অনলাইন ডেস্ক : থাইল্যান্ডের রাজা ভাজিরালংকর্নের মা রানী সিরিকিত ৯৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ২১ মিনিটে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে থাই রয়েল হাউসহোল্ড ব্যুরো।
বিবিসির খবরে বলা হয়, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত সিরিকিত ২০১৯ সাল থেকে হাসপাতালে ছিলেন। তবে, চলতি মাসে তার রক্তের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে রানী সিরিকিত থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম রাজত্বকারী রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। ২০১৬ সালে মারা যান রাজা ভূমিবল।
প্রাসাদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রানী সিরিকিতের মরদেহ ব্যাংককের গ্র্যান্ড প্যালেসের দুসিত থর্ন হলে রাষ্ট্রীয়ভাবে শায়িত থাকবে। থাই রাজপরিবারের সদস্যরাও এক বছরের শোক পালন করবেন।
থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল রানী সিরিকিতের মৃত্যুর কারণে মালয়েশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য তার সফর বাতিল করেছেন।
রানী সিরিকিত প্যারিসে সঙ্গীত অধ্যয়নরত অবস্থায় তার ভবিষ্যৎ স্বামী রাজা ভূমিবলের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখানে তার বাবা ফ্রান্সে থাই রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ব্যাংককে রাজা ভূমিবলের রাজ্যাভিষেক হওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ আগে ১৯৫০ সালের ২৮ এপ্রিল বিয়ে করেছিলেন তারা।
১৯৬০-এর দশকে তরুণ দম্পতি হিসেবে রানী সিরিকিত এবং রাজা ভূমিবল বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট আইজেনহাওয়ার, প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং এলভিস প্রিসলির সঙ্গেও দেখা করেছিলেন।
১৯৮০ সালে বিবিসির সাথে একটি সাক্ষাৎকারে, তিনি রাজতন্ত্র এবং থাইল্যান্ডের জনগণের মধ্যে সম্পর্কের বর্ণনাও দেন, যেখানে রাজতন্ত্রের কঠোর আইন মেনে চলা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ডের রাজা এবং রানীরা সর্বদা জনগণের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে এসেছেন এবং তারা সাধারণত রাজাকে জাতির পিতা হিসেবে বিবেচনা করেন। এজন্যই আমাদের খুব বেশি ব্যক্তিগত জীবন নেই, কারণ আমাদের জাতির পিতা এবং মাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’
তাকে দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ মাতৃত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে দেখা হত। ১৯৭৬ সাল থেকে তার জন্মদিন ১২ আগস্টকে মাতৃদিবস হিসেবে পালিত হয়। ২০০৮ সালে তিনি পুলিশের সাথে সহিংস সংঘর্ষে নিহত একজন সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীর শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছিলেন।
রানী সিরিকিত এর আগে ২০১২ সালে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এরপর থেকেই তাকে জনসমক্ষে খুব কমই দেখা যায়। মৃত্যুর সময় তিনি তার ছেলে এবং তিন মেয়ে রেখে গেছেন।
