সোনা কান্তি বড়ুয়া : দেশে আইনের শাসনে গবেষণার তথ্যানুসারে আদিবাসী স¤প্রদায় থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়া প্রসঙ্গ! সর্ব ধর্মের মানুষ একত্রে মানুষের ভাই বোন আত্মীয় স্বজন। মনুষ্যত্বের বাঁধনে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির সাধনায় আদিবাসী স¤প্রদায় থেকে ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন Mrs. দ্রৌপদী মুর্মু এবং কানাডার GOVERNOR GENERAL নির্বাচিত হলেন Mrs. MARY SIMON! The 30th and current কানাডার governor general is Mary Simon, who was sworn in on 26 July 2021. An Inuk leader from Nunavik in Quebec, Simon is the first Indigenous. তিনি দেশটির প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি। ভারতে আদিবাসী স¤প্রদায় থেকে রাস্ট্রপতি বানাচ্ছে আর বাংলাদেশে আদিবাসী শব্দটি ও বিলুপ্ত করে দিয়েছে। আত্ম-নিয়ন্ত্রণ অধিকারসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। আর কতকাল বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গী রাজনীতির দুর্বৃত্তপনায় আদিবাসী জুম্মদদেরকে দুঃখের দহনে করুন রোদনে ধরে তিলে তিলে ধ্বংস করবে? বাংলাদেশে অন্য ধর্মের প্রতি ভয়ঙ্কর বিদ্বেষটাই পার্বত্য চট্টগ্রাম ধর্মান্ধদের অধর্ম! এই ঐতিহাসিক পূঞ্জীভ‚ত দুঃখ ও বেদনায় আদিবাসীগণ কেমনে রাখে আঁখি বারি চাপিয়া?

বাংলাদেশের ধর্মান্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ী সমাজে আদিবাসীদের অনিবার্য অভ্যুত্থান! আদিবাসী স¤প্রদায় থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হওয়া প্রসঙ্গ! চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের সহধর্মিণী রানি ইয়েন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রদত্ত “বর্ণবৈষম্যবিরোধী বৈশ্বিক চ্যাম্পিয়ন-২০২৩ পুরস্কার “অর্জন করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি চাকমা সার্কেলের রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়ের সহধর্মিণী রানি ইয়েন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর প্রদত্ত “বর্ণবৈষম্যবিরোধী বৈশ্বিক চ্যাম্পিয়ন-২০২৩” পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি বাংলাদেশে নারী অধিকার ও আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করেন। নিজের স¤প্রদায়ের নানান দুর্দশার চিত্র বিশ্ব স¤প্রদায়ের নজরে আনতে সম্মত হওয়ায় তিনি এই পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হন। তিনি ছাড়াও এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত অন্যরা হলেন ব্রাজিল, তিউনিসিয়া, পেরু, নেপাল ও মলদোভার অপর পাঁচ মানবাধিকার কর্মী। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøঙ্কেন গতকাল মনোনীতদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। …

ঢাকা: ৯ আগস্ট ২০২৩, সকাল ১০টায় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে ‘আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আদিবাসী তরুণরাই মূল শক্তি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশ, র্যালি ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) এবং উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি।

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস: আত্ম-নিয়ন্ত্রণসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি! ৯ আগস্ট ২০২৩ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। ১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৪৯ / ২১৪ ধারা অনুযায়ী প্রতি বছরের ৯ আগস্টকে আদিবাসী দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়। এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ, জাতি সংঘের বিভিন্ন সংস্থা, নাগরিক সমাজ, মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলে যেন আদিবাসীদের অধিকার সম্পর্কে অধিকতর সচেতন হন এবং আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা সরকারই করেছেন! ২১ বছর ধরে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকিয়ে দেয়া হয় মৌলবাদ আর সা¤প্রদায়িকতার বিষবাষ্প। উত্থান ঘটে পাকিস্তানবাদের। কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের করা হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে পুনর্বাসিত। প্রকাশ্যে কিছু না করলেও তিনিই জেনারেল জিয়াউর রহমান ছিলেনই মূল নাটের গুরু-ওতোপ্রতভাবে জড়িত।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামসহ আদিবাসীদের বিভিন্ন সংগঠন ও আদিবাসী বান্ধব বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং আদিবাসী অধ্যুষিত পাহাড়ি ও সমতল অঞ্চলে দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারেও বিভিন্ন অনুষ্ঠামালার আয়োজন করা হয়েছে। এবার দিবসটি উপলক্ষে সরকারকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত এক প্রচারপত্রে আত্ম-নিয়ন্ত্রণ অধিকারসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিসহ ১২ দফা দাবি জানানো হয়েছে।
দাবিসমূহ নিম্নরূপ:

১. আত্ম-নিয়ন্ত্রণ অধিকারসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
২. আদিবাসীদের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ভ‚মির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. আদিবাসী তরুণ সমাজের নেতৃত্ব বিকাশ, প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৪. আদিবাসী ইস্যুতে অন্যান্য দেশের মতো সরকার, জাতিসংঘ ও আদিবাসী জনগণ-এই ত্রিপক্ষীয় সংলাপের জন্য উৎসাহ ও প্রণোদনা দিতে হবে।
৫. পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ লক্ষ্যে সময়সূচি ভিত্তিক রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। ৬. সমতল অঞ্চলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও ভ‚মি কমিশন গঠন করতে হবে।
৭. আদিবাসী ভ‚মিতে তাদের স্বাধীন সম্মতি ছাড়া ইকোপার্ক, সামাজিক বনায়ন, ট্যুরিজম, ইপিজেড বা অন্য কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না।
৮. আদিবাসীদের উপর সকল নিপীড়ন, নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করা সহ সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
৯. জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ২০০৭ সালে গৃহীত আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্র ও আইএলও ১৬৯নং কনভেনশন অনুসমর্থন ও আইএলও কনভেনশন ১০৭ বাস্তবায়ন করতে হবে।
১০. জাতীয় সংসদে আদিবাসীদের জন্য বিশেষ কোটা সংরক্ষণ বা আসন বরাদ্দ রাখতে হবে।
১১. সরকারি প্রথম শ্রেণিতে পূর্বের মতো আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ করতে হবে এবং অন্যান্য চাকুরিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি কোটা যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।
১২. রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন করতে হবে। এছাড়া একই দিন সকাল ৯:৩০টায় ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ এর উদ্যোগে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র স্বোপার্জিত স্বাধীনতায় জমায়েত হবে এবং টিএসসি থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত সংহতি পদযাত্রা করবে।

বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলছি – হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ঠান পার্বত্য চট্টগ্রামে তিন পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী আমাদের ভাই বোন তাদের যেন কষ্ট না হয়। আমরা সংখ্যাই বেশি হলেও তাদের সহযোগিতায় দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা সকলেই এই স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের!” পাহাড়ী সমাজে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা নাই কেন? গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র এবং জাতীয়তাবাদের যে চেতনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, স্বাধীন দেশে সে অর্জন থেকে দিনে দিনে আমরা পিছিয়ে যাই। একাত্তরের ঘাতক আলবদর, আলশামস, রাজাকাররা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার পর্যন্ত হতে পারে। তবে দেরিতে হলেও বাংলাদেশ বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগে উঠেছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচারহীনতার দায় থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশ।

আদিবাসী স¤প্রদায়কে ধ্বংস করতে জেনারেল জিয়াউর রহমান সরকার স্রেফ গায়ের জোরে সমতল জেলা থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ (১১ লক্ষ) বাঙালি মুসলমান সেটেলার পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি অঞ্চলেনিয়ে আসে! এই ঐতিহাসিক পূঞ্জীভ‚ত দুঃখ ও বেদনায় আদিবাসীগণ কেমনে রাখে আঁখি বারি চাপিয়া? আইনের শাসনে এক দেশে দু’টি আইন চলতে পারে না। ধর্ম বিশ্বাসের কারনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে পাহাড়ীদের বেঁচে থাকার অধিকার ধ্বংস করতে জেনারেল জিয়াউর রহমান সরকার সমতল জেলা থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ (১১ লক্ষ) বাঙালি মুসলমান সেটেলার পাহাড়ি অঞ্চলেনিয়ে আসে, যেখানে আদিবাসী জুম্ম জাতি কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাস করছে এই সেটেলাররা আদিবাসীদের ব্যাপক ভ‚মি অবৈধভাবে দখল করে চলেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সমস্ত বিষয়েই ঘুরে ফিরে সেই চিটিংবাজ ধর্মান্ধ জিহাদের ধর্মের সুড়সুড়ির শেষ কোথায়?

বাঙালি মুসলমান সেটেলার কেন বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি অঞ্চলে সার্বভৌম ISLAMIC SUPREMACY CITIZEN? জেনারেল জিয়াউর রহমান সরকার মুসলিম রাজনীতির ভীতির কবলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে পাহাড়ীদের মনুষ্যত্ব কেড়ে নিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ীদের ভিটে-মটিতে পাঁচ লক্ষ মুসলমান সেটেলার! মুসলমান সেটেলাররা এবং জঙ্গিরা পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের ব্যাপক ভ‚মি অবৈধভাবে দখল করে চলেছে। বৌদ্ধ বাংলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে ইসলামীক আগ্রাসন কেন?

বহুজন হিতায় বহুজন সুখায় বাংলাদেশে মুসলমান ধর্ম বিশ্বাসের কারনে পার্বত্য চট্টগ্রামে অত্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর মানবাধিকার পরিস্থিতি! মুসলমান সেটেলার কর্তৃক হামলা ও ভ‚মি বেদখল! ২০২৩ সালের জানুয়ারি হতে জুন মাস পর্যন্ত ১১৩টি ঘটনার মধ্যে সা¤প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী, মুসলিম বাঙালি সেটেলার ও ভ‚মিদস্যু কর্তৃক ১২টি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং এতে ১৮টি পরিবার ও ১৩০ জন জুম্ম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ২ জনকে হত্যা, একজনকে মারধর, ২ জন জুম্ম গ্রামবাসীর ভ‚মি জবরদখল এবং ১৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

বাংলাদেশে বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামে একদিকে ইসলামীকরণ নীতি বাস্তবায়ন করে চলেছে এবং বাংলাদেশের রাজনীতি জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! মৌলবাদী ও জুম্ম বিদ্বেষী কিছু ইসলামী গোষ্ঠী কর্তৃক সুপরিকল্পিতভাবে জুম্মদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। নারীরউপর সহিংসতা: ২০২০ সালে একজন সেনা সদস্যসহ সেটেলার বাঙালি কর্তৃক ১৬ জন জুম্ম নারী ও শিশু সংহিংসতার শিকার হয়। তার মধ্যে আগস্ট মাসে লামায় বহিরাগত ৬ বাঙালি সেটেলার কর্তৃক এক বিধবা ত্রিপুরা নারীকে (২৫) গণধর্ষণ এবং সেপ্টেম্বর মাসে খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেও ৯ জন বাঙালি সেটেলার কর্তৃক মানসিক প্রতিবন্ধী এক জুম্ম নারীকে গণধর্ষণ এবং বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাটের ঘটনা ছিল সবচেয়ে লোমহর্ষক ও পৈশাসিক।

এপ্রিল মাসে (২০২০) রনিকা চাকমা (২২) নামে এক গর্ভবর্তী জুম্ম নারীকে জুরাছড়ি উপজেলা থেকে রাঙ্গামাটি জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তল্লাসীর নামে সুবলং ক্যাম্পের সেনাবাহিনী কর্তৃক বিনা কারণে প্রায় একঘন্টা আটকে রাখার ফলে হাসপাতালে পৌঁছার আগেই অর্ধেক পথে উক্ত গর্ভবতী নারীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। জুলাই মাসে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদরের অংগ্যপাড়া গ্রামে সেনাবাহিনী কর্তৃক সন্ত্রাসী ধরার নামে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণের ফলে শান্তিলতা তঞ্চঙ্গ্যা (৩০) নামে এক জুম্ম নারী নিহত এবং তার ৫ বছরের সন্তান অর্জুন তঞ্চঙ্গ্যা সুকেন আহত হয়।

কোভিড-১৯ মহামারী সংকটে দমন-পীড়ন জোরদারকরণ:
২০২০ সালে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামে ও ব্যাপক আঘাত হানে প্রাণঘাতি কোভিড-১৯ মহামারী। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনের ফলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামেও দেখা দেয় একদিকে কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে-খাওয়া মানুষের খাদ্য সংকট, অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মজীবী জুম্ম যুবক-যুবতীরা এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার স্ব স্ব ঘরবাড়িতে ফেরার সময় যানবাহনের চরম ভোগান্তি ছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার সাথে তিন পার্বত্য জেলা সীমানায় তাদের পড়তে হয়েছে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবর্ণনীয় হয়রানি ও নির্যাতনে। এধরনের চরম দুর্যোগ ও সংকটের মধ্যেও পার্বত্য চট্টগ্রামে থেমে নেই সেনাবাহিনী, বিজিবি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় পক্ষ কর্তৃক জুম্মদের জায়গা-জমি বেধখল ও তাদেরকে স্বভ‚মি উচ্ছেদ।

এটি বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে ১৯৯৩ সালে এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০০০ ও ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে ‘আদিবাসী’ শব্দ উল্লেখ করে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছিলেন। এমনকি ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইসতেহারে ‘আদিবাসী’ শব্দটি উল্লেখ করে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও বেহাত হওয়া জায়গা-জমি পুনরুদ্ধারের জন্য পৃথক ভ‚মি কমিশন গঠনের অঙ্গীকার করেছিলেন।

ইসলামি জঙ্গীরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার কাছে পরাজিত হয়েছে। পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জেনারেল জিয়া ও জেনারেল এরশাদ সরকার পাহাড়িদের দমন-পীড়নের পাশাপাশি বাঙালি পুনর্বাসনের মাধ্যমে পাহাড়িদের সংখ্যালঘু করার কৌশল গ্রহণ করে। প্রায় দুই দশক সশস্ত্র সংঘর্ষের পর ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তিচুক্তি। জে: জিয়াউর রহমান এবং জে: এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রাষ্ঠ্রদ্রোহী রাজাকারদের মন্ত্রী বানিয়ে পলিটিক্যাল ইসলামের অমাবস্যার আলোয় বে-আইনি রাজনীতিতে খাল কেটে কুমির আনে। বাংলা ভাষা ও বাঙালি হত্যাযজ্ঞই কি পাকিস্তানী ইসলাম!

১৬৬৬ সালে মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খান, আরাকানীদের পরাজিত করে বৌদ্ধ চট্টগ্রাম দখলে নেন। এবং চট্টগ্রামের নাম ইসলামাবাদ রাখেন। যাই হোক, ঐ সময় ও মুঘল সাম্রাজ্য চট্টগ্রামের সমতল অংশগুলোই নিয়ন্ত্রন করতো, এবং চাকমারা তখনো পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিলেন না। Mr. Ashif Ikbal writes আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়ার যে ভয়াবহ চিত্র আমরা বিগত দুই যুগ থেকে দেখতে পেয়েছি, সেটা কিন্তু একদিনে হয়নি। সেসব দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের লাশ আমরা দেখেছি। দেখেছি কোটি কোটি উদ্বাস্তুর আহাজারি। ধর্মীয় উগ্রবাদকে কাজে লাগিয়েই দেশগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু কোথাও ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা যায়নি।

হিন্দু মুসলমান রাজনীতির (Sen and Bakhtiar Khilji) বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের জন্যে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বৌদ্ধগণ নু ভড়ৎপব মুসলমান হয়েছিলেন! বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গী রাজনীতির দুর্বৃত্তপনা ছিল কেন? প্রসঙ্গত: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা ‘সওয়াব’ এর আশায় জোর করে মুসলমান করেছে Buddhists & হিন্দুদের, না হলে মৃত্যু। “পিস কমিটির ইচ্ছানুযায়ী বিবাহযোগ্য নব মুসলিম কন্যাদের একটি অংশ পিস কমিটির অনুগত যুবকদের বাড়ীতে তুলে দেবার ব্যবস্থা করা হয় (মুনতাসীর মামুন, রাজাকারের মন, পৃষ্ঠা ৯১)।”

আর কতকাল বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গী রাজনীতির দুর্বৃত্তপনায় আদিবাসী জুম্মদদেরকে দুঃখের দহনে করুন রোদনে ধরে তিলে তিলে ধ্বংস করবে? তদুপরি এ কথাও আজ দিবালোকের মতো সত্য যে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারই ১৯৭২ সালে যে আই এলও কনভেনশন ১০৭ অনুস্বাক্ষর করে গেছেন সেখানেও আদিবাসী বা INDIGENOUS শব্দটি শুধু ব্যবহারই নয়, তাদের সকল অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল। এ ছাড়া কয়েক মেয়াদে ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে আদিবাসী দিবস উপলক্ষে তার দেয়া বানীতে আদিবাসীদের নিজস্ব পরিচয়ে সকল অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার উপর বলিষ্ঠ ভাষায় গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন।

বৌদ্ধ বাংলায় নতুন যুগের সূচনা পালরাজগণের হাত ধরেই। পালরাজগণ চারশো বছর শাসন করেছেন এ বাংলা। শুধু তো বাংলা নয়, বৃহৎ বঙ্গের সীমানা ছিল আরো বিশাল, আসমুদ্রহিমাচল। বৃহৎ বঙ্গের এই উত্থান বাঙালির ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়ের একটি। এত বিশাল রাজ্যের সূচনা যার হাত ধরে, শশাঙ্ক পরবর্তী ক্ষত-বিক্ষত বাংলার ঘুরে দাঁড়ানোর এ অধ্যায়ের শুরু যার নেতৃত্বে, তিনি হলেন পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট গোপালদেব। গোপাল (পাল) (৭৫০-৭৭০)! BANGLADESH OF THE BUDDHISTS , BY THE BUDDHISTS , FOR THE BUDDHISTS IN 750 A. D.

বহুজন হিতায় বহুজন সুখায় বাংলাদেশের ইতিহাসে আদিবাসী’ জনগোষ্ঠী বিলুপ্ত হতে চলছে! জাতিসংঘ এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘Indigenous Youth as Agents of Change for Self-determination’। জাতিসংঘের উক্ত প্রতিপাদ্যের আলোকে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এবছর তার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আদিবাসী তরুণরাই মূল শক্তি’।

১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধে সব হারানো পাহাড়ী জনসাধারন: একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হবার ১০ বছর আগে পাকিস্তান সরকার ইচ্ছা করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে চাকমা রাজবাড়ীসহ পুরানো রাঙামাটি শহর!, মারমা, মুরং, খ্যাং সকল পাহাড়ীদের মাথার উপরে থাকা এক চিলতে টিনের ছাউনি দেয়া বসত বাড়ি। হিল ভয়েস, ১০ আগস্ট ২০২৩, রাজশাহী: ৯ আগস্ট ২০২৩ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে ‘আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আদিবাসী তরুণরাই মূল শক্তি’ শ্লোগানকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্বিবদ্যালয়েও আদিবাসী ছাত্র সংগঠনগুলোর যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করা হয়েছে। সভায় ছাত্র নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে তরুণদেরকে যেকোনো ধরনের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহŸান জানানো হয়েছে!

কানাডায় মুসলমান ধর্ম বিশ্বাসের কারনে একটি মুসলিম পরিবারের চার জনকে ট্রাক-চাপা দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ২০বছর বয়সের এক খ্রিস্টষন শেতাঙ্গ যুবক নাথালিয়ান ভেল্টম্যান, টরন্টোর নিকটবর্তী শহর লন্ডনে (6 June 2021)! সকল ধর্মের বিশ্বমৈত্রীতে বিদ্বেষটাই ধর্মান্ধদের অধর্ম!
রাজনীতির আক্রমণের শিকার বৌদ্ধ ধর্ম কেন?

জঙ্গিবাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীন বিবেকের ঊর্ধ্বে গিয়ে অন্ধভাবে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। উদাহরণ হিসেবে আমরা দেখেছি, আফগানিস্তানে ও পাকিস্তানে তালেবান শরিয়া আইনের নামে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা মানুষের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল। যার পরিণতি ভোগ করতে হয়েছিল পাকিস্তানের সোয়াত ভ্যালির ছোট্ট কিশোরী শিক্ষার্থী মালালা ইউসুফজাই কিংবা আফগান নারীদের। আইএস ইরাক ও সিরিয়ার ইসলামিক রাষ্ট্র হওয়ার পরও সেখানে উগ্রভাবে ইসলামিক স্টেট প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সুতরাং এদের উদ্দেশ্য হচ্ছে অবৈধভাবে চরমপন্থাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে চাপিয়ে দেয়া।

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) “সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি