সোনা কান্তি বড়ুয়া : জাতিসংঘ সম্মেলনে আমার ভাষনের বিষয় বস্তু ছিল : WORLD PEACE & YOUTH DEVELOPMENT, 18 – 22 NOVEMER 1980 , BANGKOK , THAILAND. প্রিয় LADIES & GENTLEMEN, ভাই বোনেরা এবং বন্ধুগণ, বিভেদ বিদ্বেষের নামই কি ধর্ম ও রাজনীতি? মানবাধিকারের অস্তিত্বের আলোকে আন্তঃধর্মীয় স¤প্রীতিতে সব ধর্মই শান্তির বার্তা দেয়! মানবতাই হোক প্রকৃত ধর্ম! মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি! সুখী হও সুখী হও / এ মৈত্রী ভাবনা। / দিবা নিশি হিত সুখ করিনু প্রার্থনা। WORLD PEACE উপলক্ষে “ধর্মহীন বিজ্ঞান খোঁড়া, বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ (অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মত)।” বিশ্বননন্দিত বিংশ শতাব্দীর সেরা মানুষ (টাইম ম্যাগাজিন মতে) অ্যালবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫), “Science and Religion” ২২৫ নম্বর প্রবন্ধ (১৯৪১) নিউইয়র্কে বিজ্ঞান, দর্শন ও ধর্ম বিষয়ক সম্মেলনে উক্তি, “ধর্মহীন বিজ্ঞান খোঁড়া, বিজ্ঞানহীন ধর্ম অন্ধ।”

বুদ্ধভ‚মি পুন্ড্রবর্দ্ধনে (বগুড়া) বিশ্বননন্দিত গৌতমবুদ্ধের বাংলাদেশ! সেইদিনের (2600 years ago) বাংলাদেশের বগুড়ায় মহাস্থানগড়ে ঐতিহাসিক স্মৃতিখন্ড পবিত্র বুদ্ধ তীর্থভ‚মি যেখানে গৌতমবুদ্ধ তাঁর অমৃতময় ধর্ম প্রচার করেছিলেন, সম্রাট অশোক সেই মহান পুণ্যভ‚মিকে স্মরনীয় করার জন্যে বৌদ্ধবিহার (বাসু বিহার) ও বুদ্ধচৈত্য নির্মান করেছিলেন এবং আজ ও সম্্রাট অশোকের “প্রাচীন বাংলা ভাষায়” (ব্রাহ্মী লিপিতে) শিলালিপিটা কলকাতা জাদুঘরে বিরাজমান। বিশ্বসমাজ সুখী হও সুখী হও / এ মৈত্রী ভাবনা। দিবা নিশি হিত সুখ করিনু প্রার্থনা।

মানবতা সামনে এসে দাঁড়ায় “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি!”
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে।
লালন বলে জাতের কি রূপ
দেখলাম না এই নজরে।।
সুন্নত দিলে হয় মুসলমান
নারীলোকের কি হয় বিধান।
বামন চিনি পৈতে প্রমাণ
বামনী চিনি কি করে।।
কেউ মালা কেউ তসবিহ গলে
তাইতে কি জাত ভিন্ন বলে।
আসা কিংবা যাওয়ার কালে
জাতের চিহ্ন রয় কারে।।
জগৎ জুড়ে জাতের কথা
লোকে গল্প করে যথাতথা।
লালন বলে জাতের ফাতা
ডুবাইছি সাধবাজারে।।

১৯২৮ সালে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙালির আত্মপরিচয়ের খোঁজে পন্ডিত ও ভাষাতত্ত¡বিদ ডক্টর মোহাম্মদ শহীদুলাহ (ইংরেজীতে তাঁর পি.এইচ. ডি. থিসিসি ছিল) ‘বুড্ডিষ্ট মিষ্টিক সংস (বা বৌদ্ধ চর্যাপদ)’ শীর্ষক বই লিখেছেন এবং ধর্মের গোড়ামি ত্যাগ করে ঐতিহাসিক উৎস নিরুপণ করতে গিয়ে বলেছেন, “আমরা বলিতে পারি যে বৌদ্ধগানই (চর্যাপদ) যেমন একদিকে গজলের, তেমনি অন্যদিকে বৈষ্ণব পদাবলীর মূল উৎস। বৌদ্ধগানের শূন্যতা বৈষ্ণব পদাবলীতে রাধা হয়েছে!”

বৌদ্ধ ভারত ও বাংলাদেশে প্রাচীন বৌদ্ধযুগের অজানষ কাহিনী! সুমগধভদ্র নামক জনৈক BUDDHIST PERSON (লোক) বুদ্ধকে পুÐ্রবর্ধনে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান। বুদ্ধের এসময় রচিত একটি পালি গাথা :
দূরে সন্ত পকাসেন্তি হিমবন্তব পব্বত
অসন্তেথুন দিসসন্তি রত্তি খিতা যথা সারা।
অর্থঃ শীলবান সৎ ব্যক্তি দূর হতে হিমালয়ের পর্বতের মত দৃশ্যমান, অসৎ ব্যক্তি রাতের আঁধারে ছোড়া তীরমাত্র।”

বিশ্বমানচিত্রে অশোক ভারতবর্ষের বিখ্যাত সম্রাট ছিলেন। পলিটিক্যাল হিন্দুধর্ম বুদ্ধগয়া মহাবোধি মন্দির দখল করল কেন? নাম যশের জন্যে পলিটিক্যাল হিন্দুধর্ম বৌদ্ধধর্মের গলা টিপে দিয়ে রাজনীতি গায়ের জোরে উচ্চবর্ণের হিন্দু শাসকগণ বৌদ্ধগণকে দলিত বানিয়েছিলেন (দেশ, ৪ মে ২০০১ কলিকাতা পৃষ্ঠা ১২)!

বিশ্বননন্দিত তথাগত বুদ্ধের মহাপরিনিব্বান এর অন্তিম বাণী! বৈশাখী পূর্ণিমা। নিশি অবসান প্রায়। পূর্ণচন্দ্র পশ্চিম গগনে হেলিয়া পড়িয়াছে। তাহার অমল ধবল স্নিগ্ধ কিরণমালা নিদাঘ ক্লিষ্ট প্রকৃতির উপর শেষ অমিয়ধারা বর্ষণ করিতেছে। অদূরে হিরণ্যবতী নদী, স্বাভাবিক ধীর মন্থর গতিতে প্রবাহিত হইয়া গতিশীল জীবনের অনিত্যতা ঘোষণা করিতেছে। প্রস্ফুটিত কুসুম সুবাস বহন করিয়া মৃদুমন্দ মলয়হিল্লোল সমস্ত শালকুঞ্জকে আমোদিত করিতেছে। নির্ব্বাণোম্মুখ দীপশিখাগুলি মিঠিমিঠি জ্বলিতেছে। সমবেত জনতা এক চরম মূহুর্ত্তের অপেক্ষায় উৎসুক নেত্রে সমাসীন। নিস্তব্ধ ধরণী। সহসা নিস্তব্ধ প্রকৃতির নীরবতা ভঙ্গ করিয়া ধ্বনিত হইল, “আনন্দ, তথাগতের অর্বত্তমানে তোমরা মনে করিওনা- ‘আমাদের শাস্তা নাই, আমাদের শিক্ষাগুরু অন্তর্হত হইয়াছেন।’ তথাগত যে ধর্ম্ম বিনয় তোমাদিগকে উপদেশ করিয়াছেন, ইহাই তোমাদের শিক্ষাগুরু। তথাগতকে তোমরা যেরূপে সম্মান ও সম্বোধন করিতে, অতঃপর কনিষ্ঠ ভিক্ষু জ্যেষ্ঠ ভিক্ষুকে সেরূপ করিবে। সম্মিলিত ভিক্ষুসঙ্ঘ প্রয়োজন বোধে ক্ষুদ্রাদি ক্ষুদ্র শিক্ষাপদ পরিবর্ত্তন করিতে পারিবে। বুদ্ধ, ধর্ম্ম, সঙ্ঘ অথবা আর্য্যমার্গ সম্বন্ধে কাহারো কোন সংশয় থাকিলে এখন জিজ্ঞাসা করিতে পার।” সকলেই নীরব রহিলেন। কারণ তাঁহাদের সর্ব্ব কনিষ্ঠও স্রোতাপন্ন ছিলেন। ভগবান্ পুনরায় বলিলেন, “ভিক্ষুগণ। যৌগিক পদার্থ মাত্রেই ভঙ্গুর, ক্ষয়শীল।অপ্রমত্তভাবেই স্বকার্য্য সম্পাদনা কর।” ইহাই তথাগতের অন্তিমবাণী। (সূত্র : মহাপরিনিব্বান সুত্তং – রাজগুরু শ্রী ধর্ন্মরত্ন মহাস্থবির)।

মানবতাবাদী বৌদ্ধময় ভারতবর্ষ! ব্রাহ্মণ্ পুরোহিত ও হিন্দু রাজ শক্তিই হিংস্র জীব-জানোয়ারের চেয়েও ভয়ঙ্কর মানুষরূপী কোন জীব। ব্রাহ্মণরা নিজেদের সংরক্ষণকে ধর্ম বলে থাকে। ধর্মকে আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গে জুড়ে অন্ধবিশ্বাসের সৃষ্টি করায়। সেইজন্য তাদের সংরক্ষণের উপর আলোচনা হয় না।
অপরদিকে বহুজনের সাংবিধানিক অধিকারকে (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) সংরক্ষণ বলে তাকে আলোচনার প্রধান বিষয় রূপে উপস্থাপন করে থাকে এবং সমস্ত প্রকার শক্তিসামর্থ্য লাগিয়ে তার বিরোধিতা করে থাকে। ধর্মরূপ চাদরের মধ্যে ব্রাহ্মণের সংরক্ষণ সুরক্ষিত হয়ে আছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়:
“বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি।
শুষ্ক হৃদয় লয়ে আছে দাঁড়াইয়ে ঊর্ধমুখে নরনারী।
না থাকে অন্ধকার, না থাকে মোহপাপ, না থাকে শোকপরিতাপ।
হৃদয় বিমল হোক, প্রাণ সবল হোক, বিঘ্ন দাও অপসারি।।
কেন এ হিংসাদ্বেষ, কেন এ ছদ্মবেশ, কেন এ মান-অভিমান।
বিতর’ বিতর’ প্রেম পাষাণহৃদয়ে, জয় জয় হোক তোমারি।”

বৌদ্ধ বিহার ভেঙ্গে গড়ে তোলা হয়েছে বিহার STATE OF INDIA, হিন্দুরাজনীতির তিরুপতি বালাজী, ও পুরীর জগন্নাথ মন্দির”! নেপালে কাশ্যপবুদ্ধের বৌদ্ধনাথ্ স্তুপ Memorial বিরাটকায় বৌদ্ধ স্তুপ কাঠমান্ড়ু নগরে বিরাজমান! অষ্টবিংশতি বুদ্ধবন্দনা আলোকে নেপালের (কাঠমান্ডু City) উঁচু হাইমাউন্ডে অবস্থিত বিরাটকায় বৌদ্ধ স্তুপটি কাশ্যপবুদ্ধের বৌদ্ধধর্মের স্মারকমালা বিরাজমান! বৌদ্ধ ভারত মহাকাব্যের মহাকবি সম্রাট অশোক বুদ্ধগয়া মহাজনসমুদ্রে জনগণমনের মুক্তির মঞ্চে দাঁড়িয়ে জলদ গম্ভীর স্বরে ঘোষণা করেছিলেন, “অহিংসা মানুষের ধর্ম এবং “সত্য মেব জয়তে।” “অষ্ঠাদশ পুরাণানি রামস্য চরিতানি”। ভাষায়াং মানবঃ শ্রুত্বা রৌরবং নরকং ব্রজেৎ।। অর্থাৎ ব্রাহ্মণ ব্যতীত জনসাধারণ রাম কাহিনীসহ ১৮ পুরাণ সাহিত্যসমূহের ভাষা শ্রবণে (মৃত্যুর পর) রৌরব নামক ভয়ঙ্কর নরকেই প্রবেশে বাধ্য হবেন।” কথায় বলে, “শূদ্র সন্তানগণ চর্তু ভেদ ১৮ শাস্ত্র অধ্যয়ন করার পর ও ব্রাহ্মণ সন্তানদের মতো পন্ডিত হতে পারবেন না। অনেক আগে প্রাচীন বৌদ্ধযুগে চট্টগ্রামের বৌদ্ধগণ by force রোহিঙ্গা মুসলমান হয়েছিলেন ! আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো জয় বাংলার ইতিহাস!

বাংলা এবং ভারতীয় সভ্যতার প্রাণপুরুষ গৌতমবুদ্ধ! এখন আমাদের প্রশ্ন : তুরস্ক ও আরবের মুসলমান শাসক (নাদির শাহ ও বকতিয়ার খিলজি) ও যোদ্ধগণ কি শুধু বৌদ্ধধর্ম এবং বৌদ্ধ বিশ^বিদ্যালয়সমূহ ধ্বংস করতে ভারতে এসেছিলেন? দক্ষিন এশিয়ায় সম্রাট অশোকের প্রচারিত গৌতমবুদ্ধের বৌদ্ধধর্ম হিন্দুত্ববাদীদের ইতিহাস চুরির চাতুর্য ও রক্তাক্ত সা¤প্রদায়িক জোয়ারে কোথায় হারিয়ে গেল? হাজার বছর যাবত ভারতে দুঃখের দহনে করুন রোদনে তিলে তিলে ক্ষয় হচ্ছে ২৫ কোটি দলিত জনগণ। লাখো দলিত প্রতি বছর বৌদ্ধধর্ম গ্রহন করে “বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি” উচ্চারণ করছেন হিন্দুত্বের জাত পাঁতের খাবা খেকে রক্ষা পেতে। বাংলা ভাষা পালি ভাষার বিবর্তিত রূপ। চর্যাপদের আগে বাংলাভাষায় বৌদ্ধ ত্রিপিটক বৌদ্ধধর্মের সাথে হারিয়ে যাবার কথা ছিল না। ইতিহাসের উত্তমপুরুষ গৌতমবুদ্ধের সময় থেকে হিসাব করলে ও বাংলা বর্ণমালার বয়স প্রায় ২৬০০ বঙ্গাব্দ। হিন্দু শাসকগণ মুসলমান শাসকদের সাথে একত্রিত হয়ে হিজরি সালকে বিকৃত করার কথা ছিল না।

সিংহল অভিযানের প্রানপুরুষ বিজয় সিংহ এর জন্ম তারিখ বা তাঁর ঠিকুজি বঙ্গাব্দের বাইরে কেন? ইতিহাস তো ছেলের হাতের মোয়া নয়। ২৬০০ বছর পূর্বে শ্রীলংকার মহাবংশ এবং দ্বীপবংশ শীর্ষক ঐতিহাসিক গ্রন্থদ্বয়ের মতে রাজা বিজয় সিংহ বাঙালি ছিলেন। আজ ১৪১৮ বঙ্গাব্দ লেখা হয় হিজরি (১৪৩২) সালকে বিকৃত করে। লেখক শোভন সোমের মতে “ইতিহাসের দূরতম প্রান্তে যদি চর্যাগীতি রাখি, তা হলে তার মধ্যে সাহিত্য সঙ্গীত নৃত্য এবং জীবনচর্যার এক এমন সমন্বয় দেখি সে সমন্বয়ে বর্তমানে মানুষের কোন ও একটি বিশেষ সৃষ্ঠিকে নিয়ে ঘটা সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ঠিতে আমরা সাহিত্য সঙ্গীত নৃত্যের সমন্বয় দেখলে ও আজকের বিশেষায়নে মানুষের সৃষ্ঠির এক একটি ক্ষেত্র নিজের সীমার মধ্যে স্বতন্ত্র হয়েছে (পৃ: ২৬, দেশ, কলিকাতা, ১৯ আগষ্ট, ২০০০)।”

অষ্টবিংশতি বুদ্ধবন্দনার আলোকে সিন্ধুসভ্যতায় বৌদ্ধধর্ম! বিভিন্ন গবেষণার পর পন্ডিতেরা স্বীকার করেছেন যে, আজকের বাংলাভাষা পালিভাষার বিবর্তিত রূপ। বাংলাদেশে অষ্ঠাদশ শতাব্দিতে বাংলা ভাষায় কোন বৌদ্ধগ্রন্থ খুঁজে না পাওয়ার কারন কি ছিল? বৌদ্ধ পাল রাজাদের প্রতিষ্ঠিত বিক্রমশীলা ও ওদন্তপুরী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ কোথায় হারিয়ে গেল? প্রসঙ্গত: ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী সেনাগণ বাংলাদেশের শহীদ মিনার ভেঙে ফেলার মতো বখতিয়ার খিলজির তুর্কী সেনাগণ পরম উৎসাহে বৌদ্ধ বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয়কে গঙ্গাগর্ভে ডুবিয়ে দিল।

স¤প্রতি বাংলা নববর্ষ সম্বন্ধে বিবিধ প্রবন্ধ পড়ে আমরা জানতে পারলাম যে ১৫৫৬ খৃষ্ঠাব্দ থেকে মোগল সম্রাট আকবর কর্তৃক বাংলাদেশে বাংলা সন প্রচলিত হয়। প্রসঙ্গত: প্রতিবছর নববর্ষ উপলক্ষে ১৪ বা ১৫ই এপ্রিল জুড়ে থাইল্যান্ড, লাওস, বার্মা, ভারত, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, সিংগাপুর ও ইন্দোনেশিয়ায় “পানি খেলা সহ বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তবে বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে সোনার বাংলার অন্যতম শাসক মহাবীর ঈশা খাঁ সম্রাট আকবরের সেনাপতি মানসিংহের সাথে মুখোমুখি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন। বুদ্ধমূর্তি সম্রাট অশোক, পাল রাজত্বকাল এবং বাংলা ভাষার আদিমতম নিদর্শন চর্যাপদের না বলা ইতিহাসের অভিব্যক্তি “হে ইতিহাস কথা কও।” হিন্দুরাজনীতি ভারতবর্ষে বৌদ্ধ ইতিহাস ধ্বংস করতে ‘ইসলামী সাল হিজরিকে’ চন্দ্র এবং সূর্য্য ক্যালেন্ডারের দোহাই দিয়ে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে ‘আল্লাহ উপনিষদ রচনা’ সম্পাদন করার পর বঙ্গাব্দের মিথ্যা ইতিহাস রচনায় ষড়যন্ত্র করেছিল। হিন্দু রাজনীতি বাঙালি জাতির ঐতিহ্যকে বিপন্ন করে বৌদ্ধদের বুদ্ধগয়ার মহাবোধি মন্দির দখল করার পর ১৯৯২ সালের ০৬ ডিসেম্বর ‘বাবরি মসজিদ ভেঙে’ রাম জন্মভ‚মি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছে। মা গঙ্গা সহ সূর্য্য দেব ও চন্দ্র দেবকে হিন্দু রাজনীতি দখল করে আছে। ভারতে অহিন্দুদের অস্তিত্ব সংকট প্রকট হয়ে ওঠেছে।

১২০১ খৃষ্ঠাব্দে বখতিয়ার খিলজির বাংলাদেশ আক্রমন করার পর এইভাবে বৌদ্ধ পালরাজাদের বুদ্ধাব্দ, বৌদ্ধজাতি কোথায় হারিয়ে গেল? বুদ্ধপূর্ণিমার নাম ছিল বৈশাখী পূর্ণিমা এবং থাইল্যান্ড, লাওস, বার্মা, কম্বোডিয়া, শ্রীলংকা সহ বৌদ্ধবিশ্বে “বৈশাখ বা থাই ভাষায় বিশাখা পূজা” নামে আজ ও বিরাজমান। বুদ্ধজয়ন্তীর বৈশাখ মাস দিয়ে বাংলা মাস শুরু হয় এবং প্রাচীন বাংলা সহ বৌদ্ধ বিশ্বের পঞ্জিকায় আজ ২৫৫৬ বুদ্ধাব্দ। রাতারাতি ইতিহাস তৈরী হয় না। ভবিষ্যতে বুদ্ধাব্দ থেকে বঙ্গাব্দ লেখা হবে। ১৪১৮ নববর্ষ উপলক্ষে টরন্টোর ওমনি ২ এর “আমন্ত্রন নামক বাঙলা টিভি ” বৌদ্ধধর্মের বিভিন্ন পরম পূজনীয় দৃশ্যদিয়ে তাঁদের “নববর্ষের মঙ্গলাচরন অনুষ্ঠান” শুরু করেন।

আফগানিস্তানের বামিয়ান পর্বতমালা খেকে রাজশাহীর পাহাড়পুর এবং নরসিংদীর উয়ারী বটেশ্বরে আবিস্কৃত হলো লক্ষ লক্ষ বুদ্ধমূর্তি। মিশরের মুসলমানগণ তাঁদের পূর্বপুরুষগণের পিরামিডকে নিয়ে গর্ববোধ করেন। গৌতমবুদ্ধের বোরোবুদুর পূজনীয় ধর্মস্থান ইন্দোনেশিয়ার মুসলমানদের কাছে “জাতীয় ঐতিহ্যের সুতিকাগার।” বাংলা বিশ্বকোষে রাজপুত্র সিদ্ধার্থের (গৌতমবুদ্ধ) বঙ্গলিপি অধ্যয়ন করার ঐতিহাসিক প্রমান বিরাজমান। বাংলা বর্ণমালার বয়স ২৬০০ বছর এবং গৌতমবুদ্ধের মূর্তির মধ্যে বাংলা বর্ণমালা এবং বাঙালির অস্তিত্বের বয়স নিহিত আছে। পরিবর্তনশীল জগতে আরবীয় রাজনীতির পূর্বে সম্রাট ধর্মপাল এবং রাজা বল্লালসেন বাংলাদেশের জনগণমনের অধিনায়ক ছিলেন। গণতন্ত্রের আলোকে বৌদ্ধদের বুদ্ধবর্ষ সম্ব›েদ্ধ কোন আলোচনা ব্যতীত ৫৯৮ হিজরী মুতাবিক ১২০১ সালে বখতিয়ার খিলজী কর্তৃক বাংলা বিজয় হলে রাজকর্মে এই হিজরী সন ব্যবহার হতে থাকে বাঙালি সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত এবং সম্রাট অশোকের শিলালিপির ইতিহাস অস্বীকার করে। এই ঐতহিাসকি পূঞ্জীভ‚ত দুঃখ ও বদেনায় বৌদ্ধগণ কমেনে রাখে আঁখি বারি চাপয়িা! আমরা বৌদ্ধগণ সদাশয় ভারত সরকাররে নকিট আনন্দবাজাররে উক্ত র্কাটুনরে ভাষার বরিুদ্ধে যথাযথ বচিাররে আশা রাখ।ি ইউরোপে নাৎসিদের হাতে ইহুদি নির্যাতনের মতো ভারতে (দক্ষিন এশিয়া) ব্রাহ্মণ শাসক পুষ্যমিত্র (খৃষ্ঠপূর্ব ১০০), রাজা শশাঙ্ক (৭ম শতাব্দী), ও শংকরাচার্য (৮ম শতাব্দী), সহ হিন্দুত্ববাদীদের হাতে বৌদ্ধ জনগণ ও দলিত নির্যাতন সহ বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের ইতিহাস লেখা হলে পাঠকগণ দেখবেন, তা হলোকাষ্টের চেয়ে কম বীভৎস নয়। হিন্দুত্ববাদীরা মুখে বলে তারা ধমীয় দল, আসলে তারা একটি ফ্যাসিষ্ঠ দল হয়ে আজ বৌদ্ধদের সবচেয়ে পবিত্র তীর্থভ‚মি বুদ্ধগয়ায় “ মহাবোধি মন্দির ” হাজার হাজার বছর পর্যন্ত দখল করে আছে। রাজা শশাঙ্ক ৭ম শতাব্দীতে বুদ্ধগয়ায় মহাবোধি মন্দিল দখল করে বোধিবৃক্ষ ধ্বংস করার ইতিহাস চীনা পরিব্রাজক ইউয়েন সাং তাঁর ভ্রমন কাহিনীর ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকার উক্ত কার্টুন আবার বুদ্ধ পূর্ণিমাকে বদলায়ে হিন্দু নামকরন করার জন্যে কি পশ্চিমবঙ্গে বুদ্ধ পূর্ণিমায় কোন সরকারি ছুটি বা বুদ্ধানুভ‚তি নেই?

বুদ্ধগয়ায় হিন্দুরাজনীতির শিবলিঙ্গ ষড়য়ন্ত্র কেন? ভারতে হিন্দুধর্মের পূর্বে কাশ্যপব্দ্ধুর বৌদ্ধধর্ম! প্রায় ৫ হাজার পূর্বে বৈদিক রাজা ঈন্দ্র সিন্ধুসভ্যাতার মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পার কাশ্যপব্দ্ধুর প্রচারিত বৌদ্ধধর্ম ধ্বংস করেছিলেন। বুদ্ধভ‚মি বাংলাদেশে ধর্মের গলা টিপে বুদ্ধমন্দির ধ্বংসই কি ইসলাম? বৈদিক পূর্ব কাশ্যপব্দ্ধুর বৌদ্ধধর্ম আলোয় আলো এবং রাজর্ষি বোধিসত্তে¡র প্রতœতাত্তিক নিদর্শন মহেঞ্জোদারোর মিউজিয়ামের বাইরের দেওয়ালে বিশাল রেপিকায় বিরাজমান। পবিত্র পালি ত্রিপিটকের দীর্ঘ নিকায়ের চক্কবত্তি সীহনাদ সূত্তান্ত (৩য় খন্ড ২৬ নং সূত্র) অনুসারে বৈদিকপূর্ব চক্রবর্তি রাজর্ষি বোধিসত্তে¡র ছবি এবং সুত্তনিপাতের ৩ নম্বর খ¹বিষাণ সূত্রানুসারে গন্ডারের ছবি মহেঞ্জোদারোর মিউজিয়ামের বাইরের দেওয়ালে বিশাল রেপিকায় বিরাজমান। বাঙালি বৌদ্ধ সংস্কৃতির গভীর প্রভাব তিব্বতি বজ্রযানী বৌদ্ধধর্মে আজ ও বিরাজমান। ” নৈতিক বিবর্তনে সামাজিক বিভিন্ন চিত্র আমাদের চোখে পড়ে। সিন্ধুসভ্যতায় কাশ্যপবুদ্ধের বৌদ্ধ সংস্কৃতির সর্বভারতীয় নৈতিক শক্তিকে বৈদিক জাতিভেদ প্রথা ধ্বংস করার ফলে আজ ভ্রষ্ঠাচারের দহনে করুন রোদনে তিলে তিলে ভারত সহ দক্ষিন এশিয়ার জনতা ক্ষয় হচ্ছে। ফোটে মনের কথা বলতে পারে নি।

কথাশিল্পী শওকত আলীর লেখা প্রদোষে প্রাকৃতজন ‘এই উপন্যাসটি সম্পর্কে বলছেন, “ একসময় শেখ শুভদয়া নামে একটি সংস্কৃত বই হাতে আসে। কেউ বলেছে সেন রাজত্বের পরপরই ওটা লেখা হয়েছিল। শেখের শুভ উদয় এই অর্থে। শেখ মানে মুসলমান। ওই বইয়ের মধ্যে কিছু কিছু গল্পের মতো পেয়েছি। যেমন একটা দৃশ্য ওখানে পেয়েছি যে অশ্ব বিক্রেতারা নৌকায় চড়ে অশ্ব বিক্রি করতে এসেছে। অশ্ব বিক্রি হয়ে গেছে। উপন্যাসটি লেখার চিন্তাটা এ কারণেই এসেছিল যে দক্ষিণ এশিয়ার এই প্রান্তে মুসলমানের সংখ্যা এত বেশি হওয়ার কারণ কী?“

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!