ফরিদ আহমেদ : প্রত্যেক জাতির জীবনেই এক বা একাধিক কালো দিন থাকে। সে রকম কালো দিন আমাদেরও আছে। আমাদের সবচেয়ে বড় কালো দিনটা হচ্ছে পনেরোই আগস্ট, আজকের এই দিনটা। সালটা শুধু ভিন্ন। সেটা ১৯৭৫।

এই দিনটাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং আমাদের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে হয়েছিলো। হত্যা করেছিলো আমাদের সেনাবাহিনীরই একদল জুনিয়র অফিসার। এদের সাথে কর্মচ্যুত কিছু তরুণ সেনা অফিসারও যুক্ত ছিলো। আপাতদৃষ্টিতে যদিও এরা হত্যাকাণ্ডের সম্মুখ সারিতে ছিলো, এদের পিছনে ছায়াতে লুকিয়ে ছিলো অসংখ্য কুমতলবী কুশীলব। খোন্দকার মোশতাককে প্রেসিডেন্ট বানিয়ে দেশটাকে দখল করে নেয় তারা।

মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেও মানুষ দলে দলে বাকশালে যোগ দেবার জন্য শেখ মুজিবের সান্নিধ্য খুঁজেছে। কিন্তু, মৃত্যুর পরেই সেটা পাল্টে যায় পুরোপুরি। তাঁর নিজের মন্ত্রীসভারই একটা বড় অংশ গিয়ে যোগ দেয় খোন্দকার মোশতাকের মন্ত্রীসভায়। এতো বড় একটা জঘন্য হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রতিবাদ করার মানুষ বলতে গেলে ছিলই না। বেশিরভাগই তখন খুনিদের সঙ্গে গিয়ে ভিড়েছে, একটা অংশ ভয়ে আতংকে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছেন, নীরবে প্রতিবাদ করেছেন, আর খুব খুব ছোট একটা অংশ, হাতে গোণা মাত্র দুই চারজন এর সরব প্রতিবাদ করেছেন।

এই নীরবে প্রতিবাদ করাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। পনেরোই অগাস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরেই ঢাকা শহরকে তাঁর কাছে এক বিশ্বাসঘাতক শহর বলে মনে হতে থাকে। এটা বাসের অযোগ্য বলে বিবেচনা করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নেত্রকোনায় নিজেদের গ্রামের বাড়িতে চলে যান তিনি। মজার বিষয় হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে, তিনি কাজ করতেন গণকন্ঠ পত্রিকায়। এটা জাসদের মুখপত্র ছিলো। সেই সময়ে মুজিব সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে এরা সত্য-মিথ্যা নানা ধরনের প্রচারণা চালাতো। দেশ স্বাধীন হবার পরে শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা নিম্নগামী হবার পিছনে তাঁর নিজের দায় যেমন আছে, জাসদের মুখপত্র গণকন্ঠেরও একটা বিশাল ভূমিকা রয়েছে।

গণকন্ঠে কাজ করলেও, নির্মলেন্দু গুণের ভালবাসা ছিলো শেখ মুজিবের প্রতি। ফলে, তাঁর জনপ্রিয়তা ধসিয়ে দিয়ে, তাঁকে হত্যা করার কাজটা সহজ করে দেবার জন্য গণকন্ঠে নিজেকে দাবার ঘুটি হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছেন বলে তিনি মনে করতে থাকেন। তীব্র অনুশোচনা থেকে ঢাকা শহর ছেড়ে দিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান তিনি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর গ্রামে ফিরে গিয়ে এক বৈরাগ্যময় জীবন-যাপন করা শুরু করেন তিনি। দেশ সম্পর্কে সকল আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। খবরের কাগজ পড়তেন না, রেডিও শুনতেন না। গ্রামের শ্মশানে জগা সাধুর আশ্রমে পড়ে থাকতেন সারাদিন। আধ্যাত্মিক গান শুনতেন আর সিদ্ধি সেবন করতেন। সহজ ভাষায় মানসিক সুস্থতা তাঁর পুরোপুরি ছিলো না। মানসিক রোগীতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। সবকিছুতেই সন্দেহ করতেন এবং ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করতেন। সিআইএ তাঁকে হত্যা করার জন্য পিছন পিছন ঘুরছে এমন একটা প্রবল মনোবৈকল্যেও ভুগতেন তিনি।

নির্মলেন্দু গুণের বঙ্গবন্ধুর প্রতি এই ভালবাসা এবং আস্থার বিষয়টা জন্মেছিলো ষাটের দশকে। ১৯৬৭ সালে তিনি একটা দীর্ঘ কবিতা লিখেছিলেন। সেটার নাম ছিলো ‘প্রচ্ছদের জন্য’। এই কবিতাটা তিনি উৎসর্গ করেছিলেন শেখ মুজিবকে। কবিতাটা সংবাদ পত্রিকার সাহিত্য বিভাগে ছাপাবার জন্য তিনি এটা দিয়ে এসেছিলেন শহীদুল্লাহ কায়সারের হাতে। দিনকাল ভালো না দেখে শহীদুল্লাহ কায়সার সেই কবিতা ছাপাচ্ছিলেন না। এটা ছাপালে যদি সংবাদ পত্রিকাকে সরকার নিষিদ্ধ করে দেয়, সেটাই ছিলো ভয়। তবে, ছাপবেন না, সেটা সরাসরি না বলে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন তিনি। নির্মলেন্দু গুণের সেটা পছন্দ হয়নি। সেটা তাঁর তরুণ বয়স। স্বাভাবিকভাবে ওই বয়সে ধৈর্য কম ছিলো তাঁর। তিনি ক্রমাগত চাপ দিতে থাকেন শহীদুল্লাহ কায়সারকে। না ছাপলে ওটার উৎসর্গ পাল্টে মোনায়েম খানের পত্রিকায় পাঠিয়ে দেবেন, এই ভয় দেখানোর পরে সেই কবিতা ছাপা হয়েছিলো সংবাদে।

শুধু কবিতা লেখা বা সেই কবিতা শেখ মুজিবকে উৎসর্গ করাই না, শেখ মুজিবের প্রতি তাঁর ভালবাসা অন্যভাবেও জানা যায়। একাত্তরে যুদ্ধ শুরু হবার পরে তাদের পুরো পরিবার চলে গিয়েছিলো ভারতে। তাঁর বড় ভাই ভারতের নাগরিক। যুদ্ধের সময়ে তাঁদের বাড়িঘরে লুটপাট করা হয়, বেদখলও করে ফেলে অন্য মানুষেরা। যুদ্ধ শেষে দেশ স্বাধীন হবার পরেও তার বড় ভাই তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরার ব্যাপারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। তাঁর ধারণা ছিলো বঙ্গবন্ধু-বিহীন বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা বেশিদিন স্থায়িত্ব পাবে না। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফেরার পরেই নির্মলেন্দু গুণ দেশে ফেরত আসেন। দখলদারি থেকে বাড়িঘর উদ্ধার করে কোলকাতায় খবর পাঠান। তারপরই তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা ফেরত আসে।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকা ছেড়ে যে গ্রামে এসেছিলেন, সেটা হয়তো স্থায়ী হয়ে যেতো। কিন্তু, সেটা হয়নি। ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসে নির্মলেন্দু গুণ ঢাকায় ফিরে আসেন। তাঁর ফিরে আসার পিছনে তাঁর দুই কবি বন্ধুর ভূমিকা ছিলো।

একজন হচ্ছেন মহাদেব সাহা আর অন্যজন হচ্ছে আবুল হাসান। অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এরা দুইজন তাঁকে চিঠি লিখে ঢাকায় ফিরে আসতে বলে। বিশেষ করে আবুল হাসানের সমবেদনাসিক্ত আবেগী চিঠি পড়ে ঢাকার প্রতি অভিমান খানিকটা ভুলে যান। চলে আসেন ঢাকায়। মহাদেব সাহার আশ্রয়ে এসে ওঠেন তিনি। আবুল হাসানের কাছে থাকার কোনো উপায় ছিলো। তরুণ কবি তখন নিজেই অসুস্থ। ভর্তি হয়েছেন পিজি হাসপাতালে। সেখানে থেকে মৃত্যুর দিন গুনছেন তিনি।

পনেরোই আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবে হত্যার পর থেকে, বাংলাদেশের ইতিহাস থেকেও তাঁকে মুছে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সমস্ত পাঠ্য বই থেকে তুলে নেওয়া হয় তাঁর নাম। রেডি-টেলিভিশনে কোথাও তাঁকে দেখানো হতো না, তাঁর কোনো বানী প্রচার করা হতো না, তাঁর নামটাও নেওয়া হতো না। জাতীয় বিশেষ দিনগুলোতে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস বলা হতো খণ্ডিতভাবে, তাঁকে পুরোপুরি মুছে দিয়ে।

আমার রাজনৈতিক জ্ঞান জন্মেছে আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি সবে। সেই সময়েও আমি এই চিত্র দেখেছি। পঁচাত্তরের আগের কোনো বাংলা ছবি দেখালে, আর সেই সব ছবিতে কোথাও যদি দেওয়ালেও শেখ মুজিবের ছবি থাকতো সেটাকে ঝাপসা করে দেওয়া হতো। আমি মোরশেদুল ইসলামের স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আগামী’ দেখেছি অনেকবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই মুভির শো হলেই আমি সেটা দেখতাম। এর পিছনে অন্যতম প্রধান কারণ ছিলো সেখানে সাতই মার্চের ভাষণের অংশ বিশেষ দেখানো হতো। ওটার লোভেই ছবিটা দেখতাম আমি বারবার।

সত্তরের দশকে ফিরে যাই আবার। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদ যেমন সেই সময়ে হয়নি, তাঁকে নিয়ে ভালবাসার প্রকাশও তখন কেউ দেখায়নি। এটা দেখানোর জন্য যে সাহস দরকার, সেটা খুব অল্প মানুষের মধ্যেই ছিলো।সবাই নিরাপদ জীবন যাপন করতে চেয়েছেন, নিজের টিকে থাকাকে নিশ্চিত করতে চেয়েছে। অল্প কিছু মানুষ ব্যতিক্রম ছিলেন। এঁদেরই একজন ছিলেন নির্মলেন্দু গুণ। কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই প্রথম শেখ মুজিবকে নিয়ে কবিতা লেখেন, এবং প্রকাশ্য জনসভায় সেই কবিতা পাঠ করেন। কবিতাটার নাম, আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি।

১৯৭৭ সালের একুশে ফেব্রæয়ারিতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে কবিদের স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর বসেছিলো। একে একে কবিরা মঞ্চে আসছেন। কবিতা পাঠ করে মঞ্চ থেকে নেমে যাচ্ছেন। খুব অল্প মানুষই সেই সব কবিতাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এমন সময় মঞ্চে উঠে এলেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। শীর্ণ দেহের, দীর্ঘ আকারের শশ্রুমণ্ডিত এক কবি। পকেট থেকে একটা কবিতা বের করে পড়া শুরু করলেন তিনি। কবিতা পাঠ নয়, যেনো বোমা বিস্ফোরিত হলো বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে। অনুচ্চারিত সেই নাম কবির কণ্ঠে উচ্চারিত হলো, আমি যেনো কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি। সচকিত হয়ে উঠলো চারিদিক। অনেক চোখে জ্বলে উঠলো আলো। আবার কাউকে কাউকে ত্রস্তপায়ে বাংলা একাডেমি থেকে পালিয়েও যেতে দেখা গেলো।

এই কবিতা পাঠের বিষয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণের নিজে যেটা বলেছেন, সেটাই তুলে দিচ্ছি আমি নিচে। তিনি লিখেছিলেন, “১৯৭৭ সালে, আমি লিখি ‘আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি’। কবিতাটি আমি পাঠ করি বাংলা একাডেমীতে কবিতা পাঠের আসরে, ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে। অন্য কোনো জায়গায় কবিতা পড়ার কোনো সুযোগ তখন ছিল না। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে তাঁকে নিয়ে এই প্রথম সরাসরি একটি কবিতা পড়লাম। তাঁর নাম কবিতাটিতে বার বার ফিরে আসছিল। শ্রোতারা আনন্দে করতালি দিয়ে আমাকে স্বাগত জানাচ্ছিল। একটি ছেলে উঠে এসে আমার গলায় একটি ফুলের মালা পরিয়ে দেয়। তখন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ছিলেন আশরাফ সিদ্দিকী। তিনি কাঁপতে কাঁপতে আমার কাছে এসে বললেন, ‘তুমি আমার চাকরিটা খাইছ। চলো, এখন আমার রুমে বসে একটু চা খাবে।’ উত্তরে রসিকতা করে আমি বলি, ‘স্যার, চাকরি চলে গেলেও বেতন আপনি ঠিকই পাবেন।’ তিনি আমাকে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান।

সেখানে গিয়ে দেখি গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তা সাদা পোশাকে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। একজন বললেন, ‘কবি সাহেব, আপনি তো সাংঘাতিক কবিতা লিখছেন। কপিটা দেন তো, দেখি।’ বললাম, ‘আমার কাছে তো কবিতাটা নেই। অন্য এক লোক নিজেকে গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে কপিটা নিয়ে গেছে।’ ওঁরা কথাটা বিশ্বাস করলেন। বললেন, ‘স্মৃতি থেকে কয়েকটা লাইন বলেন।’ আমি বললাম, ‘আমার তো কবিতা মনে থাকে না। একটা লাইন শুধু মনে আছে, “আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।” লাইনটি পাঁচবার আছে।’

ওখান থেকে বেরিয়ে আসার পর ওঁরা আমাকে ডিবি অফিসে নিয়ে যেতে চাইলেন। একদল শ্রোতা তখন আমাকে ঘেরাও করে রাখল। আমি জানতে চাইলাম, ‘কেন যাব।’ ওঁরা আমাকে বললেন, ‘আমাদের এসপি সাহেবের কাছে বসে একটু চা খাবেন।’ আমি বললাম, ‘আমি আর কত চা খাব?’ আমাকে গ্রেপ্তার করলে তো যেতেই হবে। কিন্তু চা খেতে যেতে চাই না।’ এক পর্যায়ে তাঁরা ওয়্যারলেসে কথা বললেন। তারপর আমাকে রেখে চলে গেলেন।”

আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি
নির্মলেন্দু গুণ
সমবেত সকলের মতো আমিও গোলাপ ফুল খুব ভালোবাসি,
রেসকোর্স পার হয়ে যেতে সেইসব গোলাপের একটি গোলাপ
গতকাল আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।

আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
শহিদ মিনার থেকে খসে-পড়া একটি রক্তাক্ত ইট গতকাল আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
সমবেত সকলের মতো আমিও পলাশ ফুল খুব ভালোবাসি, ‘সমকাল’
পার হয়ে যেতে সদ্যফোটা একটি পলাশ গতকাল কানে কানে
আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
শাহবাগ এ্যভিন্যুর ঘূর্ণায়িত জলের ঝরনাটি আর্তস্বরে আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
সমবেত সকলের মতো আমারো স্বপ্নের প্রতি পক্ষপাত আছে,
ভালোবাসা আছেথ শেষ রাতে দেখা একটি সাহসী স্বপ্ন গতকাল
আমাকে বলেছে, আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি তাঁর কথা বলতে এসেছি।
এই বসন্তের বটমূলে সমবেত ব্যথিত মানুষগুলো সাক্ষী থাকুক,
না-ফোটা কৃষ্ণচূড়ার শুষ্কভগ্ন অপ্রস্তুত প্রাণের ঐ গোপন মঞ্জরীগুলো কান পেতে শুনুক,
আসন্ন সন্ধ্যার এই কালো কোকিলটি জেনে যাকথ
আমার পায়ের তলায় পুণ্য মাটি ছুঁয়ে
আমি আজ সেই গোলাপের কথা রাখলাম, আজ সেই পলাশের কথা
রাখলাম, আজ সেই স্বপ্নের কথা রাখলাম।
আমি আজ কারো রক্ত চাইতে আসিনি,
আমি আমার ভালোবাসার কথা বলতে এসেছিলাম।