সোনা কান্তি বড়ুয়া : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অভিষেকের তরে সোনার ঘটে আলোক ভরে! বিশ্বসাহিত্যে রবীন্দ্র সাহিত্যের স্রষ্টা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০তম শুভ জন্মজয়ন্তীতে পুণ্যচেতনা স্মরণ করে বিশ্বকবিকে মোদের সাষ্ঠাঙ্গ প্রণতি। তিনি সব বাঙালির। আসুন, সবাই মিলে সেই শুভ দিনটি উদ্যাপন করি। বৌদ্ধ সহজতত্ত¡ ও রবীন্দ্রনাথের অরূপ সাধনা এই রূপ সব্যসাচী প্রতিভাধর মানুষ আর দেখা যায় না! সাহিত্যের সর্বদিকে তাহার বিচরণ মানুষকে দেয় প্রশান্তি, খুঁজে পায় বিশ্বমানবতা দর্শনের ভাবধারা, তাই সেই বিশ্বমানবতায় উদ্ভাসিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিরন্তন!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, “তিনি (গৌতমবুদ্ধ) জন্মেছেন মানবের চিত্তে, প্রতিদিন তিনি জন্মাচ্ছেন, প্রতিদিন তিনি বেঁচে আছেন।” বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “চন্ডালিকা” শীর্ষক নৃত্যনাট্যে বিশ্বমানবতার বাণী অহিংসা পরম সুধা প্রচার করেছেন। সকল ধর্মের উপদেশে বিরাজমান, “মানুষ মানুষের ভাইবোন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ‘ছোট প্রাণ, ছোট ব্যথা, ছোট ছোট দুঃখ কথা / নিতান্তই সহজ সরল! সহস্র বিস্মৃতি রাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি / তারি দু’চারিটি অশ্রুজল / নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা / নাহি তত্ত¡ নাহি উপদেশ!”
বিশ্ব কবির ভাষায়: “মানুষের অধিকারে বঞ্চিত করেছ যারে, / সন্মুখে দাঁড়ায়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান!” অহমিকা বন্দীশালা হতে। ভগবান তুমি!

নির্দ্দয় এ লোকালয়, এ ক্ষেত্র তব জন্মভূমি।
ভরসা হারালো যারা, যাহাদের ভেঙেছে বিশ্বাস
তোমারি করুণা বিত্তে ভরুক তাদের সর্বনাশ
আপনারে ভুলে তারা ভুলুক দুর্গতি। আর যারা
ক্ষীণের নির্ভও ধ্বংস করে, রচে দুর্ভাগ্যের কারা;
দুর্বলের মুক্তি রুধি, বোসো তাহাদেরি দুর্গদ্বারে,
তপের আসন পাতি, প্রমাদ বিহ্বল অহঙ্কারে।
পড়–ক সত্যের দৃষ্টি; তাদের নিঃসীম অসমমান
তব পুণ্য আলোকেতে লভুক নিঃশেষ অবসান।” (২৯ জুলাই ১৯৩৩ সাল)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্বীয় স্রষ্টাকে বহুবিধ, সংজ্ঞায়, বচনে, উচ্ছ্বাসে, উচ্চারণে, কথায়, সম্বোধন করেছেন হে, ওহে, হে প্রিয়তম, ওহে অন্তরতম, ত্রিভুবনেশ্বর, পরাণ সখা, হে প্রিয়, হে আমার বন্ধু, হে আমার নাথ, বন্ধু হে আমার, হে মোর দেবতা, ওহে সুন্দর তুমি, ওগো অসীম, তুমি হে, হে অন্তর্যামী, মানব জন্মতরীর মাঝি, ওহে অসীম, তুমি কে। বার বার তার কবিতায়, উপন্যাসে, নাটকে, বিশেষ উপমায়, সম্বোধনে উচ্চারণ করেছেন তা তার বিস্ময়কর মরমীভাবের প্রকাশ।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) মানুষ হিসেবে এ নশ্বর পৃথিবীতে তাঁর “সেই স্বপ্নটি ছিল বিশ্বসাহিত্যে রবীন্দ্র সাহিত্যের সৃষ্টিকে ষোলোকলায় পূর্ণতা দিয়ে আজও তাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অমরত্বের বরপুত্র। জগৎ জুড়িয়া শত বছর পরেও তিনি তাঁর বিশ্বসাহিত্যে রবীন্দ্র সাহিত্যের স্রষ্টার অমরত্বে বেঁচে থাকবেন।”

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়,
“আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতা খানি
কৌতূহল ভরে!”

‘বিশ্ব ভুবনের অস্তিত্ব ও আমার অস্তিত্ব একাত্মক। ভূভুব: স্ব: এই ভূ-লোক, অন্তরীক্ষ, আমি, তারই সঙ্গে অখন্ড। এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের আদি অন্তে যিনি আছেন তিনি আমাদের মনে চৈতন্য প্রেরণ করেছেন। চৈতন্য ও বিশ্ব, বাহির ও অন্তরে, সৃষ্টির এই দুইধারা একধারায় মিলেছে। এমনি করে ধ্যানের দ্বারা যাকে উপলব্ধি করছি তিনি বিশ্ব আত্মাতে আমার আত্মাতে চৈতন্যের যোগে যুক্ত’।

প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘খেয়ার নেয়ে’ আলোছায়ার রহস্যলোকে অস্পষ্টভাবে ক্ষণে ক্ষণে দেখা দিয়েছেন আর গীতাঞ্জলীর দেবতা ভক্তের সম্মুখে আসীন। রবীন্দ্রনাথের DEEP SPIRITUAL বিশ্বমানবতায় রসানুভূতি গীতাঞ্জলি, গীতিমাল্য ও গীতালীতে স্তরে স্তরে গভীর হতে গভীরে গিয়ে পূর্ণতা লাভ করেছে। (রবীন্দ্র জীবনী ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা-২৪৫)। আত্মার দৃষ্টি রচনায় কবি বলেছেন “আমাদের চেতনা আমাদের আত্মা যখন সর্বত্র প্রসারিত হয় তখন জগতের সমস্ত সত্তাকে আমাদের সত্তা ধারাই অনুভব করি। ইন্দ্রিয়ের দ্বারা নয়, বৈজ্ঞানিক যুক্তি দ্বারা নয়, সে পরিপূর্ণ অনুভূতি একটি আশ্চার্য্য ব্যাপার! বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং The Great Scientist অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের কথোপকথন :

আইনস্টাইন : তাহলে বলুন সত্য বা সৌন্দর্য, এ-সবও মানব সম্পর্ক নিরপেক্ষ স্বাধীন নয়?
রবীন্দ্রনাথ : নয়ই তো।
আইনস্টাইন : ধরা যাক, মানুষ বলে কোনো কিছুই আর নেই। তখনও কি এই সন্ধ্যা-তারা এমন সুন্দর দেখাবে না?
রবীন্দ্রনাথ : না।
আইনস্টাইন : সৌন্দর্যের ধারণার ব্যাপারে আপনার সঙ্গে আমি একমত। তবে সত্যের ক্ষেত্রে আপনার কথা আমি মানতে পারছি না।
রবীন্দ্রনাথ : কেন পারছেন না? সত্যও তো মানুষের ভিতর দিয়ে প্রকাশিত হবে।
আইনস্টাইন : পিথাগোরাসের যুক্তি আমি মান্য করি। সত্যের অস্তিত্ব মানুষের সম্পর্ক-নিরপেক্ষ ব্যাপার।
রবীন্দ্রনাথ : পরম সত্য তো ব্যক্তি-মানুষের ধ্যানের বাইরে ধরা দেয় না, সে অনুভব তো ভাষায় অবর্ণনীয়।
আইনস্টাইন : বাস্তবতা তো যা অস্তি তাই, মনের মানা না মানার বাইরে তার অস্তিত্ব। ধরা যাক, এই বাড়িতে জনপ্রাণী নেই, তারপরেও ঐ যে টেবিলটি সেটি একই রকম থাকছে। টেবিল হলো সেটাই, যা আমাদের চৈতন্যের কোথাও কোনোখানে তার অস্তিত্ব জানিয়ে দিচ্ছে।
রবীন্দ্রনাথ : হ্যাঁ, ব্যক্তিমনের স্বীকৃতি-অস্বীকৃতির বাইরে স্বাধীনভাবে সে থাকছে ঠিকই, কিন্তু তা বলে সে বিশ্ব মানবের বাইরে থাকছে এমন নয়।
আইনস্টাইন : বাড়িতে কেউ না থাকলেও টেবিলটা থাকছে। কিন্তু আপনার দৃষ্টিতে এর কোনো বৈধতা নেই। কেননা আমাদের চৈতন্য বহির্ভুতভাবে ওই টেবিলের অস্তিত্বকে আমরা ব্যাখ্যা করতে পারছি না। আসলে সত্যের উপরে আমরা অতিমানবীয় অবজেকটিভিটি আরোপ করে থাকি। আমাদের অস্তিত্ব নিরপেক্ষভাবে এবং মানসসম্পর্ক রহিতভাবে এই যে স্বাধীন অস্তিত্ব রয়েছে বাস্তবের, এর যে ঠিক কী অর্থ আমরা বুঝিয়ে বলতে পারব না। অথচ আমাদের জন্য তা জরুরি, অপরিহার্য।
রবীন্দ্রনাথ : যেভাবেই বলুন না কেন, ব্যাপারটা আদতে হচ্ছে মনুষত্যবোধের সঙ্গে সম্পূর্ণত সম্পর্কশূন্য কোনো সত্য যদি কোথাও থেকে থাকে, তো আমাদের কাছে তার কোনো অস্তিত্বই নেই।”

১৯৩৬ সালে শান্তিনিকেতনে বিষয়টা উপস্থাপন করে রবীন্দ্রনাথ লিখেন তাঁর বিখ্যাত ‘আমি’ কবিতা। ‘আমারই চেতনার রঙে পান্না হলো সবুজ,/ চুনি উঠল রাঙা হয়ে।/ আমি চোখ মেললুম আকাশে-/ জ্বলে উঠল আলো।/ পূবে পশ্চিমে।/ গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম‘সুন্দর’-/ সুন্দর হলো সে’।
স্তবকে স্তবকে সাজানো এই কবিতায় তিনি তাঁর পূর্বেকার বক্তব্যে অটল থেকে সত্যের অন্বেষণে উচ্চারণ করলেন- ‘সেদিন কবিত্বহীন বিধাতা একা রবেন বসে/ নীলিমাহীন আকাশে/ ব্যক্তিত্বহারা অস্তিত্বের গণিততত্ত¡ নিয়ে’। বুঝতে অসুবিধা হয় না কথোপকথনের ছয় বছর পরে এসেও রবীন্দ্রনাথ আইনস্টাইনের ওই জিজ্ঞাসা বিস্মৃত হননি। তাতে করে পৃথিবীর ইতিহাসে ‘সত্য-কে’ জ্ঞাত হওয়ার মহত্তম ভাবনায় মোড়ানো শ্রেষ্ঠ দুই মহামানবের এই যুগলবন্দি উচ্চারণের সঙ্গে আমরা যেন পেয়ে গেলাম রবীন্দ্রনাথের একটি ‘বিজ্ঞান-কবিতা’।

প্রায় ২৬০০ বছর পূর্বে রাজপুত্র সিদ্ধার্থ (গৌতমবুদ্ধ) বাল্যকালে যে বাংলা লিপি অধ্যয়ন করেছিলেন এর ঐতিহাসিক প্রমাণ বাংলা বিশ্বকোষের ১৩শ ভাগ, ৬৫ পৃষ্ঠায় সগৌরবে লিপিবদ্ধ আছে। রবি ঠাকুরের ভাষায়,
“ওই নামে একদিন ধন্য হল দেশে দেশান্তরে
তব জন্মভূমি।
সেই নাম আরবার এ দেশের নগরে প্রান্তরে
দান কর তুমি।
বোধিদ্রুমতলে তব সেদিনের মহাজাগরণ
আবার সার্থক হোক, মুক্ত হোক মোহ আবরণ,
বিস্মৃতির রাত্রিশেষে এ ভারতে তোমারে স্মরণ
নব প্রভাতে উঠুক কুসুমি।

সমস্ত বিশ্বে আজ এ বাণী পৌঁছেছে, ইউরোপেও। ইউরোপ আজ বড় দুঃখে পীড়িত, হিংসায় শতধা বিভক্ত। কোন রাজনৈতিক কলে (পন্থায়) শান্তি তৈরী করা যেতে পারে না, ইউরোপ তা বোঝে না। শান্তি ম্যাঞ্চেষ্টারের কল এ তৈরী করা কাপড়ের মত কিছু হতে পারে না, এই যে মানুষের মন নিয়ে খেলা। ইউরোপকে একবার প্রাচ্যেও দিকে তাকাতে হবে, যেখানে সত্য রয়েছে, সেখানে কবে মানুষের দৃষ্টি পড়বে? বড় দুঃখে আমরা অনেক দিনের পাপ বহন করে এসেছি, এই মানুষকে অপমান করে। তিনি আমাদের এই ভেদ বুদ্ধি থেকে রক্ষা করুন। পার্লামেন্টারী বিধি নিয়মে, অথবা ভোট নেবার কোন এক কৌশলে অন্তরের মধ্যে বিষ পোষণ করে, কলের (যন্ত্র) সৃষ্ট শান্তি আমাদের ধর্ম নয়। ধর্ম হইতেছে জীবে দয়া, মানুষে শ্রদ্ধা।”

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলাদেশ।
জয় বাংলায় জয়! বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের জয়!
বাংলা আমার, মাতা আমার চির বিজয়ী বাংলাদেশ,
জগৎ জুড়িয়া বাঙালি জাতি জয় বাংলা গাইছে বেশ!
হাজার বছর আগের বাঙালির ইতিহাস কি কথা কয়?
অতীশ দীপঙ্করের বাংলাদেশ বাংলা ভাষা অমর অক্ষয়।

নিজেকে (SELFISHNESS) ত্যাগ না করে নিজের মধ্যে উপলব্ধি করার মধ্যে পরমার্থ জ্ঞান প্রকাশিত হয় না। রবীন্দ্রনাথের মতে আমাদের বিষয় বুদ্ধির ঘেরাটোপের জীবন হচ্ছে বৈষয়িকতার জীবন, এর বাইরে আরেকটি জীবন আছে যা সাধনার, ত্যাগের ও তপস্যার। এই জীবনে অন্বেষণ হলো এক সর্বজনিন সর্বকালীন মানুষের অন্বেষণ। সেই পরম পুরুষের আকর্ষণে মানুষের চিন্তায়, ভাবে, কর্মে সর্বজনীনতার আবির্ভাব। তাকে অনুভব করা তার প্রেমে সহজে জীবন উৎসর্গ করা এবং সেই উপলব্ধিটি আপন জীব সীমা অতিক্রম করে মানব সীমায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রকৃত মরমী সাধনা।
গীতাঞ্জলি’র প্রথম কবিতা স্মরণ করলাম-
আমার মাথা নত করে / দাও হে তোমার চরণধুলার তলে।
নিজেরে করিতে গৌরব দান / সকল অহংকার হে আমার ডুবাও চোখের জলে।
নিজেরে কেবলি করি অপমান,
আপনারে শুধু ঘেরিয়া ঘেরিয়া
ঘুরে মরি পলে পলে।
সকল অহংকার হে আমার
ডুবাও চোখের জলে।
আমারে না যেন করি প্রচার
আমার আপন কাজে;
তোমারি ইচ্ছা করো হে পূর্ণ
আমার জীবন- মাঝে।
যাচি হে তোমার চরম শান্তি,
পরানে তোমার পরম ক্লান্তি,
আমারে আড়াল করিয়া দাঁড়াও
হৃদয়পদ্মদলে।
সকল অহংকার হে আমার
ডুবাও চোখের জলে।”

‘মানুষের ধর্ম’ প্রবন্ধে নিজের সাধনা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন “ আমার মন যে সাধনাকে স্বীকার করে তার কথাটা হচ্ছে এই যে, আপনাকে ত্যাগ না করে আপনার মধ্যে সে মহান পুরুষের উপলব্ধি করার ক্ষেত্র আছে। তিনি নিখিল মানবের আত্মা”। নিখিল মানবের আত্মার স্বরূপ হচ্ছে সর্বজনীন মানব বা পরমপুরুষ। যিনি সব মানুষের হৃদয়ে সন্নিবিষ্ট থেকে মহত্বের শ্রেয়বোধের প্রেরণা দিচ্ছেন। চিত্রা কাব্যে “এবার ফিরাও মোরে” কবিতায় তার পরিচয় রবীন্দ্রনাথ দিয়েছেন।

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!