সোনা কান্তি বড়ুয়া : আজও আমার মনে পড়ে থাইল্যান্ড বা শ্যামদেশে রাজধানী ব্যাঙ্কক এয়ারপোর্টের নাম “সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট।” থাইল্যান্ডের বর্তমান রাজার বাবা ভূমিবল অডুল্যডেজ (অতুল্যতেজ) ২০০৬ সালে ৬ জুন সম্রাট অশোকের পাঠানো বৌদ্ধ মিশনের গৌরবদৃপ্ত স্মৃতি রার্থে ৮ হাজার একর জায়গা জুড়ে ব্যঙ্কক সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করেছেন। ব্যাঙ্কক এয়ারপোর্টের বিশাল বন্দরের সিংহদুয়ার জুড়ে গৌতমবুদ্ধের সুবর্ণমূর্তি সশ্রদ্ধায় বিরাজমান এবং আজ উক্ত রূপসী বিমানবন্দর বিশ্বমানবের মহামিলন মেলায় পরিনত হয়েছে। ২৩০০ বছর পূর্বে বাঙালি মহাভিু সোনা মহাথের এবং ওড়িষ্যার মহাভিু উত্তরা মহামান্য সম্রাট অশোকের ধর্মীয় রাজদূত ছিলেন!

ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে হৃদয় বাংলাদেশ – বাঙালির আত্মপরিচয়ের সন্ধান! বৌদ্ধ পালরাজত্বের যুগে বাঙালি বৌদ্ধগণ (১) ইন্দোনেশিয়ায় জাভাদ্বীপে বড়বৌদ্ধ বা বোরোবুদুর অভিনব বৌদ্ধ বিহারসহ অনেক বৌদ্ধস্থপ বা পেগোডা স্থাপন করেন (২) বৌদ্ধ পালরাজত্বে পাল রাজ কন্যা তারা দেবী ইন্দোনেশিয়ায় জাভাদ্বীপে প্রাচীন বৌদ্ধবিহার নির্মানসহ হৃদয় বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন; (৩) মহাত্মা বৌদ্ধ ভিক্ষু ও বৌদ্ধ পন্ডিতগণ থাইল্যান্ড, মায়ানমার, লাওস, কম্বোডিয়া সহ পূর্ব এশিয়া জুড়ে বাংলা মুং বা বাংলার প্রাচীন বৌদ্ধধর্মের মুখচ্ছবি, ঐতিহ্য এবং পালি ভাষা প্রতিষ্ঠা করেন।

অশোকের শিলালিপির ভাষায় বাংলা ব্যাকরণের সাথে পালি, (১) থাই, (২) বার্মা, (৩) কম্বোডিয়া, (৪) লাওস ও (৫) শ্রীলংকার ব্যাকরণের সাদৃশ্য বিদ্যমান এবং অশোকের শিলালিপির ভাষা (বা ব্রাহ্মী ভাষা ) ৪০টা ভাষার জন্মদাতা থেকে দেব নাগরি (সংস্কৃত) বর্ণমালা, বাংলা বর্ণমালা সহ উক্ত ৫টা দেশের বর্ণমালাসমূহের উৎপত্তি হয়েছে। থাই ভাষায় মানুষ (মানুত), নমস্কার, আহার, পিতা, (বিডা) মাতা (মাডা) এবং অনুসরনী (অনুসারন), ভিু (ভিখষু), ধর্মশাস্ত্র (থাম্মাসাত) এবং বিশ্ববিদ্যালয় (মহাবিদ্যালয় বা মহা উইথিয়ালায়) ইত্যাদি।

বিশ্ববৌদ্ধ সাহিত্য সঙ্গীতের সুরে ছন্দে, কথায় নৃত্যে চিত্রে ভাষ্কর্যে চলচিত্রে, ক্রীড়ায় তার আবাদ স্বর্ণমঞ্জুরী ফুটিয়েছে বিগত ২৬০০ বছরের অবদান বৌদ্ধধর্ম, ধ্যানে ও চিত্তকর্ষণে। বাংলাদেশের চর্যাপদ বৌদ্ধ সাহিত্য! প্রতœতাত্বিক, ভূতাত্বিক, পুরাতত্ত¡, নৃতত্ব ও ভাষাতত্বের আলোকে বাংলাভাষা পালিভাষার বিবর্তিত রূপ! এবং বিশ্ববৌদ্ধ ইতিহাস সহ বাংলা ব্যাকরণের (থাই উচ্চারণ : ওয়াইকরণ) সাথে থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বার্মা (মিয়ানমার), লাওস ও কম্বোডিয়ান ভাষাসহ পালি ব্যাকরনের মিল আছে। সম্রাট অশোক বাঙালি ছিলেন এবং তিনি পালি ভাষার মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক দেশে বাংলা ভাষা ও ধর্ম প্রচার করেছিলেন। থাইল্যান্ডের ভাষায় বাংলা শব্দমালা ও বাঙালির আত্মপরিচয়ের সন্ধান! থাইল্যান্ডে সম্রাট অশোকের নামে রাজধানী ব্যঙ্ককে রাজপথের নাম সয় অশোক এবং বৌদ্ধ বিহারের নাম অশোকারাম ।

সম্রাট অশোকের বিশ্বজয়ে বাংলা শব্দমালা প্রসঙ্গ! থাইল্যান্ডসহ পূর্ব এশিয়া মহাদেশ জুড়ে সর্বত্র বুদ্ধ নাটক ও চর্যাপদের প্রাচীন বাংলা সভ্যতা ও সংস্কৃতির স্বর্ণমঞ্জুরী ফুটিয়েছে। প্রাচীন যুগে সুবে বাংলা মানে বাংলা, বিহার ও ওড়িষ্যা নিয়ে একটি প্রদেশ ছিল। থাইল্যান্ডে (১) ৭০০ সাল থেকে ১,১০০ সাল দ্বারাবতী যুগ (২) ১২০০ সাল থেকে ১৪০০ সাল সুখোথাই যুগ (৩) ১৪০০ সাল থেকে ১৮০০ সাল আয়ুধায়া (অযোধ্যা) যুগ এবং ১৮০০ সাল থেকে বর্তমান (২০২৩) ব্যঙ্কক যুগ (পিরিয়ড)। প্রসঙ্গত: থাইল্যান্ডে হাজার হাজার বুদ্ধমন্দির বিরাজমান কিন্তু দক্ষিন এশিয়ায় (ভারত, পাকিস্তান বাংলাদেশে) মাটির নীচে আজ ও হাজার হাজার বুদ্ধমন্দির জনতার চোখে পড়েনি।

সম্রাট অশোক ব্রাহ্মণভিত্তিক বৈদিক ধর্মকে ত্যাগ করে মানবতাবাদী গৌতমবুদ্ধ (রাজপুত্র সিদ্ধার্থেও) মতবাদকে গ্রহন করে তাঁর প্রণামকে চিরকালের বিশ্বপ্রাঙ্গনে রেখে গেলেন শিলাস্তম্বে ও অশোকচক্রে। ব্যাংকক শহরকে বলা হয় “ক্রুংদেব মহানগর” (বা দেব মহা নগর)। এই শহরে সম্রাট অশোকের নামে বৌদ্ধমন্দির (অশোকারাম) ও রাজপথের নাম সয় অশোক (সুখুমভিত রোডে) বিদ্যমান। থাই ও শ্রীলংকার ছেলে মেয়েদের নাম বাংলা নামের মতো নাম আনন্দ, অভিজিৎ, করুনা, সুন্দরী ও রত্না ইত্যাদি।

সুবর্ণভূমি নাম তো বাংলা শব্দ এবং সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (২৩০০ বছর আগে) দক্ষিনপূর্ব এশিয়ার নাম সুবর্ণভূমি! গৌতমবুদ্ধের মহাকর“না ও মৈত্রী বিশ্বমানবতায় আলোকিত হয়ে ওঠেছিল। দ্বাদশ শতাব্দীর থাইল্যান্ডের প্রথম রাজধানীর নাম সুখোদায় (বা সুখের উদয়) এবং প্রথম মহারাজার নাম রামকাম হেং। সম্রাট অশোক ব্রাহ্মণভিত্তিক বৈদিক ধর্মকে ত্যাগ করে মানবতাবাদী রাজপুত্র সিদ্ধার্থের (গৌতমবুদ্ধ) মতবাদকে গ্রহণ করে তাঁর প্রণামকে চিরকালের বিশ্বপ্রাঙ্গনে রেখে গেলেন শিলাস্তম্বে (ও অশোকচক্রে)।

থাই ভাষায় বাংলা শব্দমালা কেন? আমি থাইল্যান্ডে ব্যঙ্কস্থ বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব সঙ্ঘ পত্রিকার সহ সম্পাদক ছিলাম দীর্ঘদিন যাবত থাইভাষা অধ্যয়ন করেছি (ও বাংলাভাষার শিক ছিলাম)। থাই অভিধানে অনেক বাংলা শব্দ বিরাজমান। অভিধানকে থাই ভাষায় “বচনানুক্রম” এবং মিউজিয়ামকে থাই ভাষায় “বিবিধভান্ড” বলা হয়। বাংলা ব্যাকরণের (থাই উচ্চারণ : ওয়াইকরণ) সাথে থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বার্মা (মিয়ানমার), লাওস ও কম্বোডিয়ান ভাষাসহ পালি ব্যাকরণের মিল আছে। সম্রাট অশোক বাঙালি ছিলেন এবং তিনি পালি ভাষার মাধ্যমে পৃথিবীর অনেক দেশে বাংলা ভাষা ও ধর্ম প্রচার করেছিলেন।

“দক্ষিণ এশিয়া হতে বৌদ্ধধর্ম বিতাড়নে” সংস্কৃত ভাষা প্রেমী ব্রাহ্মণ পন্ডিত ও হিন্দুরাজাদের হাত ছিল এবং তাদের অত্যাচারে ভারতে জাতিভেদ প্রথা প্রতিষ্ঠিত হয়ে মানবাধিকারের সব দরজা জানালা বন্ধ হয়ে গেল। ব্রাহ্মণও হিন্দুশাসকগণ হিন্দুধর্মের অপব্যবহার করে ফতোয়া দিয়েছিলেন, “যারা ভারতের (পান্ডব বর্জিত দেশে) সীমা অতিক্রম করে অন্যদেশে যাবেন, তাদেরকে প্রায়শ্চিত্ত করার বিধান অনুসরন করতে হবে।” ভারত ফেরতগণ বিদেশে গিয়ে বৌদ্ধধর্ম দেখার পর স্বদেশে এসে বৌদ্ধধর্ম আলোচনার ভয়ে হিন্দুশাসকগণ ভীত ছিলেন!

বাংলা ভাষা বৌদ্ধ চর্যাপদের অবদান হলে, বঙ্গাব্দ বুদ্ধাব্দকে বাদ দেয় কেমন করে? ইতিহাস তো রাজনীতির হাতের পুতুল নয়। থাইল্যান্ডে বাংলা এবং হিন্দু শাসকগণের বৌদ্ধধর্ম ধ্বংস প্রসঙ্গ! বিশ্বে জয় বাংলা। হিন্দু আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জাগো বাংলাদেশ। বিশ্ববিজয়ী দক্ষিন এশিয়ার (ভারত) সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোকের থাইল্যান্ডে বাংলা নামে একটা জেলার নাম হল কেন? থাইল্যান্ডে একটা জেলার নাম বাংলা মুং এবং ব্যঙ্কক খেকে প্যাতায়া যাবার পথে বাংলা মুঙ শীর্ষক থানা চুনবুরি (জলপুরী) প্রদেশে অবস্থিত। বাংলাদেশের প্রাচীন বৌদ্ধগণ হাজার বছর পূর্বে থাইল্যান্ডে কি বসতি স্থাপন করেছিলেন?

অবিকল বাংলা নামে থাইল্যান্ডের একটা অঞ্চলের নামকরণে ঐতিহাসিক ভূমিকা নিশ্চয় আছে। দুঃখের বিষয় এই যে, চট্টগ্রামে হ অলায় হিন্দু শাসকগণ বুদ্ধমূর্তিকে কালাচাঁদ ঠাকুর বানিয়েছে, সীতাকুন্ডে বৌদ্ধমন্দির দখল করেছে. এবং ভারতে বুদ্ধগয়া মহাবোধি বিহারসহ কর্ণাটকে (হায়দরাবাদের উপকন্ঠে) প্রসিদ্ধ বুদ্ধমূর্তিকে তিরুপতি বালাজি নামকরন করে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে।

নালন্দা বৌদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের পাহারপুড়ের বৌদ্ধ মহা বিহারের অনুকরনে ১৯৬৮ সালে বৌদ্ধভিক্ষু মহাত্মা কীর্তিবুদ্ধ মহাথের থাইল্যান্ডের চুলবুরি প্রদেশে বাংলা জেলায় (মুং) প্রতিষ্টা করেছেন চিত্তভবন বৌদ্ধ কলেজ এবং বাংলাদেশের চট্টগ্রামের কতিপয় বৌদ্ধভিু উক্ত কলেজে অধ্যয়ণ ও গবেষণায় নিযুক্ত আছেন। থাইল্যান্ডে বুদ্ধ মন্দির মাটির উপরে অবস্থিত, দুর্ভাগ্যবশত: বাংলাদেশে বাংলামায়ের বুকের ভেতর মাটির নীচে শত শত বুদ্ধমূর্তি ও বৌদ্ধবিহার হাজার বছর যাবত লুকিয়ে থাকার কারণ কি?

সেন বাংলায় বৌদ্ধেরা মুসলমান হল কেন? রক্তাক্ত হৃদয় বাংলার বৌদ্ধগণ! ব্রাহ্মণ্যবাদের গভীর ষড়যন্ত্রে বৌদ্ধগণ সর্বহারা দলিত হল এবং রাজা শশাঙ্কের বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞসহ সেন রাজাদের জাতিভেদ প্রথার যাঁতাকলে দুঃখের দহনে করুন রোদনে তিলে তিলে হয়ে ১২০২ সালে বাংলাদেশের বৌদ্ধগণ মুসলমান হলেন। বাংলাদেশে বৌদ্ধধর্ম ধ্বংসের বিভিন্ন কারণসমূহ (১) হিন্দু রাজা শশাঙ্ক (৭ম শতাব্দী), (২) রাজা বলাল সেনের মহামন্ত্রী হলায়ুধ মিশ্র ও হরিসেন (৩) ১২শ শতাব্দীর বখতিয়ার খিলজির মৌলবাদ সন্মিলিতভাবে বৌদ্ধধর্ম ধ্বংস করেছিল।

ব্যাংকক শহরকে বলা হয় “ক্রুংদেব মহানগর” (বা দেব মহা নগর); এই শহরে সম্রাট অশোকের নামে বৌদ্ধমন্দির (অশোকারাম) ও রাজপথের নাম সয় অশোক বিদ্যমান। থাই ছেলে মেয়েদের নাম বাংলা নামের মতো নাম আনন্দ, অভিজিৎ, করুণা, সুন্দরী ও রত্না ইত্যাদি। থাইল্যান্ডের রাজনীতি ও ধর্ম চির স্বাধীন এবং বর্তমান রাজার বাবা নাম ভূমিবল অতুল্যতেজ (নবম রাম) এবং মা রানীর (রাজিনী) নাম শ্রীকীর্তি (সিরিকিত)। থাইল্যাণ্ডের প্রদেশের নাম: নগর প্রথম (নাকন প্রাথম), সুপানবুরি (সুবর্ণ পুরী), জলপুরী (ছনবুরি ও ফাত্যায়া) ও নগরশ্রী ধর্মরাষ্ট্র (উচ্চারণ : নাকন শ্রী তাম্মারাট), অযোধ্যা (আয়োধায়া) ইত্যাদি। জাদুঘরকে থাইভাষায় ‘বিবিধ ভান্ড’ ও সঙ্গীত একাডেমীকে ‘সঙ্গীত শালা’ বলা হয়। কলেজকে থাইভাষায় বিদ্যালয় (উচ্চারণ : ওইথ্যালয়) এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে মহাবিদ্যালয় বলা হয়। থাইভাষায় স্বরবর্ণ ১৫টি ও ব্যঞ্জনবর্ণ ৪৪টা। থাইল্যান্ডে হৃদয় বাংলাদেশ পালি (প্রাচীন মাগধি ও বাংলা) ব্যাকরনই থাই, বার্মা (মা য়ানমার), শ্রীলংকা, লাওস ও ক¤ো^ডিয়া ভাষারসমূহের ব্যাকরণ।

বিশ্বের ধর্ম প্রচারকদের মধ্যে একমাত্র গৌতমবুদ্ধ (রাজপুত্র সিদ্ধাথ) ২৬০০ বছর আগে বঙ্গলিপি অধ্যয়ন করার গৌরবোজ্জ্বল কাহিনীর সচিত্র খন্ডচিত্র ইতিহাস ভারতের অজন্তা গুহায় আজ ও বিরাজমান। প্রসঙ্গত: উল্লেখযোগ্য যে, (নারায়ন স্যানালের লেখা বই “অজন্তা অপরুপা”) ভারতের অজন্তা গুহাচিত্রে বঙ্গবীর বিজয় সিংহের ঐতিহাসিক শ্রীলংকা জয়ের ইতিকথা বিরাজমান অথচ চর্যাপদ বা বাংলা বর্ষ গণনায় আজ ১৪৩০ বর্ষ হবার কথা নয়। আজ ২৫৬৭ বাংলা বর্ষ (থাইল্যান্ডের পঞ্জিকায় বুদ্ধবর্ষ ২৫৬৭) হবার কথা ছিল।

ভারত সম্রাট অশোকের রাজধানী ছিল পাটলিপুত্রে (পাটনা, বিহার) এবং সুবর্ণভূমিতে (থাইল্যান্ডসহ দ:পূর্ব এশিয়া) তাঁর পাঠানো বৌদ্ধ মিশনের ধর্মচক্র আজ ও ব্যঙ্কক মিউজিয়ামে (বিবিধ ভান্ড) সুপ্রতিষ্ঠিত এবং ভারত সরকারের স্মারক চিহ্ন (সারনাথের ধর্মচক্র বা এমবেম)সহ থাই শিামন্ত্রনালয়ের সরকারি জাতীয় স্মারক রুপে (বৌদ্ধরাষ্ট্রসমূহে) সগৌরবে দেদীপ্যমান হয়ে আছে। সুবর্ণভূমি অঞ্চলজুড়ে (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) সম্রাট অশোকের পাঠানো রাজকীয় বিশ্বশান্তি মিশন বৌদ্ধধর্মের আলোতে উজ্বল হলে ও; হিন্দু পুরাণ সাহিত্য জুড়ে হিন্দুরাজনীতি কোথাও সম্রাট অশোকের নাম লিপিবদ্ধ করলেন না। তদুপরি ২০১২ সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বরের ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টের রায় অগ্রাহ্য করে হিন্দুরাজনীতি হিন্দু বা বৈদিক বেদ বিরোধী গৌতমবুদ্ধকে হিন্দু বানিয়ে পূজনীয় বুদ্ধের পবিত্র ধ্যানভূমি বুদ্ধগয়া দখল করে বিশ্ববৌদ্ধ তীর্থযাত্রীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আনা পাই কামাচ্ছে।

জনতার প্রশ্ন : ১০০ বছর আগে ও ভারতীয় কোন ভাষায় বৌদ্ধ ত্রিপিটক ভারতবর্ষে কোথা ও ছিল না কেন? বাংলা ভাষা তো পালি ভাষার বিবর্তিত রুপ এবং থাই ভাষা ও পালি এবং সংস্কৃত শব্দমালায় সমৃদ্ধ হয়েছে। গৌতমবুদ্ধ হিন্দুর ভগবান বা অবতার হলে হিন্দু মন্দিরে বা হিন্দুর ঘরে ঘরে বুদ্ধপূজা হয় না কেন?

একমাত্র ভারত ও বৌদ্ধমন্দির সমূহ দখল করে রাখতে হিন্দুরাজনীতি বুদ্ধকে অবতার বানিয়ে মানবাধিকারের আইন, মনুস্মৃতির উপদেশ ও গীতার জাতিভেদ প্রথাকে অপমানিত করেছে।

বাংলাদেশে থাই রাজকুমারীর আগমন! (রেফারেন্স ভোরের কাগজ, ফেব্রæয়ারি ১৫, ২০১০)! থাইকুমারীর জন্যে ব্রহ্মপুত্রর চরে কুঁড়েঘর!
থাই রাজকুমারী মহাচাক্রী সিরিনধন এসো হে থাইল্যান্ডের রাজকুমারী বাঙালির স্বজন,
দেরী হয়ে গেল আসতে বাংলাদেশে ঘটাতে মিলন।
জয় হোক তোমার সারস্বত বিদ্বান সমাজে
মানুষেরে তুমি বাসিয়াছ ভলো অহিংসা পরম কাজে।
সুবর্ণভূমি জুড়ে আছে সম্রাট অশোকের ধর্মচক্র শান্তির বাণী,
স্বপ্নময়ী শ্যামদেশ আজকের থাইল্যান্ডে বাজে বিশ্বমৈত্রীর ধ্বনি।
ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চলে মধুকর ডিঙা বট তমালের নীল ছায়ায়,
বাঙালির হাতে বেঁধে দিও রাখি থাই বাংলাদেশের মিলনের আশায়।
আবেগে ছোঁয়া স্বপ্নমায়ায আবিষ্ট গাইবান্ধা বালুচর
ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব পারে থাই রাজকুমারীর অপরূপ কুঁড়েঘর।
ব্রহ্মপুত্রের বুকজুড়ে লেখা আছে বাংলার অব্যক্ত দীর্ঘ ইতিহাস;
শ্যামদেশের রাজকুমারীর পূর্ণ হবে কি জানার পুঞ্জীভূত অভিলাস?
সকালে দোয়েল পাখী উড়ে যায় ভরা যৌবনের ডাকে,
মনে আছে কি রাজকুমারীর যৌবনের স্মৃতি “ছাওফয়া” নদীর বাঁকে?
অনেক বছর ধরে বাংলার ইতিহাস চলে বেড়ায় দশদিক জুড়ে;
থাই সমুদ্র থেকে নিশীথের ব্রহ্মপুত্র বালাসীর ঘাট ঘিরে ঘিরে।

ছিলাম ‘সুখাথাই’ আয়োথায়া, রাজা রামকামহেং, চুঢ়ালঙ্খনের ধুষর জগতে;
কত জায়গায় ছিলেম আমি বিষ্ণুলোক প্রাচীনপুরী বাংলামুং ফাত্থায়াতে।
জগতের নানা দেশ ঘুরে ঘুরে আমি কান্ত শ্রান্ত কানাডায় বাঙালি পথিক
মন বলে থাই রাজকুমারীর সাথে কথা বলে দু দন্ড শান্তি পাবো ঠিক ।
মানবদেহ বাংলাদেশ এবং চর্যাপদে বাঙালির আত্মপরিচয়ের সন্ধান
ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক শেখড়ের সন্ধানে ইহা ও এই প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উলেখযোগ্য যে, আমরা ‘বৌদ্ধ চর্যাপদের’ সন্ধান পেলাম আজ থেকে ১০২ বছর আগে। ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে নেপালের রাজদরবারের পুঁথিশালায় প্রাচীন পান্ডুলিপির সন্ধান করতে গিয়ে মহামহোপধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহোদয় উক্ত বৌদ্ধ চর্যাপদের মরমী সংগীতগুলো আবিস্কার করেন এবং ভাষা আন্দোলনের আলোকে চর্যাপদ সন্ধানের (১৯০৭- ২০০৭) শতবার্ষিকী ছিল। পরে ডঃ দীনেশ চন্দ্র সেন, ডঃ সুনীতি কুমার চাট্টোপাধ্যায়, ডঃ মোহাম্মদ শহীদুলাহ, ডঃ প্রেবোধ চন্দ্র বাগচি, ডঃ রাহুল সাংকৃত্যায়ন, ডঃ সুকুমার সেন, ডঃ মনীন্দ্রমেহন বসু, ডঃ শশীভূষণ দাশগুপ্ত, ডঃ তারাপদ মুখার্জী, ডঃ অতীন্দ্র মজুমদার, আসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পন্ডিত পার কভিরনে সহ আর ও অনেক বিখ্যাত গুণীজন। মুনিদত্ত চর্যাপদ তিব্বতি ভাষা থেকে সংস্কৃত ভাষায় অনুবাদ করেন।

জম্বুদ্বীপ (বৌদ্ধ ধর্মের পারিভাষায়) বা দক্ষিন এশিয়ার ভারত উপমহাদেশে বৈদিক সভ্যতার পূর্বে মহেঞ্জোদারো হরপ্পায় কাশ্যপবুদ্ধের বৌদ্ধধর্মকে বৈদিক রাজা ঈন্দ্র ধ্বংস করে বৈদিক আর্যসভ্যতা প্রতিষ্ঠা করেন এবং বৌদ্ধধর্মই সর্বদা বৈদিক ব্রাহ্মণ্যবাদের দুশমন। ইতিহাসের ধূসর পাতায় লুকিয়ে আছে বাংলাদেশের সবুজ ছবি। মানুষের কথা, সত্য, সুন্দও আর বৌদ্ধ চর্যাপদের ইতিকথা।

বাংলা বর্ণমালার বয়স কত? সিদ্ধার্থ (বুদ্ধ) বাল্যকালে যে বাংলা লিপি অধ্যায়ন করেছিলেন তা বাংলা বিশ্ব কোষে (১৩শ ভাগ, পৃঃ ৬৫) সগৌরবে লিপিবদ্ধ আছে। বৌদ্ধ সংস্কৃতির সঙ্গে বাংলাভাষার ইতিহাস অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। অথচ বুদ্ধের বাংলা থেকে সিংহল (শ্রীলংকা) বিজয়ী বীর বিজয়সিংহের ইতিহাস সিংহল অবদান জাতকের ছবি অজন্তার চিত্রগূহায় লিপিবদ্ধ থাকা সত্তে¡ও চর্যাপদের যুগে তা সংযোজন করা হয়নি। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিখ্যাত ঐতিহাসিক গ্রন্থদ্বয় মহাবংশ ও দ্বীপবংশে প্রাচীন বাংলার দুর্লভ ইতিহাসের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে আমি থাই ভাষা অধ্যায়ন করার সময় বাংলাভাষার সঙ্গে থাই ভাষার খুব মিল খুঁজে পেয়েছি। কারণ পালি ভাষাই শ্রীলঙ্কার ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভাষাসমূহের অন্যতম প্রধান উৎস।

ঠিক তেমনি সেন রাজা বিজয় সেন সুদূর কর্ণাটক থেকে এসে বাংলা দখল করে নিল এবং বহিরাগত সেন রাজারা যে চারশ বছরের পাল সাম্রাজ্যের সমদর্শী সংস্কৃতি ও প্রচলিত বৌদ্ধধর্মের বিলোপ ঘটিয়েছে। বাঙালীর মুখ থেকে বাংলা ভাষা কেড়ে নিয়ে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি তন্ত্র চাপিয়ে দিল। বলতে গেলে সমাজ জীবনের ও ব্যক্তি জীবনের সর্বত্র তখন ব্রাহ্মণ আধিপত্য। নিপীড়িত মাহাত্মার জয়গানে মুখরিত এই চর্যাগুলো। বাঙালী সমাজের এই কর“ণ ছবি দেখতে পাই ৩৩ নং চর্যায়। ‘টালত মোর ঘর নাঁহি পরবেসী। হাড়ীতে ভাত নাঁহি নিতি আবেশীম্ব।’ এর মানে, নিজ টিলার উপর আমার ঘর। প্রতিবেশী নেই। হাঁড়িতে ভাত নাই, অথচ নিত্য ুধিত। সেন রাজত্ব মানে কর্ণাটকের ব্রাহ্মণ্যদের অধীনে বাংলা, নিজ বাসভূমেই পরবাসী করে দিয়েছে বাঙালীকে। ইতিহাসের এই অন্ধকার যুগে তবু বাঙালী দুহাতে অনন্ত সমস্যার পাথর সরিয়ে জীবনের যাত্রা পথ ধরে হাঁটতে শুরু করেছিল অন্যতর আলোর লক্ষ্যে।

ডঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সহ বিভিন্ন পন্ডিতগণের মতে, বৌদ্ধদের দশরথ জাতকই রামায়ণের উৎস (সম্পাদকীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২২ আগষ্ট, ১৯৯৩)” প্রসঙ্গে থাইল্যান্ডে সেই রাম (বর্তমান রাজা ভূমিবল অতুল্যতেজা, রাম নম্বর ৯) ও আছে, সেই অযোধ্যা (আয়োধায়া) ও আছে। দৈনন্দিন জীবনে থাই ভাষায় প্রচুর বাংলা শব্দ ব্যবহার হয়। আমাদের বাংলাদেশের সাথে শ্যামদেশের (থাইল্যান্ড) ভাষা, থাই ব্যাকরণ, শিল্প, সঙ্গীত, নৃত্যকলা ও সংস্কৃতির সাদৃশ্য পরিলতি হয় এবং এই প্রসঙ্গে গভীর গবেষণার প্রয়োজন আছে । থাইল্যান্ড বা শ্যামদেশের রাজধানী ব্যাঙ্কক এয়ারপোর্টের নাম “সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট।” সুবর্ণভূমি নাম তো বাংলা শব্দ এবং সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (২৩০০ বছর আগে) দক্ষিণপূর্ব এশিয়া (সুবর্ণভূমি) বিশ্বমানবতায় (গৌতমবুদ্ধের মহাক্ষরুনা ও মৈত্রী) আলোকিত হয়ে ওঠেছিল। বাংলা ভাষা বৌদ্ধ পালি ভাষার বিবর্তিত রূপ, বুদ্ধাব্দই বঙ্গাব্দ ছিল এবং চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের আদিমতম নিদর্শন। চর্যাপদের ১৭ নম্বর চর্যা, “নাচন্তি বাজিল গান্তি দেবী / বুদ্ধ নাটক বিসমা হোই অর্থাৎ দেবী গাইছেন, বজ্রাচার্য নাচছেন, এভাবে বুদ্ধ নাটক শেষ হলো।”

একদা বৌদ্ধসম্রাট পালবংশের রাজত্বকালে (৭৫০ থেকে ১১০০ খৃঃ) বাংলাদেশের ধর্ম ও সংস্কৃতি আজকের থাইল্যান্ডের মতো ছিল। বিভিন্ন কারনে ১২০২ সালে ভারত, উড়িষ্যা, নেপাল এবং বাংলাদেশ থেকে অনেক বৌদ্ধ শরণার্থী মনদের (বৌদ্ধ স¤প্রদায়) সাথে মায়ানমার এবং শ্যামদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। ১২৩৮ সালে প্রথম রাজা ইন্দ্রাদিত্য থাইল্যান্ডের প্রথম রাজধানীর নাম সুখোদায় (বা সুখের উদয়) প্রতিষ্ঠা করেন। রাজা ইন্দ্রাদিত্যের কনিষ্ঠতম ভ্রাতার নাম মহারাজা রামকাম হেং।

থাইল্যান্ডের রাজনীতি ও ধর্ম চির স্বাধীন এবং বর্তমান রাজার নাম ভূমিবল অতুল্যতেজ (নবম রাম) এবং রানীর (রাজিনী) নাম শ্রীকীর্তি (সিরিকিত)। থাইল্যাণ্ডের প্রদেশের নাম: নগর প্রথম (নাকন প্রাথম), সুপানবুরি (সুবর্ণ পুরী), জলপুরী (ছনবুরি ও ফাত্যায়া) ও নগরশ্রী ধর্মরাষ্ঠ্র (উচ্চারণ : নাকন শ্রী তাম্মারাট), অযোধ্যা (আয়োধায়া) ইত্যাদি। জাদুঘরকে থাইভাষায় ‘বিবিধ ভান্ড’ ও সঙ্গীত একাডেমীকে ‘সঙ্গীত শালা’ বলা হয়। কলেজকে থাইভাষায় বিদ্যালয় (উচ্চারন : ওইথ্যালয়) এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে মহাবিদ্যালয় বলা হয়। থাইভাষায় স্বরবর্ণ ১৫টি ও ব্যঞ্জনবর্ণ ৪৪টা। বাংলা বা পালি (প্রাচীন মাগধি ও বাংলা) ব্যাকরণই থাই, বার্মা (মায়ানমার), শ্রীলংকা, লাওস ও ক¤ো^ডিয়া ভাষাসমূহের ব্যাকরণ। সংসদ ভবনের নাম রাষ্ঠ্র সভা (উচ্চারণ : রাট্ট সভা), টেলিফোনকে দূরশব্দ (উ: তোরাশাপ) এবং টেলিভিশনকে তোরাতাত (বা দূরদর্শন) বলা হয়।

থাইল্যান্ডে বাংলা শব্দমালা কি কেবলই ছবি? ইতিহাসের দিঘল চোখে অদৃষ্ঠের পরিহাস বিরাজমান। ‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়!’ প্রবাস জীবনের নানা কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু হাঁসতে আমরা অনেক বন্ধু বান্ধবী সন্মিলিতভাবে কত কবিতা পাঠ করেছি, বিবিধ গল্প পরে কত কেঁদেছি আহা! কত হেঁসেছি। দিন তো চলে গেছে কিš‘ স্মৃতিটুকু আজ ও আমাদের সবার মনে আছে। “যেথায় আছি যে যেখানে / বাঁধন আছে প্রাণে প্রাণে।” আমরা সবার মঙ্গল কামনা করি এবং সকল প্রাণী সুখী হোক। প্রসঙ্গত উলেখযোগ্য যে, অশোকের শিলালিপি পালি ভাষায় ব্রাহ্মী অরে লেখা আছে এবং উক্ত ব্রাহ্মী লিপি (বর্ণমালা) থেকে বাংলা, হিন্দী, সংস্কৃত, থাই বর্ণমালাসহ ৩৫টি ভাষায় বর্ণমালার উৎপত্তি।

স্বদেশের গৌরবোজ্বল মাতৃভাষা রা করার জন্য ঢাকার রাজপথে বায়ান্নের একুশে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানী পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিলেন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার সহ আরও অনেকে। নিজের মাতৃভাষা ও দেশকে স্বাধীন করার পর বাঙালী বিশ্বের সকল জাতীর মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধার আসনে বসাতে চেয়েছে বলে অমর একুশে আজ জাতিসংঘ স্বীকৃত “আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে বাঙালির বর্ণমালা, শহীদদের আত্মদান ও মাতৃভাষাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

বিদেশী সভ্যতার হাজার বছর আগে বাঙালির গৌরব সন্তান অতীশ দীপঙ্কর বিশ্বমানবতা, মানবাধিকার ও অহিংসার মন্ত্র দিয়ে তিব্বত চিনসহ পৃথিবী জয় করেছিলেন। অতীশ দীপঙ্করের দেশ বিক্রমপূরের বজ্রযোগিনী অন্ধকারে ডুবে গেল কেন? বাঙালীরা বীরের বংশ। বাংলার মহাসম্রাট ধর্মপালের (৭৭০-৮১০ খৃঃ) রাজত্বের সীমানা ছিল বিশাল এবং তিনিই ভারতের বিহারে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেন। তাঁর রাজত্বের মানচিত্রে পূর্বে আসাম, পশ্চিমে গান্ধার, উত্তরে জলন্ধর ও দেিণ বিন্ধগিরি (পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা) পর্যন্ত বি¯তৃত ছিল। পাটনায় স্থাপন করা হয়েছিল বৌদ্ধ পাল সাম্রাজ্যের সামরিক রাজধানী। তখন মহাকালের প্রসারিত পথের ওপর দিয়ে চলেছে বাঙালী ইতিহাসের পাল সাম্রাজ্যের স্বর্ণময় রথ। সে রথের আরোহী মহাশক্তিমান দিগি¦জয়ী সম্রাট ধর্মপাল ছিলেন এক কালজয়ী ভারত বিজয়ী বাঙালী মহাবীর। পাল রাজাদের সাথে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশীয়া ও কম্বোডিয়ার রাজাদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল বলে আজ ও থাই ভাষায় বাংলা শব্দমালা বিরাজমান।

লেখক সোনা কান্তি বড়–য়া, সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, কানাডা, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা, প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, থাইল্যান্ডের ব্যঙ্ক¯’ বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব সঙ্ঘ পত্রিকার সহ সম্পাদক