Home কানাডা খবর নোভাভেক্সের করোনার টিকা কানাডায় ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য অনুমোদিত

নোভাভেক্সের করোনার টিকা কানাডায় ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য অনুমোদিত

অনলাইন ডেস্ক : কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগ হেলথ কানাডা দেশটির ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য নোভাভেক্সের করোনার টিকা অনুমোদন করেছে। ফলে এখন থেকে মর্ডানা, ফাইজার, অস্ট্রাজেনকার সাথে কানাডিয়ানরা নোভাভেক্সের টিকাও নিশ্চিন্তে নিতে পারবেন। মার্কিন কোম্পানি নোভাভেক্সে ২০২০ সালের শুরুর দিকে বেশ কয়েকটি দেশের সরকারের সাথে চুক্তি করেছিল। কিন্তু এই টিকা নিয়ে নানা জটিলতা দেখা দেয়ায় এতদিন এটি কানাডায় অনুমোদন দেয়া হয়নি। অবশেষে মন্ট্রিলে চুক্তি সম্পাদনের ১৮ মাস পর এটির অনুমোদন মিলল। হেলথ কানাডা নুভাক্সোভিড নামে পরিচিত এই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর এর দুই ডোজের মধ্যে কমপক্ষে ২১ দিনের ব্যবধান রাখার সুপারিশ করেছে।

প্রধান গণস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. থেরেসা টেম গত বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, আগামী মার্চের প্রথম দিকেই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে নুভাক্সোভিডের প্রথম চালান কানাডায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে ফেডারেল কর্মকর্তারা ঠিক কত সংখ্যক টিকা আসছে তা জানাতে পারেন নি।

টিকার প্রস্তুতকারীদের দাবি তাদের ভ্যাকসিন করোনা আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ্যতা ও মৃত্যু প্রতিরোধে ৯০ শতাংশ কার্যকর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৪৫ হাজার লোকের ওপর ট্রায়াল চালিয়ে এই ফলাফল পাওয়া গেছে বলে তারা জানিয়েছে। হেলথ কানাডা বলেছে, তারা নোভাভেক্সের ট্রায়ালের ফলাফলগুলো হাতে পেয়েছেন। এবং যথাযথভাবে নিরীক্ষণ করেছেন। করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের সময় বেশিরভাগ ট্রায়াল সম্পন্ন হলেও পরে ওমিক্রন রোধেও এটি কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য এটির ট্রায়ালের অনুমোদন এখনো পাওয়া যায় নি।

হেলথ কানাডার প্রধান উপদেষ্টা ডা. সুপ্রিয়া শর্মা বলেছেন, কোম্পানিটি ল্যাব-ভিত্তিক ক্লিনিকাল ট্রায়ালের গবেষণা ফলাফলও জমা দিয়েছে। এতে দেখা যায় যে, এই ভ্যাকসিনে ওমিক্রনের প্রতিরোধেও নিরপেক্ষ এন্টিবডি তৈরি হয়। যারা মর্ডানা বা ফাইজারের টিকা নিতে অনিচ্ছুক তাদেরকে নোভাভেক্সের টিকা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে টিকা বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটি। এছাড়া কমিটি বলেছে, যারা ইতোমধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন তারা বুস্টার ডোজ হিসাবেও এই টিকা নিতে পারবেন। এই টিকার সম্ভাব্য পাশ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো আগে অনুমোদিত ৪টি টিকার মতোই অর্থাৎ ইনজেকশনের স্থানে সামান্য ব্যাথা, হালকা জ্বর, সর্দি লাগা, বমিবমি ভাব এবং মাথাব্যথা হতে পারে। মহামারির পর টিকা উদ্ভাবনের শুরুতে কানাডা সরকার নোভাভেক্সের সাথে ৫২ মিলিয়ন ডোজ টিকা কেনার জন্য একটি চুক্তি করেছিল। কিন্তু টিকা উৎপাদনের স্থান নিয়ে মত পার্থক্য দেখা দেয়ায় ওই চুক্তি আর কার্যকর হয়নি। কানাডা সরকারের দাবি ছিল এসব টিকা কানাডার কোন কোম্পানি অথবা নোভাভেক্সের নিজস্ব ল্যাবরেটারিতে উৎপাদিত হতে হবে। কানাডার এই দাবি পূরণ না হওয়ায় সে সময় আর চুক্তি কার্যকর হয়নি।

পরবর্তীতে ২০২১ সালের শেষ দিকে ইন্দোনেশিয়া প্রথম নোভাভেক্সের টিকা অনুমোদন করে। পরে ফিলিপাইনেও এটির সফল প্রয়োগের পর ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যেও এটির অনুমোদন মেলে। গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়াতেও নোভাভেক্সের প্রথম ডোজ টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। এখন কানাডাও এটির অনুমোদন দিল।

নোভাভেক্সের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা জন ট্রিজিনো বলেছেন, কানাডায় তাদের প্রথম চালানটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে এলেও শিগগিরই তারা কানাডায় তাদের টিকার উৎপাদন শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ঠিক রাখতে আমাদের কানাডায় ল্যাবরেটরি স্থাপনের কোন বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যে তারা মন্ট্রিলের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের সাথে আলোচনা শুরু করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ল্যাবরেটরি স্থাপনের জায়গা পাওয়া গেলে এই বছরের শেষ দিকে অথবা ২০২৩ সালের শুরুতে কানাডায় বছরে ২৪ মিলিয়ন ডোজ নোভাভেক্সের টিকা উৎপাদন করা যাবে বলে জানান ট্রিজিনো। সূত্র : সিবিসি

Exit mobile version