মণিজিঞ্জির সান্যাল : ভাল মানুষের সঙ্গ পেলে জীবনের রংটাই কেমন পালটে যায়, প্রতি মুহূর্তে মনের মধ্যে অদ্ভুত দোলা দেয়, আনন্দে ভরে থাকে মন। কিন্তু এর উল্টোটাও আছে। এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের সান্নিধ্য আমাদের মনটাকে বিষাদে ভরিয়ে তোলে। আসলে আমাদের চারপাশে কত মানুষ। প্রতিটি মানুষের বাইরের চেহারার মতো ভেতরের চেহারাও আলাদা আলাদা। আমরা নিজেরাই বলি, ভাল মন্দ নিয়েই মানুষের জীবন। আর ভাল মন্দ সবার মধ্যেই রয়েছে। যেমন হিংসা, ভালোবাসা, প্রেম কিংবা রাগ-ক্ষোভ। তবে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে ভালোর থেকে খারাপ জিনিসই বেশি, যেমন হিংসা, কিংবা রাগ বা পরশ্রীকাতর ইত্যাদি ইত্যাদি। এই বিষয়গুলো কিছু মানুষের মধ্যে এতোটাই বেশি পরিমাণে থাকে যে তাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে নিজের জীবনটাই দুর্বিষহ এবং বিষাক্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু বাইরে থেকে দেখে বোঝার সত্যিই কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু একটু ভাল করে বুদ্ধি দিয়ে খেয়াল করলেই এই ধরনের মানুষকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। আর সত্যিই যদি চিহ্নিত করা যায়, তাহলে অবশ্যই এই ধরনের মানুষের থেকে দূরে থাকা উচিত।
যেমন ধরা যাক নিজেকে ভালোবাসা। হ্যাঁ এটা ঠিক যে নিজেকে ভালোবাসা অবশ্যই স্বাস্থ্যকর কিন্তু অতিরিক্ত আত্মপ্রেমীদের আশেপাশে থাকা মানুষদের গুনতে হয় চরম মূল্য। ইংরেজিতে যাদের বলে ‘নারসিসিস্ট’ তাদের থেকে দূরে থাকা উচিত।

প্রথমে এই ধরনের মানুষগুলোকে দেখলে খুব ভাল মনে হলেও, বাস্তবে তারা হয় খুবই সুবিধাবাদী। এরা খুব একগুয়ে ধরনের হয়, সহজেই অন্যকে দোষ দেয় এবং নিজের পছন্দমতো কাজ না হলে এরা খুব অদ্ভুত ব্যবহার করে। যদি কাছের কোনো মানুষের মধ্যে এই ধরনের বৈশিষ্ট লক্ষ্য করা যায়, তবে উচিত হবে তাদের থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখা।

আর এক ধরনের মানুষকে আমরা দেখতে পাই যারা খুবই নিজের মতো করে গল্প সাজিয়ে পরিবেশন করে। ‘পার্সোনালিটি অ্যান্ড সোশাল সাইকোলজি বুলেটিন’য়ে প্রকাশিত নেদারল্যান্ডের গ্রোনিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীকে নিয়ে গল্পগুজব করার মাধ্যমে আত্মকেন্দ্রিক ও অলস কর্মচারী সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তবে যারা বেশি গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে গালগল্প ফাঁদে বা নিজেদের ভালো সাজানোর জন্য বানিয়ে কথা বলে, তাদের সঙ্গ মোটেই স্বাস্থ্যকর হতে পারে না। এরকম মানুষের সংস্পর্শে এসে থাকলে তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা না বলাই উচিত। এদের এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।

আর এক ধরনের মানুষ আছেন যারা আত্ম-ধ্বংসাত্মক মানুষ। তারা অতিরিক্ত মদ্যপান, হাত-পা কাটা – এই ধরনের বৈশিষ্ট সম্পন্ন মানুষদের প্রতি বিশেষ করে পরিচিত কেউ হলে তার জন্য মন খারাপ হতেই পারে। তাদের সাহায্য করতে চাইলে অবশ্যই পেশাদার মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আসলে তাদের ধ্বংসাত্মক মনোভাবের ফলে যদি নিজেরই কোনো মানসিক ক্ষতি হয় তবে অবশ্যই তাদের থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

আবার কিছু মানুষ আছেন যারা মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য আবেগ নিয়ে খেলে, যাকে বলা যেতে পারে আবেগের পরজীবী, তাদের থেকে দূরে থাকাই ভালো। এই ধরনের মানুষ নিজেকে খুবই ভঙ্গুরভাবে উপস্থাপন করে অন্যের সহানুভূতি যোগাড় করে। তারপর নিজের কাজ হয়ে গেলে সেই মানুষটিকে অগ্রাহ্য করবে। যতক্ষণ না সেই মানুষটার প্রয়োজন ফুরাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা হয় স্বার্থপর, একগুয়ে, চাহিদা পূরণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবে। এই ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচয় থাকলে দূরে সরে যাওয়াই উচিত। কারণ মনে রাখতে হবে আবেগকে হাতিয়ার করে যারা সম্পর্ক তৈরি করে তারা ভালোবাসা চায় না, তারা খালি শক্তিটাই শুষে নেয়।

পরশ্রীকাতর, হিংসা মানুষের মধ্যে থাকতেই পারে। সাধারণ সম্পর্কে হিংসা করা অনেক ক্ষেত্রেই ভালোবাসার লক্ষণ হিসেবে দেখা হয়। তবে সেই হিংসার কারণে যদি অপরজনকে কষ্ট দেওয়া হয়, কিম্বা তাকে কোনো কাজ করতে বাধা দেওয়া হয় বা তার সাথে কোনও প্রতিযোগিতায় নামা শুরু করে, তবে সেই মানুষ থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
প্রচণ্ড হিংসুটে মানুষ কখনও স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে না। যে কোনো ভালোবাসার সম্পর্কে যদি একে অপরের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব না থাকে, দুজন দুজনের ভার বহন করার বিষয় না থাকে, সেক্ষেত্রে সেখান থেকে অবশ্যই সরে আসা উচিত নিজের ভালোর জন্য।

নিজেকে বলির পশু ভাবা বা নিজেকে সব সময় অন্যের মাধ্যমে অপরাধী হওয়ার মনোভাব কারও মধ্যে দেখতে পেলে, তবে তাকে ভালো উপদেশ দিতে হবে। তবে এই মানসিকতার মানুষরা ভালো উপদেশ গ্রহণ করলেও নিজের নেতিবাচক মনোভাবের জন্য কোনো সমাধানে যেতে পারে না।নিজেকে এই ধরনের অপরাধবোধে ভোগা মানুষের শিকারে পরিণত হলে, নিজেকে বাঁচাতে অবশ্যই দূর থেকে সম্পর্ক রাখাই ভাল। বেশি কাছে একেবারেই যাওয়া উচিত নয়।

মানসিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের ‘মাকিয়াভ্যালিয়জম’কে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদেরকে যারা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় খুবই শীতল অনুভূতির সঙ্গে নিজেদের বিভিন্ন সুবিধে খোঁজে। তাদের অনুভূতি আন্তরিক নয়, তাদের মধ্যে সহানুভূতিরও অভাব থাকে। মনোবিজ্ঞানিদের সাধারণ পরামর্শ হচ্ছে ‘মাকিয়াভ্যালিয়ান’ মানুষের দেখা পেলেই পালিয়ে যান। তবে ঘটনাক্রমে যদি তাদের সঙ্গে থাকতেই হয় তাহলে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়ীর মতো ব্যবহার করুন। অর্থাত তাকে কিছু দিতে হলে সে আপনাকে কী দেবে- সে বিষয়ে আগে নিশ্চিত হয়ে নিন। যাকে বলে ‘উইন উইন সিচুয়েইশন’।

আর এক প্রকার মানুষ আছেন যারা খুব বেশি মাত্রায় উদাসীন। যে কোনো সম্পর্কে একজন মানুষই শুধু দিয়ে যাবেন, বিষয়টা খুবই সাধারণ। তবে একজন মানুষের জন্য সেটা অনেক সময় খুবই চাপের বিষয় হয়ে যায় যখন তাকে মানসিক ভরের বেশিরভাগটাই টানতে হয়। এই এক পক্ষীয় অবস্থার পড়ে সেই মানুষটার মনে হতে থাকে, ‘আমি খালি দিয়েই যাচ্ছি দিয়েই যাচ্ছি’। অন্যদিকে অপর পক্ষ সেই বিষয়টি খেয়াল না করে উদাসীনতার পরিচয় দিয়ে যেতে থাকে। এই ধরনের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত হৃদয় ভাঙার কারণ হয়। আর যে ব্যক্তি দিয়েই যায় সে এক পর্যায়ে আত্মভিমানে ভুগতে থাকে।

পৃথিবীতে আর এক ধরনের মানুষ আছেন যারা খুব মিথ্যে কথা বলেন। এরকম ভাবার কারণ নেই যে, সবাই সবসময় সত্য কথা বলবে। তবে যদি সন্দেহ হয় জীবনে কেউ বেশিরভাগ সময় অনুভূতি কাড়তে অতিরিক্ত মিথ্যা বলছে তাহলে সাবধান হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। অস্বাভাবিক মিথ্যাবাদীদের প্রথমে খুবই ‘চার্মিং’ মনে হবে। তারা জীবনটাকে মজারও করে তুলতে পারে। তবে একটা রেখায় এসে এই ধরনের মানুষদের সঙ্গে মেশা বন্ধ করে দেওয়া উচিত কিংবা কমিয়ে দেওয়া উচিত। কারণ বিশ্বাস না থাকলে সেই সম্পর্ক জোড়ালো হতে পারে না। এই ধরনের মানুষদের সঙ্গে হালকা সম্পর্ক রাখাই ভালো। গভীরে গেলেই কষ্ট পাওয়া।

ফ্রেনিমি মনোবিজ্ঞানের নতুন শব্দ। বাংলায় যাকে বলা যেতে পারে ‘বন্ধু যখন শত্রু’। কর্মক্ষেত্রে বা বন্ধুদের মধ্যে সাধারণ প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। যা একে অপরে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। তবে সেই প্রতিযোগিতায় থাকে সাহায্য ও সহানুভূতির মনোভাব। তবে কোনো বন্ধু যদি টপকে যেতে চায়, যদি বন্ধুর সাহায্যে এগিয়ে না আসে, সফলতায় খুশি না হয়, অন্যের কাছে তাকে নিয়ে গালগল্প করে, তবে বুঝতে হবে সে আসলে বন্ধু-রূপী শত্রু, অর্থাত ‘ফ্রেনিমি’।

মানুষ বড় হতে হতে বিভিন্ন খারাপ অভ্যাসে রপ্ত হয়ে যায়। যেমন মদ্যপ হয়ে যাওয়া, সময় কিংবা টাকাপয়সা ঠিক মতো সামালাতে না পারা, কিংবা নিজেকে ধ্বংস করার মতো কাজে লিপ্ত হওয়া- যা অনেক সময় হৃদয়ভঙ্গের কারণ হয়। আর সেসব থেকে সেই মানুষটাকে বের করে আনতে আমরা অনেকরকম পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। তবে এই ধরনের খারাপ অভ্যাসগুলোকে যারা এড়িয়ে যায় এমনকি সেই কাজগুলো করতে উদ্বুদ্ধ করে, কিংবা আপনি নিজে কোনো বাজে অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে চাইছেন কিন্তু সেই ব্যক্তি আপনাকে বাধা দিচ্ছে, উল্টো টেনে ধরছে সেই খারাপ পথের দিকে তাহলে অবশ্যেই তাদের এড়িয়ে চলুন। এড়িয়ে চলতে হবে ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না আপনি নিজে শক্ত হচ্ছেন।

বন্ধুমহলে এমন কেউ থাকতেই পারে, যে চায় সবাই তার দিকেই নজর দিক। তবে সম্পর্কে যখন এমন চাহিদার সৃষ্টি হয় এবং সেখানে যদি নিজের কোনো জায়গা না থাকে তাহলে উচিত হবে সেই বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কটা নতুন করে সাজিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে চলা। আবার কিছু মানুষ রয়েছে যাদের মেজাজ এই গরম, তো এই ঠান্ডা। তারা তাদের মনোভাব সহজে প্রকাশ করতে পারে না। তারা বেশিরভাগ সময় আত্মরক্ষামূলক আচরণ করে। কোনো বিষয়ে জানতে চাইল- ছল চতুর উত্তর দেয়। তারা ভালো থাকলেও বলে খারাপ আছি- সহানুভূতি আদায়ের জন্য। খেয়াল করে দেখতে হবে এই ধরনের মানুষ আপনার মানসিক শক্তি কি কেড়ে নিচ্ছে? তবে তাদের সঙ্গে অবশ্যই দূরত্ব মেপে যোগাযোগ রাখতে হবে। না হলে হয়ত শত্রুতায় রূপ নেবে সম্পর্ক।

আরো এক ধরনের মানুষ আছেন যারা খুব বিরক্তিকর। তারা নতুন অভিজ্ঞতা থেকে দূরে থাকে। শুনতে চায়না কোনো কিছু। সবসময় বিতর্কে জড়ায়। তারা হয় সামাজিকভাবে অন্ধ। এই ধরনের মানুষ যদি আশপাশে থাকে আর সবসময়ই অস্বস্তিতে ফেলে তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কোনো কারণই নেই। খুব স্বাভাবিকভাবে তাদের সঙ্গে দ্রুত কথা শেষ করে সরে পড়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

‘ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স’য়ের শিকার নিয়ে নানান তথ্য রয়েছে। সেটা শুধু যে নারীদের ওপর ঘটে তা নয় পুরুষরাও রয়েছে এই তালিকায়। যারা শারীরিক বা মানসিক ভাবে সারাক্ষণ আঘাত করে, তারপর প্রতিজ্ঞা করে আর করবে না, কিন্তু সেই প্রতিজ্ঞা বেশিদিন টেকে না- এমন মানুষের সঙ্গে বসবাস করার চাইতে দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে আসাই ভালো। সব আঘাতই যে শারীরিক হবে তা নয়, কেউ কেউ মানসিক-ভাবে আঘাত করে।
প্রতিনিয়ত অবজ্ঞা করা, প্রচণ্ড হিংসুটে ও সারক্ষণ ভাব ধরে থাকা- এই ধরনের মানসিকতার লক্ষণ।

সম্পর্কে রক্ষার্থে এই ধরনের মানুষ যেকোনো বিষয়ে ভয় দেখাতে পিছুপা হয় না। এই ধরনের মানুষের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলে, তাকে সাহায্য করার জন্য মানসিকরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। নয়ত যত দ্রুত সম্ভব তার কাছে দূরে সরে যাওয়াই মঙ্গল।
আরো কিছু মানুষ আছেন যারা অতীতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে আঘাত করত, সেই ব্যক্তিরা অনেক সময় জীবনে আবার ফিরে আসতে পারে। সে হতে পারে পুরানো ব্যক্তি বা নতুন কেউ। এই ধরনের মানুষ ফিরে আসতে চাইলে অতীতের কথা চিন্তা করা উচিত। ফিরে আসাটা যতই প্রেমময় হোক অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজে ভালো থাকতে হবে, তাই তাদের থেকে দূরে থাকাটাই নিজের জীবনের জন্য ভাল।

আর এক ধরনের মানুষ আছেন, যাদের মধ্যে কেউ অফিসের বস, বা বন্ধু বা আত্মীয় বা সহকর্মী তারা সবসময়ই আপনার নেতিবাচক সমালোচনা করে!

আপনার নিজস্ব সময় কাটানো, আপনার পোশাক, কর্মকাণ্ড বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে কটু সমালোচনা করতেই থাকে। মনে রাখতে হবে এমন মানুষের আশপাশে থাকলে আপনি সবসময় ক্লান্ত অনুভব করবেন। হয় এই ধরনের মানুষকে বোঝান তার কথা শুনে আপনার কতটা খারাপ লাগে নয়তো নির্দিষ্ট সীমারেখা টেনে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখুন। সারাক্ষণ নেতিবাচক মনোভাব সামলানো কারও জন্যই সম্ভব না।

আবার অনেক সময় এমন হয় পুরনো বন্ধু আবার জীবনে ফিরে এলো, আসলে পুরানো বন্ধু সবসময়ই আনন্দের। পুরানো বন্ধু ফিরে আসা আরও আনন্দের। তবে যদি দেখা যায় সেই পুরানো বন্ধুর কার্যকলাপ আর আগের মতো নেই, সে আপনাকে আহত করছে তবে তার থেকে সাবধান হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। নিজস্বতা হারিয়ে ফেলতে থাকলে সেই বন্ধুর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখাই হবে সুখের।

পরিশেষে বলা যাক সময়ের কথা। বন্ধুত্ব হোক কিংবা প্রণয়ের সম্পর্কই হোক, সময়ের মূল্য না দিলে সেটার কোনো মর্যাদা থাকে না। মানসিকভাবে দুর্বল অনুভব করা এক জিনিস আর আপনি সব দিক সামলিয়ে যার জন্য সময় বের করে রাখলেন, শেষ মুহূর্তে সেই মানুষটাই আপনাকে ফাঁকি দিল। যদিও এই ধরনের মনোভাব সম্পর্ক ছেদ করার বিশেষ কারণ হিসেবে পড়ে না। বরং যে এরকম করছে তাকে যদি কাছের ভাবেন, তবে তার সঙ্গে আলোচনায় বসা যেতেই পারে এবং সমস্যাটা কোথায় সেটা কথা বলে সমাধানও করা যেতে পারে।
কথায় আছে সত সঙ্গে স্বর্গবাস, অসত সঙ্গে সর্বনাশ…
মণিজিঞ্জির সান্যাল : কথা সাহিত্যিক
শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ