&comma; সাংস্কৃতিক চিন্তার বিনিময়&comma; বুদ্ধিবৃত্তিক তর্ক&comma; জীবন দর্শনের আলোচনা&comma; এমনকি নিতান্ত প্রাসঙ্গিক পরিস্থিতিতে সীমিত শরীরী স্পর্শ&comma; প্রভৃতি বিষয়গুলো একজন উচ্চ প্রতিভাবান ব্যক্তির প্রেমানন্দের যথেষ্ট উপকরণ হতে পারে। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেমন প্রেম চান&comma; তা কবি তাকে লিখে জানিয়েছিলেন&comma;<br &sol;>&NewLine;তাঁর নিঃসঙ্গতা দূর করার জন্য নারীর ভালবাসা তিনি চান&comma; কিন্তু তা অন্যান্য সাধারণ পুরুষের মতো কামনাক্লিষ্ট নয়। তাঁর কাজে সেই প্রেম যেন প্রেরণা ও মাধুর্য সঞ্চার করে।<br &sol;>&NewLine;এ প্রসঙ্গে ওই একই লেখায় কবি তাঁর সম্ভাব্য ভবিষ্যত প্রেমিকাদের সতর্ক করে বলেছেন&comma;<br &sol;>&NewLine;&&num;8211&semi; কোনো নারী যদি তাঁর প্রেম দিয়ে তাঁকে গ্রাস করবার চেষ্টা করে&comma; তবে তাঁর বন্ধনভীরু মন তাকে প্রত্যাখ্যান করতে দ্বিধা করে না।<br &sol;>&NewLine;&lpar;লেখক বাংলা টেলিভিশন কানাডা’র নির্বাহী&rpar;<br &sol;>&NewLine;তথ্যসূত্রঃ ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথঃ শঙ্খ ঘোষ&comma; রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র&comma; টেগোর ওয়েভ&comma; রবীন্দ্র সান্নিধ্যে বিশ্বজনঃ অনুত্তম ভট্টাচার্য&comma; রবীন্দ্রজীবনকথাঃ প্রভাত কুমার মুখপাধ্যায়<&sol;p>&NewLine;

Exit mobile version