সোনা কান্তি বড়ুয়া : ভারতবর্ষের ভাষা ও বাংলা ভাষার জনক গৌতমবুদ্ধ! বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় “তিনি (গৌতমবুদ্ধ) জন্মেছেন মানবের চিত্তে, প্রতিদিন তিনি জন্মাচ্ছেন, প্রতিদিন তিনি বেঁচে আছেন।” পরম পূজনীয় গৌতমবুদ্ধই মানুষকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়েছেন এবং সেই মানুষের আচরণযোগ্য ধর্ম ও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। সেখানে ভাষার ক্ষেত্রেও (লিপির ক্ষেত্রে তো বটেই) বুদ্ধ জনসমাজের দরবারেই হাত পেতেছেন। এই ভাষা ও লিপির পুনর্জাগরণ ঘটিয়ে বুদ্ধ ভারতীয় ঐতিহ্যকে সামগ্রিক বিকৃতির হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। আজকের বাংলাভাষা, সংস্কৃত নয়, মূলত পালিভাষার বিবর্তিত রূপ।
ভারতবর্ষের এই ট্র্যাডিশনাল বিকৃতির হাত থেকে দেশবাসীকে অব্যাহতি দিয়ে অবশ্যই বুদ্ধ সর্বপ্রথম চেষ্টা করেন এবং সফলও হন। সিদ্ধার্থ (গৌতমবুদ্ধ) বাল্যকালে যে ব্রাহ্মী, বাংলা, দেবনাগরি, লিপিসহ ৬৪ প্রকার ভাষার লিপিসমূহ অধ্যায়ন করেছিলেন তা বাংলা বিশ্বকোষে (১৩শ ভাগ, পৃঃ ৬৫) সগৌরবে লিপিবদ্ধ আছে।

মানবতায় কি করে বৌদ্ধ ভারতে হিন্দু মুসলমান রাজনীতির সা¤প্রদায?িকতা ঢুকেছে মানুষকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে দেখিয়ে দিলেন বৌদ্ধ ধর্ম – হিংসা ও লোভের নাম ধর্ম নয়! এবং হিন্দু মুসলমানদের সা¤প্রদায়িক রাজনীতি বৌদ্ধদের হাত থেকে বৌদ্ধ দেশ এবং আফগানিস্তানের বামিয়ান বুদ্ধমূর্তি কেড়ে নিল! গৌতমবুদ্ধ ও সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারতে হিন্দু মুসলমান রাজনীতির সা¤প্রদায়িকতা ঢুকে হিন্দুভারত এবং মুসলমান ভারত করেছে! সম্রাট অশোকের বৌদ্ধ ভারতের ভূমি ও দেশ দখল করার নাম হিন্দু ধর্ম এবং মুসলমান ধর্ম!
হিন্দু মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্ঠান সহ সকল মানব সন্তান মিলে আমাদের মানবজাতি। রাজনীতি ও ধর্ম মানবাধিকারকে ধ্বংস করা অমানবিক অপরাধ বলে কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ভাষায়, “গোত্র দেবতা গর্তে পুরিয়া, / এশিয়া মিলাল শাক্যমুনি।” পালিভাষাকে ম্যাজিকাল সংস্কার করেই সংস্কৃত তৈরি হয়েছে। বস্তুত বুদ্ধের সময়ে যেভাবে বঙ্গলিপি প্রচলিতছিল, সেইভাবে বাংলাভাষাও প্রচলিত ছিল।” মুকুল সাহা (দেশ, কলিকাতা, ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৯২)। বিশ্বকোষ (১৩শ ভাগ, পৃ-৬৫) থেকে একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হচ্ছে।

“কিয়ৎকাল পরে সিদ্ধার্থ গুরুগৃহে প্রেরিত হইলেন। সেখানে তিনি বিশ্বমিত্র নামক উপাধ্যায়ের নিকট নানা দেশীয় লিপি শিক্ষা করেন। গুরুগৃহে গমণের পূর্বেই তিনি ব্রাহ্মী, খরোষ্ট্রী, পুস্করসারী, অঙ্গলিপি, বঙ্গলিপি, মগধলিপি, মাঙ্গল্যলিপি, মনষ্যলিপি, অঙ্গুলীলিপি, শকারিলিপি, ব্রহ্মলিপি, দ্রাবিড়লিপি, কিনারিলিপি, অর্দ্ধধন্লিপি, দরদলিপি, খাস্যলিপি, চীনালিপি, হুনলিপি, মধ্যরবিস্তারলিপি, পুস্পলিপি, দেবলিপি, নাগলিপি, কিন্নরলিপি, মহোরগলিপি, অসুরলিপি, গরুড়লিপি, মৃগচক্রলিপি, চক্রলিপি, বায়ুমরুলিপি, ভৌমদেবলিপি, অন্তরীদেবলিপি, উত্তরকুরুদীপলিপি, অপরগৌড়লিপি, পূর্ববিদেহলিপি, উৎপেলিপি, নিপেলিপি, বিপেলিপি, প্রপেলিপি, সাগরলিপি, বজ্রলিপি, লেখপ্রতিলেখলিপি, অনুদ্রæতলিপি, শাস্ত্রাবর্তালিপি, গণনাবর্তলিপি, উৎপোবর্তলিপি, অধ্যাহরিণীলিপি, সর্বরাত্রসংহারিনীলিপি, বিদ্যানুলোমালিপি, বিমিশ্রতলিপি, ঋষিতপস্তস্তা, রোষত্রানা, ধরণী-প্রেণলিপি, সর্বৌধিষ্যন্দালিপি, সর্বসারসংগ্রহণী ও সর্ব্বভূতরুতগ্রহণী প্রভৃতি চতুঃষষ্ঠী প্রকার লিপি অবগত ছিলেন।

সম্রাট অশোকের বুদ্ধ বন্দনার অমর এ্যালবাম গৌতম বুদ্ধের প্রথম ধর্মচক্র উপদেশ আজ ভারতের জাতীয় পতাকার কেন্দ্রস্থলে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারায় ২৪টি দণ্ডযুক্ত ((প্রতীত্যসমূৎপাদ বা সমগ্র কার্যকারণ প্রবাহ) ঘন নীল রঙের অশোকচক্র সংবলিত ভারতীয় গেরুয়া, সাদা ও ভারতীয় সবুজ এই তিন রঙের একটি আনুভূমিক আয়তাকার পতাকা। ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই আয়োজিত গণপরিষদের একটি অধিবেশনে পতাকার বর্তমান নকশাটি গৃহীত হয় এবং সেই বছর ১৫ অগস্ট এটি ভারত অধিরাজ্যের সরকারি পতাকার স্বীকৃতি লাভ করে। এরপরে এটি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রেও জাতীয় পতাকার স্বীকৃতি বজায় রাখে। ভারতে এটিকে “তেরঙা” নামে অভিহিত করা হয়। পতাকাটির নকশা প্রস্তুত করা হয়েছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া কৃত “স্বরাজ” পতাকার আদলে। বর্তমানে নয়া দিল্লিস্থ ভারতের রাষ্ঠ্রপতি ভবনে দরবার প্রাঙ্গনে এখন সুদীর্ঘ ধ্যানমগ্ন পূজনীয় গৌতমবুদ্ধ দিল্লির সিংহাসনে বিরাজমান, যিনি ভারতের জনগন ও শাসকবৃন্দকে আশির্বাদ করছেন। এর পাশে আছে সম্রাট অশোক হল, এখানে ভারতীয মন্ত্রীরা শপথ নেন এবং বিদেশী রাষ্ঠ্রদূতগণ মাননীয় রাষ্ঠ্রপতির নিকট তাঁদের পরিচয় পত্র পেশ করেন।

হিন্দু রাষ্ট্রশক্তি বৌদ্ধ ত্রিপিটককে নিশ্চিহ্ন করে হিন্দু ধর্মকে মহিমান্বিত করতে বৌদ্ধ জাতকের গল্পকে চুরি করে (১) রামায়ন (২) মহাভারত (৩) বেতাল পঞ্চবিংশতি (৮) পঞ্চতন্ত্র, (৫) HITOPADESA এবং (৬) কথাসরিৎসাগর রচনা করেছেন (WEEKLY BARTAMAN MAGAZINE EDITORIAL page 4, dated 2 January 2016)! হিন্দুরাজনীতি বুদ্ধের দেহকে দেখে কিন্তু বুদ্ধের উপদেশ মেনে চলে না এবং বুদ্ধের উপদেশ ছিল, “যে আমার দেহকে দেখে সে আমাকে দেখে না, যে আমার উপদেশ মেনে চলে সে আমাকে দেখে ও মেনে চলে।” “সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা কেমন করিয়া ভুলিয়া গেলেন যে, একদা রাশি রাশি বৌদ্ধ ধর্মস্থান ধ্বংস করিয়া একদিন গড়িয়া উঠিয়াছিল রাশি রাশি হিন্দু মন্দির (আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয়, ২২ আগষ্ট, ১৯৯৩)!” হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধদের শ্রেষ্ঠতম তীর্থভূমি “বুদ্ধগয়া দখল করে বৈদিক পন্থীরা মিথ্যা ইতিহাস বানিয়ে বৌদ্ধ সভ্যতাকে গ্রাস করে ফেলেছে।

বৌদ্ধধর্মকে ধ্বংস করার নাম বৈদিক হিন্দুধর্ম! প্রসঙ্গত: হিন্দু শাসক শশাঙ্ক, আদি শঙ্করাচার্য্য এবং কুমারিল ভট্ট ফতোয়া দিলেন, বৌদ্ধ মাত্রই বধ্য বা বৌদ্ধদেরকে হত্যা কর (পৃষ্ঠা ১২, দেশ, কলিকাতা, ৪ মে, ২০০১)!” গৌতমবুদ্ধ ও বৌদ্ধগণ হিন্দুদের বেদ ও জাতিভেদ প্রথা বিশ্বাস করেন না! সকল ধর্মের ধর্ম প্রবর্তকগণকে হিন্দুধর্মের অবতার বানিয়ে বিশ্বের সকল ধর্মকে গিলে ফেলবে কি? মা গঙ্গা সহ সূর্য্য দেব ও চন্দ্র দেবকে হিন্দু রাজনীতি দখল করে আছে। হিন্দুত্ববাদীদের বৌদ্ধ প্রতারণার অভিনব কৌশল এবং হিন্দুরাজনীতি বৌদ্ধধর্ম গ্রহন না করে বা বৌদ্ধ ধর্মালম্বী না হয়ে পূজনীয় গৌতমবুদ্ধকে হিন্দুরাজনীতি নবম অবতার বানিয়ে বানিয়ে গোলে মালে আধুনিক সমাজের চোখে ধূলো দিচ্ছেন।

১৯০৭ সালে নেপালের রাজকীয় গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিস্কার হওয়ার পর হিন্দুত্বের ঝুলি থেকে ষড়যন্ত্রের বেড়াল বের হয়ে প্রমানিত হলো “বাংলা ভাষা পালি ভাষার বিবর্তিত রুপ।” হিন্দুরাজনীতি কিন্তু গৌতমবুদ্ধকে তাঁদের নবম অবতার বানিয়ে মিথ্যা ইতিহাস রচনা করে বৌদ্ধ ত্রিপিটককে (বুদ্ধবংশ) অস্বীকার করতে রামায়ণের অযোধ্যা কান্ডে (অধ্যায়ে) ৩২ বত্রিশ নম্বর শ্লোকে বৈদিকপন্থী হিন্দু পন্ডিতগণ বুদ্ধ এবং বৌদ্ধদেরকে যে ভাবে গালাগাল করেছেন তা অমানবিক এবং অধর্ম।

অবশেষে হিন্দুরাজনীতির গভীর ষড়যন্ত্রে ১২০২ সালে মন্ত্রী হরিসেন, সেন রাজার মহামন্ত্রী হলায়ুধ মিশ্র এবং বখতিয়ার খিলজীর অত্যাচারে কোটি কোটি বাঙালি বৌদ্ধ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন (কথাশিল্পী শওকত আলীর রচিত প্রদোষে প্রাকৃতজন এবং দুষ্কালের দিবানিশি)। বাঙালির আত্মপরিচয়ের খোঁজে ঐতিহাসিক উৎস নিরুপণ করতে ১৯২৮ সালে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে পন্ডিত ও ভাষাতত্ত¡বিদ ডক্টর মোহাম্মদ শহীদুলাহ (ইংরেজীতে তাঁর পি.এইচ. ডি. থিসিসি ছিল) ‘বুড্ডিষ্ট মিষ্টিক সংস (বা বৌদ্ধ চর্যাপদ)’ শীর্ষক বই লিখেছেন ! এবং ধর্মের গোড়ামি ত্যাগ করে ঐতিহাসিক উৎস নিরুপণ করতে গিয়ে ডক্টর মোহাম্মদ শহীদুলাহ বলেছেন, “আমরা বলিতে পারি যে বৌদ্ধগানই (চর্যাপদ) যেমন একদিকে গজলের, তেমনি অন্যদিকে বৈষ্ণব পদাবলীর মূল উৎস। বৌদ্ধগানের “শূন্যতা বৈষ্ণব পদাবলীতে রাধা হয়েছে!”

ভারতীয় ধর্মান্ধ হিন্দুপন্ডিতগণ হাজার বছর পুর্বে অহিংসা পরমধর্ম প্রচারক এবং মানবাধিকারের সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠাতা বেদ বিরোধী গৌতমবুদ্ধকে হিন্দুধর্মের জগন্নাথ বুদ্ধ পুরাণ শীর্ষক তিন হাজার পৃষ্ঠার বই লিখে উড়িষ্যায় রথ যাত্রা এবং পুরীর বৌদ্ধমন্দিরকে জগন্নাথ মন্দির নাম বদলিয়ে দখল করেছে। ধর্মান্ধ হিন্দুশাসকগণ কর্তৃক ভারতে বৌদ্ধধর্ম ধ্বংসের সচিত্র বই উৎকল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মহাপন্ডিত বংশিধর মোহান্তি রচনা করেছেন। জগন্নাথ বৌদ্ধ বিহার ও মঠের (PURI) কিছু কিছু জায়গা আংশিক ধ্বংস করে সেখানে বৈদিক কাঠামো ও গঠন শৈলীতে গোড়ে তোলা হয়েছে জগন্নাথ মন্দির। আর গৌতম বুদ্ধের মূর্তিকে বিকৃত করে বা কিছু কিছু জায়গায় ভেঙ্গে দিয়ে (হাত, মুখ) জন্ম হয়েছে জগন্নাথ দেবের। আবার মন্দিরের গায়ে নতুন কিছু ভাস্কর্যও পরবর্তীকালে তৈরি করা হয়েছে। যেমন দেয়ালে “কাম-কলার চিত্র”।

বৌদ্ধধর্মের আধ্যাত্মিক রস ও প্রজ্ঞালোকের ঝর্ণাধারায় আলোকিত “বৌদ্ধচর্যাপদ” প্রথম বাংলা বইতে ধ্যান নির্দেশের মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায় মহাসুখসঙ্গম। বৌদ্ধ পালরাজাগণ বাংলাদেশে চারশত বছর রাজত্ব করেছিলেন এবং ১০৪১ সালে অতীশ দীপংকর তিব্বতে যাবার পর বাংলাদেশে বৌদ্ধধর্ম রাতারাতি কোথায় হারিয়ে গেল?

হিংসা ও লোভের নাম ধর্ম নয় এবং মুসলমানদের রাজনীতি বৌদ্ধদের হাত থেকে বৌদ্ধ দেশ এবং আফগানিস্তানের বামিয়ান বুদ্ধমূর্তি কেড়ে নিল! ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে ৭১১ সালে মোহাম্মদ বিন কাশিম বিভিন্ন স্থানে লুট ও পৈশাচিক হত্যাকান্ড চালিয়ে বাদর নামক স্থানে সিন্ধুর রাজা দাহিরের উপর অর্তকিত আক্রমণ চালালেন! ইসলাম ধর্মকে তলোয়ার বানিয়ে এয়োদশ শতাব্দীতে তুর্কি সন্ত্রাসী মুসলমান বখতিয়ার খিলজি বাংলাদেশ দখল করাতে একাত্তরে বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিশ্ব ইসলামী সংগঠন সমূহ বাংলাদেশের মুসলমান হত্যা নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেনি।

মুসলিম ভারতে মানবতা বিরোধী এক কালো আইনের নাম “জিজিয়া কর! বৌদ্ধ এবং হিন্দুদেরকে জোরপূর্বক মুসলমান বানানো হল আর যারা এর পরেও হিন্দু রয়ে গেল তাদের ফসলের দুই তৃতীয়াংশ “জিজিয়া কর! ধর্মান্ধ পাকিস্তানের আক্রমণের শিকার বাংলাদেশের বাংলা ভাষা কেন? ইসলাম ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করায় ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের তদানিন্তন গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাঙালি জাতির বাংলা ভাষা বলা ও লেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন!

ভাষা আন্দোলন না হলে, বাংলা ভাষা ও বৌদ্ধধর্মের মতো দক্ষিন এশিয়ার মানচিত্র থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতো। বাংলাদেশে মুসলমান রাজনীতি কোরআন নিয়ে হিন্দুদের ধর্মে হস্তক্ষেপ করেছে’ গত ১৩।১০।২০২১ ইং তারিখে! কোরআন নিয়ে মুসলমান রাজনীতি রামুর বৌদ্ধ বিহারে ধ্বংসযজ্ঞ করেছে ১০ বছর অতিবাহিত হলেও মামলার বিচার এখনো শুরু হয়নি। তাই মুসলমান রাজনীতি বাংলাদেশে কুমিল্লায় দূর্গা পূজা পন্ড করার লক্ষ্যে হিন্দুদের ওপর সা¤প্রদায?িক হামলা চাল্চ্ছে!

ইতিহাস আমাদের শিখিয়েছে বর্তমান বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান এবং ইন্ব্দোনেশিয়ষ একসময় বৌদ্ধপ্রধান দেশ ছিলো! ইসলামি রাজনীতি বৌদ্ধধর্ম এবং বৌদ্ধ প্রধান দেশকে অজগরের মতো গিলে ফেলেছে! মুসলমান রাজনীতির আক্রমণের শিকার বৌদ্ধ ধর্ম কেন? এবং রামষই পন্ডিতের লেখা “শূন্য পুরান“ শীর্ষক বই বলছে (14th Century), সন্ত্রাসী তুর্কি মুসলমান বখতিয়ার খিলজি ও মুসলমান শাসকগণ বৌদ্ধগণকে মুসলমান বানিয়েছিলেন!

হিন্দু মুসলমান রাজনীতির আক্রমণের শিকার বৌদ্ধ ধর্ম কেন? হিন্দু মুসলমান রাজনীতির প্রাচীন বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞ! বৌদ্ধ বাংলার অতীত মুখ ফোটে মনের কথা বলতে পারেনি। বৌদ্ধ বাংলায় এয়োদশ শতাব্দীতে দু’চারিটি অশ্রুজল! হিন্দুরাজনীতির ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশে অতীত ও ঐতিহ্যে বৌদ্ধ অবদান চর্যাপদের আমাদের ভাঙাগড়া তোমার হাতে এমন অভিমান! বৌদ্ধ বাংলাদেশে বৌদ্ধগণ মুসলমান হয়েছিলেন কেন? জামাত হিন্দু ও বৌদ্ধদের মুসলমান বানাচ্ছে India (Sind / Pakistan) দখল করে নিল!

বৌদ্ধ চর্যাপদে প্রাচীন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও দর্শন বিরাজমান! বিশ্বের ধমর্ প্রচারকদের মধ্যে একমাত্র গৌতমবুদ্ধ (রাজপুত্র সিদ্ধার্থ) ২৬ ০০ বছর আগে বঙ্গলিপি অধ্যয়ন করার গৌরবোজ্জ্বল কাহিনীর সচিত্র খন্ডচিত্র ইতিহাস ভারতের অজন্তা গুহায় আজ ও বিরাজমান। রাজভাষা তো ঈশ্বরের ভাষা। তাই সংস্কৃত দেবভাষা। দেবভাষার কোন লিপি নেই। সমস্ত ব্রাহ্মণ্যসংস্কৃতিতে লিপির কোন স্থান নেই। সরস্বতী বাগ্দেবী। লিপিরদেবী নয়। ব্রাহ্মণ্যসংস্কৃতি লেখাকে নরকের দ্বার স্বরূপ ফতোয়া জারি করে জনগণকে শোষণের একটি মোম ব্যবস্থায় নিজেদের স্বার্থ অটুট রাখতে প্রয়াসী হয়েছে।

হিন্দুরাজনীতি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বৌদ্ধ তিরুপতি মহাবিহার দখল করে হিন্দু মন্দিরে রুপান্তরিত করেছে এবং বুদ্ধ মূর্তিকে হিন্দুর ভগবান বেঙ্কটশ্বর বানিয়েছে। হিন্দুরাজনীতির দলিত হত্যা বন্ধ কর। সম্রাট অশোকের পর দক্ষিন এশিয়ার (সর্ব ভারতীয়) বৌদ্ধজাতিকে দিনের পর দিন আত্মস্থ করে বিশ্ববৌদ্ধদের মিলনতীর্থ গৌতমবুদ্ধের পূত পবিত্র ধ্যানভূমি বুদ্ধগয়ায় শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করে দখলে নিয়েছে। ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্রে গৌতমবুদ্ধ ঘোষনা করলেন, “বুদ্ধের ধর্ম বুদ্ধ ব্যতীত অন্য কেহ (সমণ ব্রাহ্মণ বা দেব) প্রচার করতে সমর্থ নহেন (সমণেন বা ব্রাহ্মেণন বা দেবেন বা ব্রাহ্মূণা কেনচি বা লোকস্মিন্তি)।” আর্য্য অষ্ঠাঙ্গিক মার্গ অনুসরণ করে ধর্ম প্রচার করি (নিদান সংযুক্ত, নিদান বর্গ, সংযুক্ত নিকায়)” এবং গৌতম সাথে মহেঞ্জোদারো হরপ্পার কাশ্যপ বুদ্ধের বৌদ্ধধর্মের সম্বন্ধ বিরাজমান।

বাঙালি জাতির ইতিহাসে স্মৃতির মনিমালায় পোড়ামাটির শিল্পকর্মে “গৌতমবুদ্ধ ধর্মচক্র মূদ্রায়” আজ ও বাংলাদেশে বিরাজমান। হিন্দু পন্ডিতগণ অশোকের শিলালিপি পড়তে না পারলে ও ভারত নামক দেশটা সম্রাট অশোকের নামে পরিচিতি খোঁজে। প্রাচীন বাংলাদেশে মহাস্থানের পুন্ড্রবর্দ্ধনে (বগুড়া) এবং পাহারপুরে (রাজশাহীর সোমপুরী বিহার) বসে গৌতমবুদ্ধ দিনের পর দিন বাঙালি সমাজকে দান, শীল, ভাবনা এবং সুন্দও ভাবে জীবন যাপনের শিক্ষা দিয়েছেন স্মৃতির মনিমালায় পোড়ামাটির শিল্পকর্মে “গৌতমবুদ্ধ ধর্মচক্র মূদ্রায়” আজ ও বাংলাদেশে বিরাজমান।

বুদ্ধ গয়ার মতো ভারতে জৈন, মুসলমান, শিখ এবং খৃষ্ঠান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কোন হিন্দু সদস্য নেই। বৌদ্ধদের তিরুপতি বালাজী মন্দির এবং পুরীর জগন্নাথ মন্দির হিন্দু রাজনৈতিকগণ দখল করার পর গৌতমবুদ্ধকে হিন্দু রাজনীতির ভগবান বা অবতার বলে বৌদ্ধধর্মকে হিন্দু রাজনীতি তিলে তিলে কিডন্যাপ করেছেন। হিন্দু মৌলবাদী সেনাবাহিনী বেঈমানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সন্ন্যাসীর রুপ ধরে শত শত বছর পর্যন্ত ত্রিশূল দিয়ে সর্বত্র ভারতীয় বৌদ্ধগণকে হত্যা করেছে। পলিটিক্যাল হিন্দুধর্ম ভারতীয় বৌদ্ধগণের মানবাধিকার হরণ করেছে।

বৌদ্ধ সম্রাট অশোকের শিলালিপি ভারতীয় হিন্দু পন্ডিতগণ পড়তে পারলেন না; কিন্তু বৃটিশ পন্ডিত জেমস প্রিন্সেপ উক্ত শিলালিপি সম্বন্ধে বিভিন্ন গ্রন্থ সম্পাদনা কর স¤প্রতি মানবমনে উদীয়মান বুদ্ধের অনুভবে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবোর্ন বৌদ্ধভিক্ষু হলেন। এই গ্রন্থে চিত্রে বুদ্ধ জীবনী ও আনবিক যুগে বৌদ্ধ ভারত সন্ধানে বিরাজমান। মানব জাতির উন্নয়নে গৌতমবুদ্ধের ধ্যান ও ধর্মের অবদান।

বাংলা ভাষা পালি ভাষার বিবর্তিত রুপ এবং বাংলা লিপি বহু চড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে এবং নানা ষড়যন্ত্রের দুর্ভেদ্য প্রাচীর বিদীর্ণ করে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত হলো অনাগত বংশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্দোলন প্রবর্তন সূত্রময় ‘শহীদ দিবস।’
বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে নির্মূল করতে ‘বিশ্বমানবতার আলোয় উদ্ভাসিত বাহাত্তরের সংবিধান! মহান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ছিল এই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একটা যুক্তিবাদী সমাজ, মুক্তচিন্তার অবাধ পরিবেশ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বৈষম্যহীন আগামী নির্মাণ হবে। বাঙালি এনলাইটেনমেন্ট যুগে জনৈক জনপ্রিয় কবির ভাষায়, “বিশ্বমানব হবি যদি শাশ্বত বাঙালি হও, সম্পূর্ণ বাঙালি হও।”

প্রতœতাত্তি¡ক গবেষণায় এই সিন্ধু প্রদেশে প্রত্নতাত্তি¡ক বৌদ্ধ নিদর্শনের ইতিহাস থেকেই প্রাগৈতিহাসিক কাশ্যপব্দ্ধুর বৌদ্ধধর্ম এবং বৈদিকপূর্ব ধ্যানমগ্ন রাজর্ষি মহেঞ্জোদারো (মহষসূদর্শন সূত্রে মহষসূদর্শন) বোধিসত্ত¡ রূপরেখাটির” সূত্র বেরিয়েছিল! হিন্দুপন্ডিতগণ দশরথ জাতককে বদলায়ে রামায়ণ রচনা করার পর উক্ত রামায়নের অযোধ্যা কান্ডের বত্রিশ নম্বর শ্লোকে সনাতন ধর্মের নবম অবতার গৌতমবুদ্ধকে চোর (HATE CRIME OF হিন্দুধর্ম) এবং বৌদ্ধদেরকে নাস্তিক বানিয়েছে। বৌদ্ধ জাতকই রামায়ন ও মহাভারতের উৎস!

বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages)“ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি !