সুহেল ইবনে ইসহাক : ২০ জুলাই মঙ্গলবার কানাডায় মহান ঈদ উল আয্হা, পবিত্র কোরবানির ঈদ। ঈদ মানে তো আনন্দ। সেই আনন্দ যদি আমরা সবাই ভাগাভাগি করতে না পারি, আমার আনন্দের সঙ্গে অন্যকেও যদি জড়িয়ে নিতে না পারি, তাহলে তার পূর্ণতা কোথায়? শুধু ঈদের দিনেই নয়, প্রত্যাশা করি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আমাদের সব স্থিতি, শৃঙ্খলা ও সমৃদ্ধি ঈদ-পরবর্তী দিনগুলোতেও বজায় থাকুক। সব মতভেদ ভুলে আজ একে অপরকে ভালোবাসার দিন; সাম্য, সৌহার্দ্য, ত্যাগ ও মিলনের দিন। মানুষের এই জনপদ যখন করোনার বদৌলতে মৃত্যুপুরী, বিশ্ব যবে দেখে চলেছে সভ্যতার গগণ বিদারি চিৎকার, বাজছে মানবতার অদৃশ্য রণডঙ্কা, পরাজিত মানুষের মৃত্যুর মিছিল। ঠিক তখনি মানবতার জয়গান গেয়ে, ত্যাগ-তিতিক্ষার, উৎসর্গের মহান ব্রত নিয়ে মুসলিম জাহানে এসে হাজির পবিত্র ঈদুল আয্হা।
কোরবানির ঈদের আসল শিক্ষার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে হবে এই উৎসর্গের মাধ্যমে। নিজের সামান্য ইচ্ছাকে ত্যাগ করাও কোরবানি। কিন্তু সব চেয়ে বড় কোরবানি হচ্ছে আত্মজ কিছু ত্যাগ করা। যে জিনিসের সাথে আত্মার সম্পর্ক, তাকে ত্যাগ করা মানে সর্বোচ্চ ত্যাগ। সেই সর্বোচ্চ ত্যাগ করার জন্যই তো এই ধর্মীয় নির্দেশ এসেছিল। আর যুগে-যুগে যারা যত বিলিয়ে দিতে পেরেছেন, ত্যাগ করতে পেরেছেন তাঁরাই অনন্ত প্রশান্তি ও সম্মান লাভ করেছেন। পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে হৃদয়ের অলিন্দে ঘাপটি মেরে থাকা পশুত্বকেও চিরতরে ত্যাগ করতে হবে এবং তাতেই নিহিত ব্যক্তি জীবনে ঈদুল আয্হার স্বার্থকতা।
ঈদের আনন্দের দিনে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে-সেদিকে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। সবাইকে ঈদের আনন্দ এক সাথে ভাগ করে নিতে হবে সব ভেদাভেদ ভুলে। উৎসর্গের এ আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহর নিকট সমর্পণ করতে হবে।
কোরআনের যে ভাষ্য–“আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন-মরণ সবই মহাবিশ্ব প্রতিপালকের জন্য।” মক্কা শরীফের হাজীদের প্রার্থনা, সারা বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ের কাকুতি মহান রাব্বুল আ’লামিন কবুল করে নেবেন, এ দৃঢ় মনোবল চিত্তে ধারণ করি। ঈদুল আয্হার সুমহান শিক্ষা সারা বিশ্বে মানবতাকে সমুন্নত রাখবে, এবং এরই উসিলায় মহান রাব্বুল আ’লামিন আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। সকলের জীবন সুন্দর, রোগমুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধশালী হোক, সেই কামনা করি। সবাইকে পবিত্র ঈদুল আয্হার গাম্ভীর্যপূর্ণ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ঈদ মোবারক।